Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হতাশাগ্রস্ত ভূঁইফোড় নেতারা উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় সেতুমন্ত্রীর কড়া বক্তৃতা, সাংগঠনিক সভায় দৃঢ় দিক নির্দেশনা, নরসিংদীর দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। বিএনপি শিবিরে সৃষ্টি করেছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া এবং নরসিংদীর সামগ্রিক রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার। তার সুস্পষ্ট বক্তৃতার সারমর্মে ত্যাগী নেতাকর্মীরা খুশী হয়েছে। হুতাশ হয়েছে অর্বাচিন নেতাকর্মীরা। ওবায়দুল কাদেরের বক্তৃতার সময় আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামো বহির্ভূত পুরনো নেতাদের কেউ কেউ কেঁদেছেন, অনেকের চোখ অশ্রæসজল হয়েছে। কেউ কেউ আবেগাপ্লুত হয়ে স্বগতোক্তি করেছেন। পক্ষান্তরে ভূঁইফোড় বা হাইব্রিড নেতাদের কারো কারো মুখ পানসে হয়েছে। কপাল কুঁচকে গিয়েছে অনেকের। চোখেমুখে হুতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে। তবে অনেকদিন পর ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের কথা শুনে সাধারণ নেতাকর্মীরা উচ্ছসিত হয়েছে, উজ্জীবিত হয়েছে। সচেতন নেতকর্মীরা ওবায়দুল কাদেরের মঞ্চের বক্তৃতাকে নরসিংদীর আওয়ামী লীগ তথা জেলার রাজনৈতিক ময়দানে সময়োপযোগী ও লাগসই বক্তৃতা বলে আখ্যায়িত করেছে। সব মিলিয়ে দলীয় ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদকের বক্তৃতাকে ইতিবাচক বলেই মন্তব্য করেছে স্থানীয় রাজনীতিকরা। আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ রাজনীতিক বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তৃতা শুনে মনে হয়েছে তিনি নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বিরাজমান রাজনীতি সম্পর্কে গভীরভাবে অবহিত রয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যে বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামো বর্হিভূত জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটির একজন যুগ্ম সম্পাদক বলেছেন, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোতে ৪০ বছরের ত্যাগী নেতারা ঠাঁই পাননি। শক্তি প্রয়োগ করে তাদেরকে কাউন্সিল থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দু:সময়ের দিনগুলোতে দীর্ঘ ১৬ বছর দলকে যিনি আগলে রেখেছিলেন মৃত্যুর পর সেই এডভোকেট আসাদোজ্জমানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী দলীয়ভাবে কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়নি। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক এমপি মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়ার মৃত্যুবার্ষিকী দলীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয় না। আওয়ামী লীগের অপর একজন নেতা তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতা সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বক্তৃতা খুবই সমাদৃত হয়েছে। দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানে কানে মনোয়ন দিয়েছেন, গ্রীন সিগন্যাল দিয়েছেন এসব বলে অপপ্রচার চালাবেন না। আওয়ামী লীগের এখন কোন প্রার্থী নেই। এখন একমাত্র প্রার্থী হচ্ছে আওয়ামী লীগের নৌকা। বিলবোর্ডে ছবি দিয়ে মনোয়ন আশা করবেন না। সাংগঠনিক সভায় অনেক নেতা খিস্তি খেউর করার জন্য তিনি বলেছেন, আমি আমার যা বলার তা মঞ্চে বলেছি। এখানে আর কিছু বলার নেই। শিবপুরের একজন আওয়ামী লীগ নেতা স্থানীয় এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার বিরুদ্ধে বলার চেষ্টা করলে ওবায়দুল কাদের তাকে থামিয়ে দেন। এদিকে বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোর একজন প্রভাবশালী নেতা তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, দলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তৃতা যে ধরনের হবার সে ধরনেরই হয়েছেন। নরসিংদী জেলা শহরের মূল ব্যবসা-বাণিজ্য তারাই নিয়ন্ত্রণ করে। তৎকালীন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া মারা যাবার পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দত্তপাড়ার বাইরে চলে যায়। যদিও আওয়ামী লীগের নিরপেক্ষ পুরনো নেতারা বলছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগের রাজনীতিক ক্ষমতা অতীতের মতোই কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। একচ্ছত্র ক্ষমতার কারণে সম্পদও কুক্ষিগত হয়ে পড়ছে। সেদিনের সম্পদহীনরা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। দিনদিন দত্তপাড়ার সেই আওয়ামী নেতাদের মতোই দখলবাজী, সন্ত্রাস আর সর্বক্ষেত্রে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নগ্ন হস্তক্ষেপ চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ