ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে তিন শিক্ষার্থীকে তুলে নেয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে টিএসসিতে সড়ক অবরোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে রাত ১০টার দিকে কলা ভবনের মূল গেটের বিপরীত পাশের রাস্তায় মারধর করে র্যাব তাদেরকে তুলে নিয়ে যায় বলে জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তুলে নেয়া তিন ছাত্র হলেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কাজী তানভীর (বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিষয়ক সম্পাদক), ইমরান হোসেন (সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক), মুসলিম উদ্দিন হিমেল (মোহাম্মাদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী)। এদিকে তুলে নেয়া শিক্ষার্থীদের রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নীলক্ষেত পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ সাহেব আলী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘টিএসসি থেকে নীলক্ষেত সড়কের দিকে যাবার পথে কালো গ্লাসের একটি মাইক্রোবাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি বাইকে ধাক্কা দেয়। পরে ছাত্ররা মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে ও চালককে গাড়ি থেকে নামতে বলে। কিন্তু তিনি না নামায় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। এর পর কালো পোশাকের অন্তত ১০ জন র্যাব সদস্য গাড়ি থেকে নেমে শিক্ষার্থীদের মাথায় পিস্তল ঠেকায় এবং মারধর করে। মারধরে তানভীরের মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। পরে র্যাব সদস্যরা তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টর এবং প্রক্টরিয়াল টিম। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে শুরু করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে আগত বিভিন্ন রুটের গাড়ি আটকাতে থাকে। রাত ১১টার দিকে টিএসসি অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
এসময় র্যাব-৪-এর একটি গাড়ি টিএসসি আসলে সেটিকেও ধাওয়া দেয় বিক্ষুব্ধরা। পরে গাড়িটি দ্রুত টিএসসির ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে দিয়ে ইউটার্ন নিয়ে দ্রুত সরে যায় তারা। পরে নেতারা ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করেন।
এ বিষয়ে ঘটনার ভূক্তভোগী ইমরান হোসেন বলেন, আমাদেরকে ধরে নিয়ে টাকা দাবি করে। তখন আমি বলি, টাকা পাব কোথায়? তখন তারা বলে, টাকা না দিলে জঙ্গী বলে চালিয়ে দেব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দেয়ায় র্যাব উপর্যুপরি মারধর করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, তারা বর্তমানে হলে আছে। পুরো বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জেনে ব্যবস্থা নেব।