বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বন্দরনগরী পেরিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া সদরে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আজ বুধবার জনসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যা চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে দলের পক্ষ থেকে বড়সড় শোডাউন। দুপুর থেকে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও ভোর সকাল থেকে গণপরিবহনে চলছে কার্যত অচলাবস্থা। এ জনসভাকে কেন্দ্র করে সমগ্র দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এবং পার্বত্য জেলা বান্দরবানে গণপরিবহনের সঙ্কট বিরাজ করছে। এ কারণে চরম জনদুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার নিত্য কর্মমুখী মানুষ। চৈত্রের কাঠফাটা গরমের মধ্যে জরুরী কাজেকর্মে অনেককেই পায়ে হেঁটে অনেক কষ্টে বিভিন্ন স্থানে রওনা দিতে দেখা গেছে। জনসভায় বেশি লোক সমাগমের জন্য আগেই অনেক বাস, মিনিবাস দলের নেতা-কর্মীরা ভাড়া করে নিয়েছেন। ফলে সড়কে চলাচলের মতো গণপরিবহন প্রায় নেই। তাছাড়া পটিয়া ও আশপাশের এলাকাগুলোতে জনসভামুখী মানুষের ভিড় এবং নিরাপত্তামূলক কড়াকড়ির মধ্যেও যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
আজ সকাল থেকেই দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার মহাসড়কে বাস, মিনিবাস, কোচ, হিউম্যান হলার, টেম্পুসহ কোনো ধরনের গণপরিবহন চলাচল করছে না। এমনকি কিছু কিছু সিএনজি অটোরিকশা বের হলেও দ্বিগুণ তিনগুণ ভাড়া দাবি করছে। তাও পথে পথে বাহন পাল্টিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। গণপরিবহনের এই সঙ্কট সন্ধ্যা এমনকি রাত অবধি চলতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন আশঙ্কা ব্যক্ত করছেন।
জনসভাকে ঘিরে এই মহাসড়কে দূরপাল্লার কোচ, বাস চলাচল অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে। এতে করে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। তাছাড়া ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ থাকায় মালামাল পরিবহনে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে চট্টগ্রামমুখী আবার চট্টগ্রাম থেকে ওইসব গন্তব্যমুখী অগণিত যাত্রী আটকা পড়েছেন। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন রুটের যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন।
এদিকে বাঁশখালী ও চন্দনাইশ হয়ে বিকল্প রুটে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যাত্রীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকবে বলা হলেও সেই রুটেও জনসভামুখী যানবাহনে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের চাপ থাকায় গণপরিবহন চলাচল করছে খুবই কম হারে।
আবার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন উপজেলা ও মহানগরী থেকে লোকজন জনসভায় যোগ দিতে যাবার জন্য আগেই বাস-মিনিবাসসহ অনেক যানবাহন ভাড়া করে নিয়ে গেছে। এ কারণেও গণপরিবহন সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটি সূত্র জানায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সড়ক-মহাসড়কে কিছু যানবাহন চলাচল করছে। তবে চাহিদার তুলনায় খুবই কম। এই রুটগুলোতে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার যাত্রীবাহী বাস-কোচ, মিনিবাসসহ গণপরিবহন চলাচল করে। আজ পটিয়ায় জনসভার জন্য অন্তত সাড়ে ৭শ’ বাস ভাড়ায় নেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট অনেক বাস মিনিবাস আজ ঝামেলা হবে এমন আশঙ্কায় রাস্তায় বের হয়নি। ফলে সাধারণ যাত্রীরা তেমন গণপরিবহন পাচ্ছে না। পটিয়ার জনসভার কারণে অনেক যানবাহন ভাড়ায় চলে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীতেও আজ স্বাভাবিকের তুলনায় যান চলাচল কমে গেছে।
চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়ের জনসভা মহানগরীর পলোগ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে এমনটি আশা করেছিলেন চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-মন্ত্রী-এমপি। কিন্তু এখন সেখানে চিটাগাং চেম্বারের উদ্যোগে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা চলছে। আবার দলের তরফ থেকে নগরীতে বিকল্প জনসভার স্থানও নির্ধারণের প্রস্তাব জোরালোভাবে উঠেনি। শেষমেশ দলের হাইকমান্ড পটিয়া হাইস্কুল মাঠে জনসভার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত প্রদান করে। এ নিয়ে মহানগরীর নেতা-এমপিদের মাঝে হতাশাও প্রকাশ পেয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।