পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে মিথ্যা চিৎকারসর্বস্ব দল হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো শঙ্কা নেই। উন্নয়ন দিয়েই দেশবাসীর মন জয় করেছে দল। তাই আগামী নির্বাচন কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। রিজভী বলেন, উন্নয়নের নমুনা আমরা ডানে-বামে, হতদরিদ্র মানুষ, অবকাঠামোর দূর্গতিতেই দেখতে পাচ্ছি। যেভাবে দেশের আর্থিক খাতকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, শেয়ার বাজার লুট করা হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে, সারাদেশে লুটপাটের যে আনন্দমেলা চলছে, সড়কের বেহাল দশায় প্রতিদিন যেভাবে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে-তাতে উন্নয়নের খিন্ন বলয়ের নির্মোক ছিঁড়েখুঁড়ে কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে, মানুষকে দিনের পর দিন পোহাতে হচ্ছে ভয়ংকর দুর্ভোগ। গতকাল (রোববার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি (কাদের) তাদের যে কুকর্মের কথা সেটা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন এবং দেশবাসী যেটা নানাভাবে জেনেছে এখন সেটা সরাসরি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদের মুখ থেকেই শুনলেন। কারণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো শঙ্কা নেই। তাই আগামী নির্বাচন কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। আর শঙ্কা থাকবেই বা কেন? নির্বাচনের ফলাফল যদি আগেই বাক্স বন্দি করে রাখা হয়। তাহলে তো আওয়ামী লীগের শঙ্কা থাকার কথা নয়। তাদেরকে তো আর প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করতে হচ্ছে না। এজন্যই তারা বলেছেন তাদের শঙ্কা নেই। তাই তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন আগামী নির্বাচন কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। ঠিকই বলেছেন, যেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে না সেখানে তো শুধুমাত্র একতরফা ফল ঘোষণা করা হবে। এটা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তার অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।’ আওয়ামী লীগ জনগণকে ধোকা দেয়ার বিদ্যা ভাল করেই জানে। আওয়ামী লীগ আত্মসম্মানহীন প্রতারক, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করাই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইশতেহার। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় মনে হচ্ছে তাদের মাস্টারপ্ল্যান চুড়ান্ত। নিজেরাই তারা তা প্রকাশ করছে। কিভাবে আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন মঞ্চস্থ করা যায় সেই চক্রান্তমূলক আয়োজনে তারা ব্যস্ত রয়েছেন। সাজানো জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ তৈরি করে মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে রাখা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া সেই মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ। নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে, গুম, খুন, ক্রসফায়ারে নির্বিচারে মানুষ হত্যার মাধ্যমে দেশে যে আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যেভাবে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের দ্বারা নারী-শিশু নির্যাতনসহ মানুষের ঘর-বাড়ী, ভিটা বেদখল চলছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চলমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন ফুঁসে উঠেছে। জনতার প্রতিরোধে আওয়ামী নেতাদের সকল ষড়যন্ত্র ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে।
পিঠা ভাগের মতো সংসদীয় আসন ভাগাভাগি চলছে কিনা এমন প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, পিঠা ভাগের মতো সংসদীয় আসনের সিংহভাগ আওয়ামী লীগ নিজেদের কব্জায় রেখে বাকী স্বল্পসংখ্যক আসন অন্যদলকে ভাগ দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। এটাই নির্বাচনহীন একদলীয় শাসনের নমূনা। ওবায়দুল কাদেরের কথায় যে ‘আনুষ্ঠানিকতা’র কথা বলা হয়েছে সেটা কী তারই আলামত? আসন ভাগাভাগির বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। যতই ষড়যন্ত্র করেন না কেন, যতই ভাগাভাগি করেন না কেন, বানরের পিঠা ভাগাভাগির নির্বাচন এদেশের জনগণ হতে দিবে না। ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন আর এদেশে করতে দেয়া হবে না। নির্বাচন নিয়ে ছিনিমিনি খেললে কাঁটাতারের বেড়া নয়, চীনের প্রাচীরের ন্যায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। বিএনপি একতরফা ভাগাভাগির নির্বাচনকে কেবল প্রত্যাখান নয় জনগণকে সাথে প্রতিরোধের ধাক্কায় গুড়িয়ে দেবে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কয়েকটি শর্তের কথা তুলে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে যে নির্বাচনে বিএনপি’র নেতৃত্ব দেবেন বেগম খালেদা জিয়া, নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ওবায়দুল কাদের সাহেবদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। দেশের জনগণ, দেশের তরুণ সমাজ, দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার ভোটাররা আর একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচন হতে দিয়ে দেশে এক ব্যাক্তির জমিদারী শাসন চালাতে দেবে না। নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে যাতে ভোট দিতে পারে সে রকম নির্বাচনই দেশে অনুষ্ঠিত হতে হবে। আওয়ামী লীগের পাতানো ফাঁদে জনগণ পা দিবে না। তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে অঙ্গিকারাবদ্ধ। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম পটু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।