পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভাবনা যার মহাবিশ্বের সৃষ্টিরহস্যে নিবিষ্ট ছিল, সেই স্টিফেন হকিং পৃথিবী ছাড়লেন। চিরতরে নিভে গেলেন আধুনিক সৃষ্টিতত্তে¡র উজ্জ্বল এই নক্ষত্র। শারীরিক নিশ্চলতাকে অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর আধুনিক প্রযুক্তির প্রেরণায় জয় করেছিলেন হকিং। গতকাল বুধবার সকালে ৭৬ বছর বয়সে চিরতরে নীরব হলেন তিনি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো পারিবারিক সূত্রে ব্রিটিশ এই পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীর জীবনাবসানের খবর দিয়েছে।
ব্রিটিশ এই বিজ্ঞানী কৃষ্ণ গহŸর এবং আপেক্ষিকতা তত্ত¡ নিয়ে তার কাজের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। বিরল ধারার মোটর নিউরনের সঙ্গে লড়তে থাকা স্টিফেন হকিং হয়ে উঠেছিলেন তার কালের সবচেয়ে পরিচিত আর সম্মানিত বিজ্ঞানী। রসবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে হয়ে উঠেছিলেন বিজ্ঞানের জনপ্রিয় শুভেচ্ছাদূত। নিজের কাজের প্রতি সাধারণ মানুষ যেন সংলগ্নবোধ করতে পারেন তার প্রতি সবসময় নজর রেখেছেন তিনি। হকিংয়ের সন্তান লুসি, রবার্ট ও টিমের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রিয় বাবা আজ পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। একজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ছিলেন তিনি। ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ। তার কাজ আর গ্রহণযোগ্যতা অটুট থাকবে বহু বছর। সাহস আর দৃঢ়তার পাশাপাশি তার মেধা আর রসবোধ বিশ্বজুড়ে মানুষকে প্রেরণা দিয়েছে’। ১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্ম হকিংয়ের। ১৯৬৩ সালে আক্রান্ত হন দুরারোগ্য মোটর নিউরন রোগে। চিকিৎসকরা তার আয়ু বেঁধে দেন দুই বছর। তবে সেই ভবিষ্যদ্বাণীকে অতিক্রম করে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় তিনি পৃথিবীকে আলোকিত করেছেন পদার্থ ও গণিতে অসামান্য অবদান রাখার মধ্য দিয়ে। চলার শক্তি হারালেও কম্পিউটারের সাহায্যে যোগাযোগ রক্ষা করতেন তিনি।
হকিংয়ের মৃত্যুতে শোকের সাগরে বিশ্ব
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিমান পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যুতে গোটা বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডের এই বাসিন্দার মহাপ্রয়াণে শোকের মাতম সীমানার গÐি পেরিয়ে হাজার মাইল দূরে গিয়ে আঁছড়ে পড়েছে। তাই ব্রিটিশ এই পদার্থবিদের মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হয়েছে বিশ্ব। প্রখ্যাত এ বিজ্ঞানীর মৃত্যুর ঘটনা জানার পরপরই টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক জানিয়েছেন বিশ্বের খ্যাতিমান ব্যক্তিরা।
স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে থেকে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত। কেবল রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব-ই নয়, নাসার বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন দেশের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের প্রতিষ্ঠাতা স্যার টিম বার্নাস-লি হকিংকে শ্রদ্ধা জানাতে টুইটার বার্তায় লিখেন, ‘এক বিশাল হৃদয় আর এক বিস্ময়কর চেতনাকে হারালাম আমরা।’ এদিকে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) তাদের শোকবার্তায় বলেছে, ‘তার তত্ত¡ মহাবিশ্বের অমিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন খুলে দিয়েছে, যেটা আমরা এবং সমগ্র বিশ্ব উদ্ধারের চেষ্টা করছি।’
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চান্সেলর স্টিফেন টুপিই তার শোকবার্তায় বলেছেন, ‘অধ্যাপক হকিং লাখো মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন। তিনি ছিলেন এক অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব। শুধু কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সারা বিশ্ব তাকে আবেগ ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটার বার্তায় শোক জানিয়ে লিখেছেন, ‘হকিং একজন অসাধারণ বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ। তার দৃঢ়তা ও শক্তি সারা পৃথিবীর মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। তার মৃত্যুর খবরটি মর্মান্তিক। তার অসামান্য অবদান পুরো পৃথিবীকে আরও সুন্দর জায়গা করে তুলেছে। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে এক শোক বার্তায় বলেন, ‘হকিং তার কালের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। তার দৃঢ়তা, মানসিকতা, সংগ্রাম আজীবন মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।’
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা লিখেছেন, ‘এক মহান ব্যক্তিকে আজ হারালাম। তার এই অসামান্য অবদানের জন্য পুরো পৃথিবী তাকে আজীবন স্মরণ করবে। মার্কিন নভোচারী ক্রিস হ্যাডফিল্ড লিখেছেন, ‘হকিং ছিলেন এক অসাধারণ ও বিরল প্রতিভা। বিদায় প্রফেসর হকিং। আপনি আমাদের সবার অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন।’ এ ছাড়া পৃথিবীর আরও বহু রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব তার মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। সূত্র : ডেইলি মেইল, গার্ডিয়ান
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।