Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাটু‌রিয়ার শশী ‌নেপা‌লে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত, আহত তার স্বামী

সাটু‌রিয়া (মা‌নিকগঞ্জ) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৮, ১০:২৫ এএম | আপডেট : ৫:২০ পিএম, ১৩ মার্চ, ২০১৮

নেপা‌লের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটিতে বাংলাদেশের যে ৩২ জন যাত্রী ছিলো, তার মধ্যে মা‌নিকগ‌ঞ্জের সাটুরিয়া উপ‌জেলার স্বামী স্ত্রী এক দম্প‌তি ছিল। বিমানটি বিধ্বস্ত হলে প্রাণ হারায় মা‌নিকগ‌ঞ্জের সাটু‌রিয়ায় মে‌য়ে তাহিয়া শশী। আর এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে নেপালের ওএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তার স্বামী মা‌নিকগ‌ঞ্জের সন্তান রেজাউনুল হক।
বিবাহবার্ষিকী পালনে নেপাল গিয়ে মৃত্যু হ‌য়ে‌ছে শশীর আর আহত হ‌য়েছে তার স্বামী বিষয়‌টি একা‌ধিক সূত্র নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছে।
স্থানীয়রা জানায়, মা‌নিকগ‌ঞ্জের সাটু‌রিয়া উপ‌জেলার বরাঈদ ইউনিয়‌নের গোপালপুর গ্রা‌মের ডা. আলী রেজার মেয়ে তাহিয়া শশীর সাথে তার চাচাতো ভাই সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রা‌মের ডা. মোজাম্মেল হকের ছেলে রেজাউনুল হকে বিয়ে হয় প্র‌ায় ৭ বছর পূর্বে। গোপালপু‌রে বা‌ড়ি হ‌লেও শশীর প‌রিব‌ার মা‌নিকগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় ও রেজাউনুল হ‌কের প‌রিবার ঢাকা‌তে থাক‌তো।
তাহিরা শশী বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে স্বামীর সাথে নেপাল যাচ্ছিল। ‌ফেসবু‌কে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন যাত্রা শুরু বলে। কে জানত এ যাত্রা হবে তার শেষ যাত্রা।
আগামী ২৫ মার্চ রেজাউনুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী তাহিয়া শশীর ৭ম বিবাহ বার্ষিকী ছিল। বিবাহ বা‌র্ষিকী পালন করতে তারা যাচ্ছিলেন নেপালের কাঠমান্ডুতে। কিন্তু কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার আগেই তাদের বহনকারী ইউএস বাংলা এয়ার লাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হলে প্রাণ হারায় তাহিয়া শশী। আর এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে নেপালের ওএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার স্বামী রেজাউনুল হক।
রেজাউনুল হক শাওনের মামা আসাদুজ্জামান জানায়, আগামী ২৫ মার্চ তাদের বিয়ের ৭ম বছর পূর্ণ হবে। এই দিনটি একটু আলাদাভাবে পালন করতে সোমবার ঢাকা থেকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে নেপালের কাঠমান্ডুতে যাচ্ছিল ওই দম্পতি। কিন্তু নেপালের বিমান ল্যান্ড করার আগেই বিমান দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান তাহিয়া শশী। গুরুতর আহত হয়ে নেপালের ওএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে রেজাউনুল হক।
বিমান দুর্ঘটনার নিহত শশীর মানিকগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সুনসান অবস্থা বিরাজ করছে। বাড়িতে দুইজন কাজের মেয়ে ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি। ত‌বে প‌রি‌চিত কেউ কেউ ও প্রতিবেশীরা আসছে খোঁজ খবর নি‌তে।
কা‌জের মে‌য়েরা জানায়, সোমবার টে‌লি‌ভিশ‌নের মাধ্য‌মে বিমান দুর্ঘটনার খবর জানতে পা‌রে শশীর বাবা মা। প‌রে বি‌কে‌লে তারা ঢাকায় চলে যান।
‌সাটু‌রিয়ার গোপালপুর গ্রা‌মের শশী ও রেজাউনুল হকের প্রতিবেশীরা জানায়, গোপালপু‌রে বা‌ড়ি হ‌লেও শশীর প‌রিব‌ার মা‌নিকগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় ও রেজাউনুল হ‌কের প‌রিবার ঢাকা‌তে থাক‌তো। তারা ঈদ ও বি‌ভিন্ন অনুষ্ঠা‌নের সময় গোপালপুর গ্রা‌মের বা‌ড়ি‌তে আস‌তো।
উল্লেখ্য, ৭১ জন আরোহী নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে পৌঁছায়। অবতরণের সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এরপর বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। নেপালের সেনাসূত্রে জানা গেছে, ৫০ জন নিহত হয়েছেন এই দুর্ঘটনায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ