পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুসলিম ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নিসংযোগ এবং বৌদ্ধদের এক সদস্যের মৃত্যুর পর শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় পর্যটন জেলা ক্যান্ডিতে মঙ্গলবার নতুন করে কারফিউ জারি ও কমান্ডো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নেয়। সম্প্রতি এ অঞ্চলে দাঙ্গায় দু’জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া দাঙ্গার কারণে মুসলমানদের বাড়িঘর ও ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
চা বাগান ও বৌদ্ধদের প্রাচীন নিদর্শনের জন্যে খ্যাত ক্যান্ডির বিভিন্ন এলাকায় দাঙ্গাবাজদের তাÐবের কারণে পুলিশ কারফিউ’র সময়সীমা বাড়িয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দাঙ্গবাবাজরা বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে পুলিশ একজন মুসলিমের লাশ উদ্ধার করেছে।
পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, আইন শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার ও কারফিউ বলবৎ এর লক্ষ্যে পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স থেকে ওই এলাকায় শত শত কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তেজিত জনতার হাতে একজন সিংহলী পুরুষের প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে সোমবার সৃষ্ট দাঙ্গায় মুসলমানদের বাড়িঘর, মসজিদ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশের মুখপাত্র রুওয়ান গুনাসেকেরা বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকাটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে’।
সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘পরিস্থিতি আন্তঃসা¤প্রদায়িক সঙ্ঘাতের দিকে না চলে যায় তা নিশ্চিত করতে পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যান্ডিতে উচ্চ সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বৌদ্ধ জঙ্গিরা মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠারগুলোতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে এবং দেশের পূর্বদিকের একটি মসজিদে হামলা করেছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ দুই ডজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে, তবে সিনিয়র কর্মকর্তারাও পুলিশের আচার-আচরণ সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছেন।
শ্রীলঙ্কা কেন্দ্রীয় মানবাধিকার সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজিৎ কীর্তি তেনাকুন ‘রহস্যজনক পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার’ নিন্দা করে বলেন, এটাই সহিংসতায় ভূমিকা রাখে।
তেনাকুন আল জাজিরাকে বলেন ‘সামাজিক গণমাধ্যমের পাতাগুলো সিংহলিদের সকাল ১০টায় টেলডেনিয়া শহরে একত্রিত হতে বলে’। সকাল ১১টায় একটি সমাবেশ সংগঠিত হওয়ায় হিংসাত্মক সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। মুসলমানদের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয় ১টা থেকে। দাঙ্গার সময় আহত দ্বীপটির প্রধান বৌদ্ধ সিংহলী জনগোষ্ঠীর এক সদস্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়।
২ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার শ্রীলঙ্কায় ধর্মীয় ও জাতিগত দ্ব›েদ্বর সর্বশেষ স্থান ক্যান্ডি। শ্রীলঙ্কার ন্যাশনাল ফ্রন্টের গুড গভর্নেন্স পার্টির সেক্রেটারি নাজাহ মোহাম্মদ, আল জাজিরাকে বলেন, কেবল ক্যান্ডিতে নয়, আক্রমণ সারা দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে।
মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা আগের সরকারের সময় যে উত্তেজনা, ঘৃণা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় অভিজ্ঞ ছিলাম, আমরা একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, বিশেষ করে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স¤প্রদায়’।
শ্রীলঙ্কার ধর্মীয় ও জাতিগত সহিংসতা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, যেখানে মুসলমানরা জনসংখ্যার ১০ শতাংশ এবং বৌদ্ধ সিংহলী ৭৫ শতাংশের বেশি। পর্যবেক্ষকরা চলমান সহিংসতার জন্য জঙ্গি মনোভাবাপন্ন বধু বালা সেনা (বিবিএস) গ্রæপকে দোষারোপ করছেন।
মোহাম্মদ বলেন ‘হিংসাত্মক বিবিএস সন্ত্রাসীরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি অদ্ভুত উপায়ে হামলা চালানোর পরিস্থিতি প্রস্তুত করে এবং আক্রমণ শুরু করে। বিকালে পুলিশ ও কারফিউ এখানে উভয়ই ছিল, কিন্তু এখনও সেখানে সহিংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে’।
দ্বীপে ধর্মীয় সহিংসতা নতুন নয়। গ্রত ফেব্রæয়ারী মাসেও সেখানে মুসলিম ও বৌদ্ধদের মধ্যে এক সংঘর্ষে ৫ জন গুরুতর আহ হয় এছাড়া বেশ কিছু মুসলিম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে হামলা চালানো হয়।
২০১৪ সালের জুনে মারাত্মক আলুথগামা দাঙ্গার পর একটি মুসলিম বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। ২০১৫ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরেসেনা ক্ষমতায় আসার পর মুসলিম বিরোধী অপরাধের তদন্তের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তবে কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি জানা যায়নি। সূত্র : আল জাজিরা নিউজ, এএফপি ও বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।