পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন যুগান্তকারী মাইফলক উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকার ইসলামী শিক্ষা ও মাদরাসার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করছে। সরকার মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক মানসম্মত জ্ঞানবিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা অর্জনে আরো বেশি মনোযোগী হওয়ার প্রতিও গুরুত্ব দিচ্ছে। সেই আলোকে যুগোপযোগী করা হয়েছে মাদরাসা শিক্ষা কারিকুলাম। বর্তমান সরকার ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে আলেম সমাজের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন। এদেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকার বদ্ধপরিকর। আলেম ওলামা তথা সত্যিকারের ইসলামপ্রেমিরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে জঙ্গিবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সফল হওয়ার জন্য আমাদের সম্মানিত আলেমগণ সবসময় দোয়া করে থাকেন। বর্তমান সরকার সর্বক্ষেত্রে আলেম ওলামাদের সম্মান দিয়ে যাচ্ছেন।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে মৌকারা দরবার শরীফের ইসালে সওয়াব মাহফিলের শেষদিন শুক্রবার রাত ১১টায় ধর্মীয় আলোচনায় আমন্ত্রিত মেহমানের বক্তৃতায় পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। ধর্মীয় আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন মৌকারা দরবারের পীর সাহেব বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কুমিল্লার সভাপতি আমীরুস সালেকীন শাহ মুহাম্মদ নেছার উদ্দীন ওয়ালিউল্লাহী। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মৌকারা দরবারের দুই দিনব্যাপী ইসালে সওয়াব মাহফিল গতকাল শনিবার সকালে আখেরী মুনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। মৌকারা দরবার শরীফের মরহুম পীর শাহসুফি আলহাজ মাওলানা মুহাম্মদ অলিউল্যাহ (রহ.) এর ১২ম ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে এটি ছিল ৭২তম মাহফিল। সকালে আখেরী মুনাজাত শুরুর আগে পীর সাহেব আমিরুস সালেকীন শাহ মুহাম্মদ নেছারউদ্দীন ওয়ালিউল্লাহী মুসল্লিদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বয়ানে বলেন, মৌকারা দরবারে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত ইসালে সওয়াব মাহফিলের মাধ্যমে আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে থাকি। এ মাহফিল বার বার প্রমাণ করে দেয় মৌকারা দরবার মানুষের কাছে কতোটা প্রিয়। আশেকান ভক্তরা আবারো প্রমাণ করলো মৌকারার সিলসিলা আলোকিত সিলসিলা। মৌকারা পীর সাহেব আরও বলেন, আল্লাহ গীবতকারিদের পছন্দ করেন না। গীবতকারীরা আল্লাহ ও রাসুল সা. এর রেজামন্দি কোনভাবেই লাভ করতে পারবে না। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে তওবা করে গীবত ও পরনিন্দার পথ পরিহার করুন। ওলী আউলিয়াগণের সান্নিধ্য লাভের চেষ্টায় তাঁদের দরবারে বেশি বেশি যাতায়াত করুন। নিয়মিত নামাজ আদায় করুন। আত্মশুদ্ধি করুন। ত্বরিকা চর্চা করুন। ইসলামের সকল নিয়ম মেনে চলুন। নিজেদের মধ্যে দলাদলি, রেষারেষি, দ্ব›দ্ব জিইয়ে রাখবে না। এসব জিইয়ে রাখা খাঁটি মোমিন বান্দার কাজ নয়। মা-বাবার আদেশ মেনে চলুন। তাদের প্রতি যথাযথ কর্তব্য পালন করুন। তাদের সেবা করুন। কোনভাবেই মা-বাবার মনে কষ্ট দেয়া যাবে না। প্রতিবেশিদের খোঁজখবর নিবেন। অসহায়দের সাহায্য করবেন। আর আপনাদের সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষায় আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন।
বয়ান শেষে শুরু হয় আখেরি মুনাজাত। মৌকার পীর সাহেব আমিরুস সালেকীন শাহ মুহাম্মদ নেছারউদ্দীন ওয়ালিউল্লাহী মুনাজাত পরিচালনা করেন। মুনাজাতে আল্লাহর দরবারে সকল মুসলমান নর-নারীর গুনাহ মাফ ও কবরবাসীদের আজাব মাফ চেয়ে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রাসুল (সা:) এর দিদার নছীব লাভের ফরিয়াদ জানান। বাংলাদেশের শান্তি সমৃদ্ধিসহ বিশ্বের সকল মুসলামানদের হেফাজত কামনা করা হয়। দেশে শান্তি, মান্যতা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় থাকার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়। এদেশে ইসলামী আক্বিদার প্রচার-প্রসার অব্যাহত থাকার প্রার্থনা করেন মুনাজাতে।
লাখো মুসল্লির কান্নাররোল ও আমিন আমিন আর লা ইলাহা ইলল্লাহু মোহাম্মাদুর রাসুল্লাহ ধ্বনিতে আখেরী মুনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হয় মৌকারা দরবার শরীফের মাহফিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।