পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাখাওয়াত হোসেন
শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা খুবই জনপ্রিয়। নিজের দেশের মতোই বিদেশের মাটিতে দ্রæত অপরিচিতদের আপন করে নিতে তাদের জুড়ি নেই। বিদেশের মাটিতে শান্তি রক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনো পিছপা হন না বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এ পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শান্তি মিশনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর ১শত ১৯ জন জীবন দিয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। কর্তব্যবোধ ও নিষ্ঠাই তাদের আজকের গৌরবোজ্জল অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সম্মান বৃদ্ধি করছেন বিশ্বদরবারে। সর্বশেষ গত বুধবার ২৮ ফের্রুয়ারী আফ্রিকার মালিতে ভয়াবহ আইইডি বিস্ফোরণে চার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। আইএসপিআরের পরিচালক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দেশ কিংবা বিদেশ, যুদ্ধ কিংবা শান্তি সর্বত্র সমানভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। দেশের বাইরে জাতিসংর্ঘের তত্তাবধানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের শহীদ হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পরিবেশ যত প্রতিক’লই হউক না কেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নিজের জীবনের মতোই দায়িত্বকে ভালবাসেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, শান্তিরক্ষা মিশনের বড় জায়গা জুড়ে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের শান্তি ও সুরক্ষায় তারা কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ৬ হাজার ৫৪৯ জন শান্তিরক্ষী কাজ করছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ৫ হাজার ৫১৮ জন, নৌ বাহিনীর ৫০৫ জন ও বিমান বাহিনীর ৫২৬ জন কাজ করছেন। শান্তিরক্ষীদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর ৫৭ জন নারী সদস্য কাজ করছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ৪৫ জন, নৌ বাহিনীর ২ জন এবং বিমান বাহিনীর ১০ জন সদস্য কাজ করছেন। পৃথিবীর ৪০টি দেশে ৫৪টি মিশনে এক লাখ ৩২ হাজার ৬১৮ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য তাদের দায়িত্ব পালন সম্পন্ন করেছেন। নামিবিয়া, কম্বোডিয়া, মোজাম্বিক, সোমালিয়া, কুয়েত, সাবেক যুগোশ্লাভিয়া, জর্জিয়া, ইরাক, পূর্ব তৈমুর, হাইতি, সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়া, কঙ্গো, আইভরি কোস্ট, লেবানন, মালি এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে (সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক) কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা হতাহত হয়েছেন।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে আসছেন। তারা সামরিক ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ধরনের সংঘাতের ওপর অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। ফলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের কেউ কেউ পদোন্নতি পেয়ে জাতিসংঘ সদর দফতরেও কাজ করছেন। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সাফল্যের অংশ হিসেবে সিয়েরা লিওনে বাংলা ভাষাকে তাদের অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন সড়ক ও স্থাপনা নির্মানের পাশাপাশি এসবের নামও বাংলায় রাখা হচ্ছে। উল্লেখ, সর্বশেষ গত ২৮ ফের্রুয়ারী আফ্রিকার মালিতে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিট) দোয়েঞ্জা নামক স্থানে সন্ত্রাসীদের পুঁতে রাখা শক্তিশালী ই¤েপ্রাভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজ (আইইডি) এর ভয়াবহ বিস্ফোরণে চারজন নিহত এবং আরো চারজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন ঃ ওয়ারেন্ট অফিসার আবুল কালাম, পিরোজপুর (৩৭ এডি রেজিঃ আর্টিঃ), ল্যান্স কর্পোরাল আকতার, ময়মনসিংহ (৯ ফিল্ড রেজিঃ আর্টিঃ), সৈনিক রায়হান, পাবনা (৩২ ইস্ট বেংগল) সৈনিক (পাঁচক) জামাল, চাপাইনবাবগঞ্জ (৩২ ইস্ট বেংগল)। আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহত ও আহতদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। নিহতদের লাশ বাংলাদেশে আসতে আরো ৩/৪দিন সময় লেগে যাবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে বিদ্রোহীদের হামলায় তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং চারজন আহত হন। এহেন ভয়াবহ আইইডি আক্রমনসহ নানাবিধ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য মালিতে চলমান শান্তিরক্ষা মিশনকে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুকিপূর্ন শান্তিরক্ষা মিশন অভিহিত করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ও দেশের জনগনের ভাবমূর্তিকে সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক শান্তিরক্ষীরা নিরলস পরিশ্রম এবং ত্যাগ শিকার করে যাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।