পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বি এম হান্নান ও মামুনুর রশিদ পাঠান, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) থেকে : বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন-এর সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, সারা পৃথিবীর যেখানে মুসলমানদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সবই সূফি দরবেশদের মাধ্যমে। উপমহাদেশে এখন মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ৭০ কোটি। সেই আফগানিস্তান থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত মুসলমানের বিচরণ। ইনশা আল্লাহ এ শতাব্দীর শেষে মুসলমাদের সংখ্যা দাঁড়াবে একশ’ কোটি।
জনাব এ এম এম বাহাউদ্দীন গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসায় দু দিনব্যাপী তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে সভা প্রধানের বক্তব্য রাখেন। মাহফিলের শুরুতে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক মন্ত্রী, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মরহুম মাওলানা এম এ মান্নান (রহ:) ও তাঁর সহধর্মিনী মরহুমা হোসনে আরা বেগমের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
মাহফিলে ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন আরো বলেন, এসব অঞ্চলে কিন্তু আল্লাহর নবী কিংবা সাহাবাদের আগমন ঘটেনি। অথচ সর্বত্রই ছিল মুসলমানদের আধিপত্য। শুধুমাত্র ভারতেই মুসলমানরা প্রায় ১শ’ বছর শাসন করেছেন। এখন ভারতের বিজেপি সরকার উদ্বিগ্ন, ২০৫০ সালের মধ্যে আবার মুসলমানদের শাসন কায়েম হয়ে যায় কিনা। মিয়ানমার যে মুসলমানদের বের করে দিচ্ছে সেটাও তাদের একটা উদ্বেগের কারণ। হয়তো ভবিষ্যতে মুসলমানরা তাদের জন্য হুমকি হতে পারে। বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১৬ কোটিই মুসলমান। এ সংখ্যা দিনে দিনে আরো বাড়ছে বৈ কমছে না। শিক্ষা ও দক্ষতার হার বাড়ছে। এই যে বিশাল সংখ্যক মুসলমান দক্ষ ও যোগ্য হচ্ছে, তারা দুনিয়া শাসন করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু তারা কাদের ছায়ায় আছে?
সিলেটে ক’দিন আগে একটি ছোট-খাটো ঘটনা ঘটেছে। অখচ এ ধরনের ঘটনা দেশে একদিনেই বহু ঘটে থাকে। যেহেতু এ ঘটনায় আলেম সমাজ জড়িত হয়েছে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। মুসলমানদের মতো এমন শান্তিপ্রিয়, নিরীহ এবং ভালো মানুষ আল্লাহপাক পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি সৃষ্টি করেননি এবং করবেনও না। কিন্তু আমাদের এ ভালো কাজগুলোকে কতিপয় ব্যক্তি তাদের কর্মকাÐ ও অপব্যাখা দিয়ে বিশ^ব্যাপী মুসলমানদের খাটো করছে।
এদেশের আলেম সমাজ কখনো হিংসা বিদ্বেষ পোষণ করেন না। সবাইকে ভালো মানুষ হতে পরামর্শ দেন। এ কারণে বাংলাদেশে আলেমদের সামাজিক নেতৃত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে গেছে, মাদকের ব্যবহার বেড়ে গেছে। মাদকাসক্ত সমাজ দিয়ে যে কোনো খারাপ কাজ করানো যেতে পারে। খুন-খারাবি থেকে ধর্ষণ। এর আলামতও শুরু হয়ে গেছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোতে নেই। খোদ আমেরিকার মতো দেশেও তা পারছে না। এ কারণে আমেরিকার ছেলেদের হাতে কতো শত মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। স্কুলে ঢুকে নিজেদের সহপাঠীদের গুলি করে হত্যা করছে। এসব কারণে তাদের সমাজ সঙ্কটে পড়েছে। অথচ এতদিন তারা ওয়াশিংটনে বসে কঅভাবে পৃথিবীর অন্য দেশে বোমা মেরে মানুষ মারা যায় তা শিখিয়েছে। ভালো মানুষ হতে শেখায়নি। বাংলাদেশে যুবসমাজ অসভ্য, বেয়াদব ও উগ্রপন্থী হয়ে ওঠছে। তারা শিক্ষক ও পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধা করে না। তাই এ থেকে উত্তোরণের একমাত্র সঠিক পথ হচ্ছে কুরআন ও হাদীসের আলোকে আলেম সমাজের নির্দেশিত পথে চলা।
দু দিনব্যাপঅ তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের শেষ দিনে তাফসির করেন, মাওলানা মুফতি ড. কাফিল উদ্দীন সরকার সালেহী,বয়ান করেন ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মুফতি মাওলানা এইচ এম আনোয়ার মোল্লা, মাওলানা মমিনুল ইসলাম খান। অতিথি ছিলেন গিয়াউদ্দিন বাবুল পাটওয়ারী, সফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী প্রমুখ।
মাহফিলের প্রথম দিনে প্রধান ওয়ায়েজ ছিলেন দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক আল্লামা কবি রূæহুল আমীন খান, মুফতি মাওলানা জসিম উদ্দিন আজহারি প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।