Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুই উপজেলা থেকে সরকারি ভাতা তুলেন মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন

| প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সংবাদদাতা: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ভুঁইয়া সরকারি নিয়মের কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে দুই উপজেলা থেকে সরকারি ভাতাসহ বরাদ্দকৃত সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশ্ন উঠেছে-তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েও। এছাড়া সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বাড়িটি তার চাচাতো ভাই মাহফুজুর রহমান আজমের নিকট বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এ অনিয়মের বিরুদ্ধে ইমাম হোসেন হারুন নামের এক মুক্তিযোদ্ধা বাদি হয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি দরখাস্ত দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের তালগ্রামের মৃত আলী আকবর ভুঁইয়ার পুত্র জয়নাল আবেদীন ভুঁইয়া দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তালগ্রামের বাড়িটি বিক্রি করে ফেনীর পরশুরামে বাড়ি করে। এরপর তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে মুক্তিযোদ্ধার সকল সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। চৌদ্দগ্রাম থানায় তার গেজেট নং ৬০১৫, মুক্তিবার্তা(সবুজ) ০২০৪০৫০২৮৭, সাময়িক সনদ নং ম-৬৮৮৯৮, সোনালী ব্যাংক একাউন্ট নং ২৫০০৪৪২৮। আবার তিনি সরকারকে ফাঁকি দিয়ে কৌশলে ফেনী জেলার পরশুরামেরও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যান। সেখানে তার গেজেট নং- ৯০৩৮, মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ নং- ম-১১২৫৬৪, সোনালী ব্যাংক একাউন্ট নং- ২২৭৪৫, সমাজ সেবা পাশ বই নাম্বার ২৫৮। একই ব্যক্তি দুই উপজেলা থেকে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, অনেকে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগহণ করেও গেজেট বা সনদে নাম উঠাতে পারেননি। আর জয়নাল আবেদী ভু্ইঁয়া ভারতে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাত রান্নার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। ওই ব্যক্তি পরশুরামে কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা ও কর্মকর্তাকে উৎকোচ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেজে ভাতা উত্তোলন করছেন। আত্মসাৎ করছেন সরকারের বিপুল অংকের টাকা। তার আত্মসাৎকৃত টাকা দিয়ে সরকার উন্নয়ন বা জনসেবামূলক কাজ করতে পারতো। বাড়িটির তত্ত¡াবধানে থাকা জয়নাল আবেদীন ভুঁইয়ার চাচাতো ভাই মাহফুজুর রহমান আজম বলেন, জয়নাল আবেদীনের কোন জায়গা না থাকায় আমি তাকে দুই গন্ডা জায়গা দান করি। তিনি সেখানে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়িটি বিক্রয়ের ঘটনাটি সত্য নয়। তবে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন পরশুরাম ও চৌদ্দগ্রাম থেকে ভাতা উত্তোলন করেন বলেও তিনি স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ঘটনার সাংবাদিক পরিচয় জেনে বলেন, আমাকে একটু সময় দিন। আমি মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে আপনাকে জানানো হবে বলেই তিনি কল কেটে দেন। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। সোনালী ব্যাংক চৌদ্দগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবাদ হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন সম্পর্কে জনৈক এক ব্যক্তি একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশ পেলেই আমি ব্যবস্থা নিব। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, সরকারি বিধি অনুযায়ী একই ব্যক্তি দুই জায়গা থেকে মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা গ্রহন করতে পারে না। এটা একটি অপরাধ। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমার কাছে এ ধরনের কোন অভিযোগ নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ