পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট সরকার বিএনপি এবং খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে চায়। তবে একাদশ নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে সরকার ‘ফাকা মাঠে গোল’ দিতে চাইলে জনগন তা গ্রহন করবে না।
গতকাল (সোমবার) বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেবার পর রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব এক তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে মিথ্যাচার করেছেন। এমন কতগুলো কথা বলেছেন যার সাথে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন নিয়ে উনি (প্রধানমন্ত্রী) কথা বলছেন, নির্বাচন ঠেকে থাকবে না বলেছেন। এর সাথে তার অভ্যাস আছে, অভিজ্ঞতা আছে।
২০১৪ সালে যে নির্বাচন তারা করেছেন সেখানে শতকরা ৫ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে আসেনি। আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন না করলে এদেশে নির্বাচন কারো কাছে গ্রহনযোগ্য হবে না। এটা বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে যারা নির্বাচন করতে চায়, তারা আসলে প্রতিপক্ষকে বিরোধী দলকে এবোর্ট করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়, একতরফা করতে চায়। সেটা এদেশের মানুষ গ্রহন করবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করবার জন্যে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করবার জন্য আবার একটা ওই একতরফা-একদলীয় নির্বাচন করবার পায়তারা তারা করছেন এবং সেভাবে একটা নীল নকসা করেছেন।
সেই নীল নকসার অনুযায়ী দেশনেত্রীকে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে একটা সম্পূর্ণ ভুয়া নতি তৈরি করে তারা আদালতকে ব্যবহার করে, আদালতের ঘাড়ে বন্দুক চাপিয়ে দন্ড দিয়েছেন। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, এভাবে ছলচাতুরি করে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আর যাই করা যায়, দেশের মানুষের ভালোবাসা নেয়া যাবে না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে না এবং জনগনের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
বিএনপির গঠনতন্ত্রের ‘৭ ধারা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির ৭ ধারায় ছিলো পিও প্রেসিডেন্ট অর্ডার-৮, যেটা ১৯৭২ সালে করা হয়েছিলো। সেই ধারা এখন নেই, এটা এখন বাতিল হয়ে গেছে। সেই দন্ডিত ব্যক্তি দলের কোনো পদের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে না, দলের প্রধান হতে পারবে না। আজকে একটা কথা মানতে হবে যে, এই দন্ডটা কারা দিয়েছে? একটি আদালত এই দন্ড দিয়েছে, সেই আদালত কার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
৭ ধারায় পরিবর্তনটা কী হয়েছে? সমাজের স্বীকৃত কোনো ব্যক্তি যদি হয়ে থাকেন- সেটা এখনো আছে। সুতরাং মেজর কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমি একটা বিষয় বুঝতে পারি না যে, বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ে কে প্রধান হলো, না হলো। উনাদের এতো মাথা ব্যথা কেনো, উনাদের এতো আশঙ্কা কেনো? আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে তাদের (সরকার) এতো আশঙ্কা কেনো, ভয় কেনো? উনি নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না। নির্বাচন না করতে পারলে আপনার সুবিধা হয়, আমরা ভালো করেই বুঝি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান অটোমেটিক্যালী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করবেন। এটা তাদের (সরকার) বিষয় না। বিষয়টা আমাদের। এটা আমাদের কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার রায়ের কপি পাওয়ার পর পরবর্তি পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি আইনগত দিক বলতে পারবো না। এটা আইনজীবীরা জানেন। তবে অবশ্যই আপীল করা হবে। আশা করি এই সাপ্তাহে আপীল ফাইল করা হবে। প্রতিক্রিয়ার সময়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল সকাল ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার তার প্রাপ্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। সরকার দেশনেত্রীকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়ার পর এখন আইনের ন্যূনতম যে সুযোগ-সুবিধা আছে, সেগুলোও পালন করছে না। আইনের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও তিনি পাচ্ছেন না। পাঁচ দিনের মধ্যে বিচারের রায়ের কপি দেওয়ার কথা, সেটা এখন পর্যন্ত তারা দেয়নি (১২দিন পর গতকাল বিকেলে দেওয়া হয়)। তাকে একটি নির্জন কারাগারে অন্ধ প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছে, যা কোনোমতেই এই স্বাধীন দেশের আইনের মধ্যে পড়ে না।
দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশ এবং খালেদা জিয়া, গণতন্ত্র এবং খালেদা জিয়া- এই দুটি আজ একাকার হয়ে গেছে। তাই দেশনেত্রীকে আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে, জনগণের শক্তি দিয়ে মুক্ত করে আনতে হবে। আসুন তার মুক্তির দাবিতে আমরা সোচ্চার হই। খালেদা জিয়াকে ভয় পায় বলেই সরকার আগামী নির্বাচনে নীল নকশা বাস্তবায়ন করত তাকে ‘মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি করেছে বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আজ ব্যাংক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে পড়ছে। শেয়ার মার্কেট ধ্বংস হয়ে গেছে। কোথাও কোনো বিচার নেই, সেগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা হয় না। আজকে দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের কোনো বিচার হয় না। কারণ এর সাথে সরকার জড়িত রয়েছে। এ থেকে উত্তরণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে সক্রিয় হতে আহŸান জানান ফখরুল।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় মানববন্ধনে মহিলা দলের রাশেদা বেগম হীরা, হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, হালিমা নেওয়াজ আরলী, ইয়াসমীন আরা হক, আমেনা খাতুন, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।