Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিদেশি কর ফাঁকিবাজ ধরতে সক্রিয় হচ্ছে এনবিআর

| প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর ফাঁকিবাজদের ধরতে মরিয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আগে বিদেশি কর ফাঁকিবাজদের করের আওতায় আনতে ৩০ প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবার সে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে এনবি আরের সব কর অঞ্চলে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বিদেশিরা কর্মরত আছেন, এমন দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে এসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালাবে এনবি আর গঠিত টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে দ্রæত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের ডাটাবেজের কাজও সম্পন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে গঠিত টাস্কফোর্স ৫টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে অনিবন্ধিত ১৫ বিদেশি চিহ্নিত করেছে, যাদের করের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই ঝটিকা অভিযানের প্রক্রিয়া আরও বিস্তৃত করতে কর অঞ্চলগুলোকে বিদেশি কর্মী আছে, এমন প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি এই চিঠি দেয়া হয়।
এনবিআর জানায়, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের কাছ থেকে সঠিকভাবে আয়কর আদায় করতে ২০১৬ সালে টাস্কফোর্স গঠন করে তারা। এই টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), এসবি, ডিজিএফআই, এনএসআই, বাংলাদেশ ব্যাংক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেপজা, পাসপোর্ট অধিদফতর, এনজিও ব্যুরো ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে কাজের সুবিধার্থে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলভিত্তিক টাস্কফোর্সকে ভাগ করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই ডাটাবেজের কাজ সমন্বয় করা যায়নি। সূত্র জানায়, বর্তমানে কতজন বিদেশি বাংলাদেশে অবস্থান করছেন অথবা কর্মরত আছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান সরকারি কোনো সংস্থার কাছে নেই। তবে এনবিআরের কর অঞ্চল-১১ তে প্রায় ১১ হাজারের মতো বিদেশি রিটার্ন জমা দেন, যা বিদেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের সঙ্গে চরম অসঙ্গতিপূর্ণ। শুধু ভারতে প্রতি বছর ৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। এ প্রেক্ষাপটে বিদেশি কর্মীদের করের আওতায় আনতে অভিযান চালানো হচ্ছে। দেখা গেছে, অধিকাংশ বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে টুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করেন। এরপর বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। আবার বিভিন্ন কোম্পানির ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে আসা বিশেষ করে এনজিও, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, চিকিৎসা, গার্মেন্ট, মার্চেন্ডাইজিং, পরামর্শকসহ অন্য বিদেশিদের বেতন-ভাতা গোপন রাখা হচ্ছে। মূলত কর ফাঁকি দিতেই এ কৌশল অবলম্বন করছে দেশীয় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি গোপন চুক্তি অনুযায়ী, বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে মানি লন্ডারিংয়ের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ মুদ্রা পাচার হচ্ছে। প্রতি বছরই মুদ্রা পাচারের পরিমাণ বাড়ছে। এছাড়া অবৈধভাবে আসা বিদেশিরা মাদক চোরাচালান ও জাল মুদ্রা পাচারের মতো অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। আবার অনেক বিদেশি নাগরিক অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে দেশে প্রবেশের পর ঠিকানা পরিবর্তন করে ফেলছেন। ফলে তাদের খুঁজে বের করা যায় না। টাস্কফোর্সের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশিদের প্রকৃত সংখ্যা বের করতে বর্তমানে একটি ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। যেখানে বিদেশি কর্মীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, কর্মস্থলের ঠিকানা, বাংলাদেশে বসবাসের স্থায়ী ঠিকানা, কাজের ধরন, বেতন-ভাতাদির তথ্য ও আয়কর পরিশোধের তথ্য উল্লেখ থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ