বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বেনাপোল অফিস : দেশের বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের সাথে বিভাগীয় শহর খুলনার মধ্যে চলাচলকারী লাভজনক খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেয়ার চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন উর্ধ্বতন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমিউটার ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ নেয়ার জন্য রেলের মহাপরিচালকের দফতরে দেন-দরবার করছেন বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১৪ বছর আগে খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেন চালু হয়। কিছুদিন পরে রেলের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এই ট্রেনটিকে বেসরকারি খাতে লিজ দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীরা সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হন। চোরাকারবারী-টানাবাজদের দখলে চলে যায় কমিউটার ট্রেনটি। সাধারণ মানুষের দাবিতে আবারো কমিউটার ট্রেনটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলাচল করছে। কিন্তু রেলওয়ের কতিপয় অসাধু উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিজেদের পকেটভারি করার জন্য লাভজনক এই খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেনটি পুনরায় বেসরকারি খাতে লিজ দেয়ার পাঁয়তারা করছেন। সরেজমিনে বেনাপোল-খুলনা কমিউটার ট্রেনে ভ্রমণ করে দেখা যায়, সকাল ৬টায় ট্রেনটি খুলনা স্টেশন ত্যাগ করে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, সিঙ্গীয়া, যশোর, ঝিকরগাছা, নাভারণ স্টেশন পার হয়ে সকাল সাড়ে ৮ টায় বেনাপোলে পৌঁছায়। এ সব স্টেশনের বেশিরভাগ যাত্রী ভারতে যান। পরবর্তীতে সকাল ৯টায় বেনাপোল স্টেশন ত্যাগ করে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে খুলনা পৌঁছায়। এই ট্রেন আবার দুপুর ১২টায় খুলনা স্টেশন ত্যাগ করে ৬ টি নির্ধারিত স্টেশন থেকে যাত্রী ওঠানামা করিয়ে বেলা আড়াইটায় বেনাপোল পৌঁছায়। পুনরায় বিকাল সাড়ে ৩টায় খুলনার উদ্দেশ্যে বেনাপোল ত্যাগ করে। সব স্টেশনে কম-বেশি যাত্রীর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। খুলনা থেকে বেনাপোল আসতে বাসে সময় লাগে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। ভাড়ার পরিমাণ দেড়শ টাকা। সে ক্ষেত্রে কমিউটার ট্রেনে খুলনা থেকে বেনাপোল আসতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা আর ভাড়া মাত্র ৪৫ টাকা। এ কারণে খুলনা থেকে জেলা শহর যশোরসহ ভারতে যাতায়াতকারী যাত্রীরা বাসের চেয়ে কম খরচে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। বিজিবি, পুলিশ এবং ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শকদের কড়াকড়ির কারণে বর্তমানে ট্রেনে পূর্বের মত চোরাচালানীরা যাতায়াত করতে পারে না। ফলে অন্যান্য যাত্রী সাচ্ছন্দে ও নিরাপদে তাদের গন্তব্যে যাতায়াত করে থাকেন। পূর্বের তুলনায় কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারি কোষাগারে বেশি অর্থ জমা হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে প্রতিমাসে এ ট্রেন থেকে ৩৭ লাখ টাকা টাকা আয় করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ হিসাবে প্রতিমাসে গড়ে বেনাপোল-খুলনা কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারের আয় হয় ৩৫ লাখ টাকার বেশি। অথচ লাভজনক এই ট্রেনটিকে রেলের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা বেসরকারি খাতে লিজ দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। বেনাপোল খুলনা কমিউটার ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে পাকশীতে কমরত চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিহির কুমার গুহ এর সাথে গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, নীতিমালা মেনেই ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া হয়। আপাতত, খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেনটি লিজ দেয়ার কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। তবে শেষ ৬ মাসের আয়ের চেয়ে বেশি টাকা দিলে তার অনুকূলে লিজ দেয়া যেতে পারে।
বেনাপোল-খুলনা কমিউটার ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হলে এই ট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীরা ভয়াবহ ভোগান্তির শিকার হবেন। আর এ সুযোগে চোরাচালানীরা পূর্র্বের মত তাদের আধিপত্য বিস্তার করবে। তাই লাভজনক খুলনা-বেনাপোল কমিউটার ট্রেনটি যাতে বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া না হয় তার জন্য রেলমন্ত্রী ও রেলের মহাপরিচালকের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।