Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাজীগঞ্জে ১৫ দিনে ১৬ গরু চুরি : ঘরে ঘরে আতঙ্ক

| প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে গত ১৫ দিনে কমপক্ষে ১৬ গরু চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারন গৃহস্থতরা। যে সকল পরিবারগুলো নিজের পালিত গরুর দুধ বিক্রি করে দিনাদিপাত করছেন এমন পরিবারগুলো রীতিমতো আতঙ্কিত রাত্রী যাপন করছেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে গরু চোরকে ধরার বৃথা চেষ্টা করেছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের মহেশপুর ও একই উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের উচ্চগাঁ ও সাতবাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ১৫টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে অধিকাংশগুলো গৃহস্থের গরু। যারা নিতান্তই গরু, গরুর বাছুর কিংবা গরুর দুধ বিক্রি করে সংসার খরচ যোগান। চুরি যাওয়া গরুর মধ্যে ১৫দিনের বাছুর, গাভীন (প্যাগনেন্সী) গরু রয়েছে।
জানা যায়, বাকিলা ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের আঃ রব মিয়ার সেলিম মিয়া পেশায় একজন গরু ব্যবসায়ী। গত সপ্তাহের বুধবার দিনগত রাতে একত্রে ৪টি গরু নিয়ে যায় চোরের দল। যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ টাকা বলে ইনকিলাবকে জানান সেলিম মিয়া নিজে।
গত বুধবার দিনগত রাতে সাতবাড়িযা পাটোয়ারী বাড়ির আঃ হাইয়ের একত্রে ৩টি গরু চুরি হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি গরু মাত্র ১৫ দিন আগে বাছুর দিয়েছে আরেকটি গরু সম্প্রতি বাচ্ছা দেবার কথা ছিলো। এই গৃহস্থের ৩টি গরু চুরি হয়ে গেলেও ১৫ দিনের বাছুরটি আঃ হাই যতেœর খাতিরে ঘরে নিয়ে রেখেছিলেন বলে বাছুরটি চোরের হাত থেকে রক্ষা পায়। মা না থাকার কারনে আর বাঁচার সম্ভবনা নেই বলে পরের দিন বৃহস্পতিবার মাত্র ১৫শ টাকায় বাছুরটি স্থানীয় বাকিলা বাজারে বিক্রি করে দেন আঃ হাই।
বেতিয়াপাড়ার আঃ হাইয়ের গরু চুরি হবার কয়েকদিন আগে সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান উচ্চঙ্গা গ্রামের আব্দুর হাই চেয়ারম্যানের ৪টি গরু চুরি হয়। জীবনের শেষ বয়সে গরু পালন পালন করে সময় পার আর কয়টা টাকা আয় করতেন সাবেক এই জনপ্রতিনিধি । চোরের দল তাকে এই বষয়ে এসে সর্বশান্ত করেছে।
উচ্চঙ্গা গ্রামের রেললাইন সংলগ্ন মজুমদার বাড়ির প্রয়াত লাভু মজুমদারের স্ত্রী পালন করতেন ২টি গরু। সম্প্রতি সময় এই নারীর ২টি গরুই চুরি হয়ে যায়। একইভাবে পাশ^বর্তী সূত্রধর বাড়ি সংলগ্ন নতুন বাড়ির কৃষক বোরহানের ১টি, পশ্চিম উচ্চঙ্গা পুইড্ডা বাড়ির জাকিরের ও আবুল কালামের ১টি করে গরু চুরি হয়ে যায়।
বেতিয়াপাড়া পাটোয়ারী বাড়ির আঃ হাই ছৈয়ালের ভাইপো ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন ইনকিলাবকে জানান, গরু চুরির পর চাচা পাগলের মতো হয়ে গেছেন। আগের দিন আমাদের বাড়িতে গরু চুরির ঠিক পরের দিন আবার চোরের দল আমাদের গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ডুকে চোরেরা। মানুষ টের পাওয়ার পর দেখা যায় যে সকল পরিবারের গরু রয়েছে সেই সকল পরিবারের বসত ঘরের দরজাগুলোতে শিকল আটকিয়ে রাখা হয়েছে। এর পর থেকে গরু পালকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মহেশপুর গ্রামের সেলিম মিয়া জানান, গরু গিয়েছে মামলা করবো ভেবেছি কিন্তু আরো খরচ হবে ভেবে মামলায় তাই যাইনি। অপর এক প্রশ্নে এই ব্যবসায়ী বলেন, ঠিক কারা গরুগুলো চুরি করেছে আমি জানি কিন্তু দূর্ভাগ্য হলো হাতে নাতে ধরতে পারিনি।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাবেদুল ইসলামের গরু চুরির বিষয়টি জানা নেই বা এলাকা থেকে কেউ বিষয়টি তাকে জানাননি বলে ইনকিলাবকে জানান এই কর্মকর্তা। তবে চোরের বিষয়ে এলাকা থেকে তথ্য দিলে অবশ্যই আটক করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ