Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বসন্তে বাসন্তী গ্রন্থপ্রেমী

| প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা : বসন্ত এসে গেছে। ফাগুন হাওয়ার দোল লেগেছে প্রাণে। ষড়ঋতুর এই বঙ্গে বসন্ত আসে তার সমস্ত উচ্ছাস আর রং নিয়ে। শীতের জড়তা কেটে আড়মোড়া ভেঙে প্রকৃতি সাজে নতুন সাজে। প্রকৃতির এ নতুন সিগ্ধ রুপ মুগ্ধ করে প্রকৃতিপ্রেমীদের। আর সেই মুগ্ধতা ছড়িয়ে পরে শহরের সর্বত্র। সেই সাথে এই বসন্তকে বরণ করে নিতে থাকে কত আয়োজন।
বসন্তের এই ¯িœগ্ধ করা রুপকে বরণ করা থেকে বাদ পড়েনি অমর একুশে বইমেলাও। এইদিনে গ্রন্থপ্রেমীরা বসন্ত প্রেমকে সঙ্গী করে বইয়ের সাথে মিতালী করতে এসেছেন মেলার প্রতিটি কোণে।
গতকাল পহেলা ফাল্গুনে মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায় এমনি দৃশ্য। মেলায় যেন ফাগুনের আগুন লেগেছে আর সেই আগুনে পুড়ে আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠছে প্রতিটি প্রাণ। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের মাঝে বসন্তের ছোয়া থেকে বাদ পড়েনি কেউই। এমনকি মেলার বিক্রেতারাও সেজেছেন বাসন্তী সাজে।
বিকেল থেকেই মেলার সোহরোওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গন ও একাডেমি প্রাঙ্গনে সারিবদ্ধ ভাবে গ্রন্থপ্রেমীদের প্রবেশ মেলাকে করে তুলেছিল আরো প্রাণবন্ত। অন্যান্য দিনের তুলনায় মেলায় গতকাল ভীড় ছিল অনেকটাই বেশি।
গতকালের মেলায় কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, কেউবা ভালবাসার মানুষটার হাত ধরে ঘুড়ে দেখছেন মেলার পুরো প্রাঙ্গন। কেউবা এসেছেন বন্ধুদের নিয়ে সদলবলে। গতকাল বইমেলায় অধিকাংশ দর্শনার্থী এসেছেন শাড়ি পাঞ্জাবী পড়ে। বৃদ্ধরাও সেজেছেন বাসন্তী সাজে। হলুদ, লাল শাড়িতে জড়িয়ে মাথায় টায়রা দিয়ে তারা সেজেছেন বসন্তকে বরণের নিমিত্তে। ছেলেরা অধিকাংশই নানা রংয়ের পাঞ্জাবীতে সাজিয়েছেলেন নিজেদের।
রাজধানীর মিরপুর থেকে মেলায় আসা জুটি ইশরাত শোভা ও নাদিম রহমান ইনকিলাবকে বলছিলেন তাদের অনুভূতির কথা; ‘আসলে মেলায় এসে অনেক ভালো লাগছে। আজকের মেলাটা মনে হয় পুরোটাই বসন্তকে বরণ করার জন্য তৈরী করা হয়েছে। সেই সাথে একসাথে আসতে পারাতে আরো ভালো লাগছে।’
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, আজকের বইমেলাটা অন্যরকম লাগছে অন্যান্য দিনের চেয়ে। সকলের পড়নে বাসন্তী সাজ চারপাশের পরিবেশকে আরো মোহনীয় করে তুলেছে।
স্টলের বিক্রয় কর্মীরা বলেন, আজকে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেচাকেনা বাড়তি। দম ফালানোর মত ফুসরতও পাওয়া যাচ্ছেনা অনেক সময়। সবমিলিয়ে অনেক ভালো কাটছে আজকের বইমেলা।
গ্রাহকদের আগ্রহের কথা জানতে চাইলে অনেক বিক্রয় কর্মী জানান, মধ্যবয়স্ক নারীরা বেশিরভাগই রান্না বান্না অথবা ভ্রমণ সংক্রান্ত বই কিনছেন। তরুণ তরুণীরা উপন্যাস কবিতা ও থ্রিলার এর বই কিনছেন।
বইমেলার শিশু চত্বরেও গতকাল ছিল দেখার মতো উপস্থিতি। সেখানে শিশুরা বাবা মায়ের হাত ধরে ঘুরে ঘুরে দেখছে প্রতিটি স্টল। সেই সাথে পছন্দের বইয়ের জন্য বায়না ধরা সহ না পেলে অভিমানে গাল ফুলিয়ে চুপ থাকতেও দেখা গেছে অনেককে।
মণিপুরী স্কুলের শিক্ষার্থী রায়হান এসেছে বাবা মায়ের সাথে বইমেলায় ঘুরতে। গতকাল তার প্রথম বইমেলায় আসা হয়েছিল বলে সে জানায় তবে পছন্দের বই না পেয়ে অভিমানে গাল ফুলিয়ে বইমেলা প্রাঙ্গন ত্যাগ করতে করতে কথা হচ্ছিল তার সাথে। ‘ঐ কার্টুনের বইটা শেষ হয়ে গেছে, আঙ্কেল বলেছে আবার কাল আসবে। কাল আসতে পারবোনা’। তার পছন্দ করা বইয়ের কপি শেষ হয়ে যাওয়ায় দোকানীর প্রত্যাখ্যানে তার এই অভিমান। তবে সেও বসন্তকে বরণ করতে বইমেলায় এসেছে হলুদ পাঞ্জাবী আর নীল জিন্সের প্যান্ট পড়ে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ