পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লালমনিরহাট থেকে মোঃ আইয়ুব আলী রসুনীয়া (জেলা সংবাদদাতা) : ১২ ফেব্রূয়ারী /১৮ ভারতের এক তরফা পানি প্রত্যাহারের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। ১২ উপজেলার কৃষকরা তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি সেচ সুবিধায় ছিল। এখন জেলার ৭ থেকে ৮টি উপজেলাকে সেচের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এতে করে কৃষি উৎপাদন ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে নদীর প্রবাহ ঠিক রেখে সেচ কাজের জন্য প্রয়োজন ২০ হাজার কিউসেক পানি। অথচ পাওয়া যাচ্ছে বড়জোর ৭০০ কিউসেক পানি। দিন দিন মারাতœক ভাবে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাচ্ছে। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজ থেকে ৯৭ কিলোমিটার পর্যন্ত নদীতে এক কিউসেক পানিও থাকছে না। এ কারণে তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অংশের এই বিশাল পরিমাণ নদীগর্ভ পানি স্বল্পতার কারণে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হচ্ছে।
জানা গেছে, তিস্তার পানির সেচ সুবিধা উপজেলার ৫৭ হাজার হেক্টর জমি বাদ দিয়ে এবারও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে এ দুই জেলায় প্রায় অর্ধলাখ কৃষক সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা থেকে গত সপ্তাহ থেকে চলতি মৌসুমের বোরো সেচ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বোরো মৌসুমে অনেক জমিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের সেচ দিতে হবে। দুই সপ্তাহ আগেও ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ ছিল দুই হাজার কিউসেক। এখন কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০ কিউসেকে।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে বোরো মৌসুমে লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সেবার সেচ দেওয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। পানির অভাবে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সেচ দেওয়া হয় মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার মাত্র ১২ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও পানির প্রবাহ কমে গেলে শেষ পর্যন্ত ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। দিনাজপুর ও রংপুরের ৫৭ হাজার হেক্টর জমি সেচ কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ডিমলা, জলঢাকা, নীলফামারী সদর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে সেচের আওতায় রাখা হয়েছে। তবে উজানের প্রবাহ পাওয়া গেলে সেচের জমির পরিমাণ রংপুর ও দিনাজপুরে বৃদ্ধি করা হতে পারে।
তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্প এলাকায় সেচ দেওয়া এবং নদীর প্রবাহ ঠিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে প্রয়োজন ২০ হাজার কিউসেক পানি। শুধু সেচ প্রকল্প চালাতেই প্রবাহমাত্রা থাকা প্রয়োজন ১৪ হাজার কিউসেক এবং নদীর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন চার হাজার কিউসেক পানি। সেখানে শুস্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ কিউসেক।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা নদী অববাহিকার ৫ হাজার ৪২৭টি গ্রামের মানুষ তাদের জীবিকার জন্য এই নদীর ওপর নির্ভরশীল। তিস্তায় পানির প্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় সেখানকার মানুষের জীবন ও জীবিকায় নেমে এসেছে চরম অনিশ্চয়তা। তিস্তা অববাহিকার ৮ হাজার ৫১ বর্গকিলোমিটার এলাকা ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্যে পড়েছে। আর সমতল ভূমিতে তিস্তা অববাহিকার পরিমাণ চার হাজার ১০৮ বর্গকিলোমিটার। এর প্রায় অর্ধেক অংশ পড়েছে বাংলাদেশের সীমানায়। দুই দেশই তিস্তার পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সময়ে নদীর ওপর ও আশপাশে ব্যাপক অবকাঠামো তৈরি করেছে। ভারত এই মুহূর্তে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচ কার্যক্রমের জন্য তিস্তার পানি ব্যবহার করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ তিস্তার পানি ব্যবহার করছে শুধু পরিকল্পিত সেচ দেওয়ার কাজে।
এ ব্যাপারে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের স¤প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, কৃষকদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবার সেচ দিতে হবে। ফলে কৃষকদের হেক্টরপ্রতি বাড়তি ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। বর্তমানে সেচের জন্য পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ কিউসেক পানি। সামনে পানি প্রবাহ আরও কমবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।