Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৭শ’ কিলোমিটারে মাত্র ১৭টি বাতিযুক্ত বয়া ও ৭৫টি টাওয়ার বিকন

চাঁদপুরে বয়া-বিকন বাতির সঙ্কটে নৌ-পথ ঝুঁকিতে

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে : চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনাসহ শাখা নদীর ৭শ’ কিলোমিটার নৌ-পথে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যমও এ নৌ-পথ। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ নৌ-পথের বিভিন্ন স্থানে পথ নির্দেশক প্রয়োজনীয় বয়া ও বিকন বাতি না থাকায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহি লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌ-যান। অনুমান কিংবা ধারণার উপর ভর করে নৌ-যান পরিচালনা করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
৭শ’ কিলোমিটার নৌ-পথে মাত্র ১৭টি বাতিযুক্ত বয়া ও ৭৫টি টাওয়ার বিকন বাতি রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এর মধ্যে আবার অনেক বিকন ও বয়া বাতি দীর্ঘদিন যাবৎ বিকল হয়ে আছে। এতে করে নৌ-পথে চলতে গিয়ে নদীর নাব্যতা এবং পথের বিভিন্ন সমস্যা নির্ধারণে বিশেষ করে ডুবোচরের কারণে লঞ্চ চালকরা পড়েন বিপাকে। রাত্রিকালীন এ সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে।
শুধুমাত্র চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ নৌ-পথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলে অর্ধশত। এছাড়া চাঁদপুরের ষাটনল থেকে আজাদ বাজার, চাঁদপুর-হিজলা, চাঁদপুর-নন্দির বাজার, চাঁদপুর-মাদারীপুর, চাঁদপুর-মাওয়াসহ বেশকিছু ছোট-ছোট শাখা নদী রয়েছে এ নৌ পথে। বয়া ও বিকন বাতি না থাকায় মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় নৌযানকে।
নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ‘বয়া ও বিকন বাতি’ অনেক মূল্যবান জিনিস। বিদেশ থেকে আমদানি করা একটি বিকন বাতির দাম ৬০-৭০ হাজার টাকা। এসব বাতিগুলোর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ যেমন-সোলার, ব্যাটারি ও বাতি চুরি হয়ে যায়। সেই সাথে নদীতে প্রচুর পরিমাণে বলগেট চলছে। ঐসব বলগেটের ধাক্কায় বাতীসহ যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি মাসে নষ্ট হওয়া প্রায় ১০-১৫টি বয়া ও বিকন বাতি মেরামত করতে হয়।’
দাফতরিক সমস্যা তুলে ধরে তিনি আরো জানান, ‘আমাদের স্থানীয়ভাবে মাত্র ১হাজার টাকা খরচ করার অনুমতি রয়েছে, এর বেশি খরচ করতে হলে হেড অফিসের অনুমতির প্রয়োজন হয়। আর যেগুলো চুরি হয়ে যাচ্ছে, নতুন করে স্থাপনের জন্য হেড অফিসে লেখা-লেখি করে আনতে একটু দেরি হয়। বয়া ও বিকন বাতি চুরি হলে অথবা নষ্ট হয়ে গেলে নৌ-পথে নৌ-যান চলাচল সম্পূর্ণ অচল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে।’
নিরাপত্তাসহ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বয়া ও বিকন বাতির সোলার এবং যন্ত্রাংশ চুরি হওয়া এবং নৌ-যানের ধাক্কায় নষ্ট হয়ে যাওয়াই মূল কারন। অনেক সময় জেলেরা এসব বয়া ও বিকন বাতির প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।
এসব ঘটনা প্রতিরোধে নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি হলে কিছুটা হলেও চুরি প্রতিরোধ করা যাবে। তিনি আরো জানান, চাঁদপুর নৌ-সীমায় নাব্যতার কারণে ৪০ থেকে ৫০টি ডুবোচর রয়েছে। ডুবোচর নির্ধারণ করতে আমরা বাঁশ ব্যবহার করে থাকি। ঠিকাদারদের মাধ্যমে প্রতিমাসে ১শ’ ২০টি বাঁশ বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করছি। বিশেষ করে নদীর যে সব অংশে নাব্যতা সঙ্কট রয়েছে সে সব জায়গায় বাঁশ পুঁতে মার্কা দেয়া হয়। যাতে করে নৌ-যান চালকরা সঠিক পথ নির্ধারণ করতে পারে। ঐ বাঁশগুলিও চুরি হয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ