Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ৫২ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ফলের উৎপাদন

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) থেকে কবির হোসেনঃ কাপ্তাই উপজেলাস্থ রাইখালী পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে দেশ থেকে বিলুপ্ত প্রায় ৫২ প্রজাতির ফলের গাছ ও উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশীয় অনেক সুস্বাদু ফল ইতিমধ্যে সারাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও্র কাপ্তাই পাহাড়ী কৃষি গবের্ষণা কেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রায় এসব ফলের একটি স্বতন্ত্র বাগান গড়ে তুলা হয়েছে । ফলের উৎপাদনের পাশাপাশি বিলুপ্ত ফল গাছের নুতন ও উন্নত জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এসব গাছের চারা ও কলম সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, এক সময় বাংলাদেশের গ্রামঞ্চলে যেসব গ্রামীণ ফলজ ছিল এবং ফল এখন বিলুপ্ত প্রায়। যা আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। দেশীয় ফল সংরক্ষণ এবং এসব ফলের নতুন নতুন জাত দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে রাইখালী পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বিলুপ্ত দেশীয় ফলের জাত সংরক্ষণে গবেষণা কেন্দ্রে প্রায় ২ একর জায়গা জুড়ে ৫২প্রজাতীর দেশীয় বিলুপ্ত প্রায় ফলের একটি বিশেষায়িত বাগান গড়ে তোলা এবং কার্যক্রম ব্যবস্থা নিয়েছে। বিলুপ্ত প্রায় ফলসমুহর মধ্যে রয়েছে অরবড়ই, সাদা করমচা, কদবেল, ফলসা ফল, পিচফল, বিলা¤ি¦, রামবুটান, এবোকেডো, গোলাপজাম, জাম, চালতা, আমলকী, কেওয়া, জিলাপী ফল ইত্যাদি। সরেজমিনে পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে গেলে বিশেষায়িত বাগানে গেলে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম ফলের বাগান গুলো দেখান এবং এর বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় ফল সম্পর্কে অবহিত করেন। এর মধ্যে অনেক বিলুপ্ত ফল পাহাড়ী কেন্দ্রে ফল ধরে আছে। প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন,এর মধ্যে আমরা নতুনভাবে বীজ বিহীন বারি পেয়ারা-৪ উদ্ভাবন করেছি। যা দেশ তথা পার্বত্যঅঞ্চলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। দেশিয় বিলুপ্ত ফলগুলো আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যেও অংশ যা ক্রমে হারিয়ে যাচেছ। কিছু কিছু এলাকায় এসব ফলের উৎপাদন থাকলেও তা অতি নগন্য এবং এগুলোও ক্রমে বিলুপ্ত হচেছ।
এর ফলে বর্তমান প্রজন্মের শিশুরা দেশীয় অনেক ফলের চেহারা দেখা দুরে থাক নামও জানেনা। এই অবস্থায় বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় ফলের উৎপাদন ধরে রাখতে পাহাড়ী কৃষি গবেষণাকেন্দ্রে বিলুপ্ত ফলের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে এবং এসব ফলের উন্নত জাত উদ্ভাবন ও দেশ ব্যাপী এসব গাছের চারা,বীজ কলম ইত্যাদি ছড়িয়ে দিতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ সফল হলে আমাদের গ্রামে গ্রামে কিংবা শহরে বিত্তশালীদের বাড়ির বিলাসী আঙ্গিনায় দেশীয় ফলের গাছ আবার শোভা বর্ধন করবে। আজকের আধুনিক শহরে শিশুরাও এসব গ্রামীণ বিলুপ্ত প্রায় ফল ও এর স্বাদ সম্পর্কে জানতে পারবে। গবেষণা সাফল্য হিসাবে রাইখালী পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বাগানে এখন বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় ফলের উৎপাদন দেখতে প্রতিদিন দুর-দুরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ