বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পূর্ব গাজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুইজন শিক্ষক দিয়ে চলছে ছয়টি শ্রেণির পাঠদান। গত তিন বছর আগে বিদ্যালয়টির ভবন জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে খোলা মাঠেই চলছে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ থেকে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, আশেপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় পূর্ব গাজীপুর গ্রামের জনহিতৈষী ব্যক্তিরা ১৯৬৯ সালে বেসরকারী এই প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তুলেন। ১৯৯৪ সালে সরকারী উদ্যোগে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ করা হয়। পরে দীর্ঘ ২১ বছর পর ২০১৫ সালে বিদ্যালয়ের ভবন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। এ দিকে বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ১৯১ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত থাকলেও বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারি শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক প্রায় সময়ই বিদ্যালয়ের পাঠদান ছেড়ে উপজেলা সদরে যাতায়াতের ফলে একজন শিক্ষক স্কুলের দায়িত্বে থাকেন। ইতিপূর্বে বিদ্যালয়টিতে চারজন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও গত মাসে সোহেল রানা নামের সহকারী একজন শিক্ষক এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণে এবং নাসরিন আক্তার নামের অন্য এক শিক্ষক ডেপুটিশনে উপজেলার জয়নাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হয়ে চলে গেছেন। এরপর থেকেই মূলত পাঠদানে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আজুগীচাল গ্রামের তাহমিনা আক্তার জানান, এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক কম থাকায় সব ক্লাস প্রতিদিন হয় না। বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করে থাকে। অপর অভিভাবক শফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের আশপাশে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোন বিদ্যালয় না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য এ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি। কিন্তু বিদ্যালয় হতে ছেলেমেয়েরা তেমন কিছু অর্জন করতে না পারায় গৃহশিক্ষকই এখন তাদের ভরসা।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা নাসরিন জানান, মাঝে মধ্যে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের কাজে উপজেলা সদরে চলে যায় এতে একার পক্ষে বিদ্যালয় চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও দুইজনে ছয় শ্রেণির পাঠদানে অংশ নিতে হয়। এক সময়ে একাধিক শ্রেণীর পাঠদান থাকায় প্রতিটি শ্রেণীতে সঠিক সময় দিতে না পারায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের জন্য পাঠদান ব্যাহত হওয়ার কারনে সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ থেকে ভবন নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক স্বল্পতা। যা ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, বিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছি। কিন্তু এত যে সমস্যা তা জানা ছিল না।আর শিক্ষক স্বল্পতার কারনে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে তা আমি জানিনা আর আমাকে কেউ জানাইনী।
গাজীপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ইউসুফ খান জানান, বিদ্যালয়টিতে কেন শিক্ষক স্বল্পতা হল তার কারণ বের করে দ্রæত শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিতের লক্ষ্যে শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।