Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ই-বইয়ের বইমেলা

| প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এহসান আব্দুল্লাহ : বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান লেখক আইজ্যাক আসিমভ বলেছিলেন- ‘আগামীতে কাগজের বই বলে কিছুই থাকবে না। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কাগজের বই হয়ে যাবে ডিজিটাল।’ বইমেলা ঘুরে তার সত্যতাও পাওয়া গেল। না ভয়ের কিছু নেই কাগজের বই হারায়নি বরং বহাল তবিয়তেই প্রত্যেকটি স্টলে তারা নিজেদের নানা রংয়ের প্রচ্ছদে রাঙ্গিয়ে রাজত্ব করছে। তবে কাগজের বই না হারালেও মেলায় দর্শকদের একটি অংশ টেনে নিচ্ছে ই-বই। ই-বই কে প্রযুক্তির ভাষায় ই-বুক বলা হয়। ই-বুক গুলো সাধারণত পিডিএফ ফরম্যাটের ফাইলে হয়ে থাকে বা ই-রিডারের উপযুক্ত করে তৈরী হয়ে থাকে যা কোন পাঠক চাইলেই তার স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ বা তার ডেস্কটপ এর মাধ্যমে পড়তে পারে।
প্রযুক্তির এই অবাধ রাজত্বের সময়ে এস সকলেই এখন ব্যস্ত থাকেন স্মার্টফোনের ঐ ক্ষুদ্র স্ক্রিণের প্রতি। দরকারি কাজ বা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যস্ত থেকে সময় কাটানো মানুষগুলোর বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টে দেখবার ফুসরতই যেন মেলেনা। তাই এইসব প্রযুক্তি নির্ভর মানুষ সহ অন্যান্য সকলের জন্য বই পড়াকে সহজ ও সাবলীল করে দিতেই যাত্রা শুরু হয়েছিল ই-বইয়ের। ক্রমান্বয়ে প্রযুক্তিপ্রিয় তরুণদের মাঝে তা দ্রæতই জনপ্রিয়তা লাভ করে। ই-বইয়ের মাধ্যমে তারা নিজেদের পছন্দ মতো বই সর্বত্র পড়ার সুযোগ পাচেছন। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিশে^র বড় বড় লাইব্রেরীগুলোর ই-বুক সেকশন থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় বই পেয়ে যাচ্ছেন বিশে^র যে কোন প্রান্ত থেকে। ই-বইয়ের অন্যান্য সুবিধাগুলো হলো ই-বই হারিয়ে যাওয়াে বা ছোট বাচ্চাদের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবার কোন সম্ভাবনা নেই। ফলে ই-বইয়ের কদর বাড়তে থাকে।
লাইব্রেরির হাজারো বই থেকে পছন্দের বই খুঁজে বের করা যত কঠিন ই-বুকের অ্যাপস থেকে কয়েক ক্লিকে সেই বই বের করে পড়া যায় তত সহজে। অথচ কাগুজে বইয়ের ক্ষেত্রে সেটি বহনসহ নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখকদের বইসমূহ ই-বুক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাপসে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও অ্যাপসগুলোতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বইগুলো সাজানো রয়েছে। পাঠক নিজের পছন্দ অনুযায়ী কয়েক ক্লিকেই পছন্দের বই ডাউনলোড করতে পারেন।
এবারের বইমেলা ঘুরে দেখা যায় বেশকয়েকটি ই-বুকের স্টল রয়েছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে এগুলো হলো- বইঘর, বেঙ্গল ই-বই, সেই বই ইত্যাদি। মেলায় আসা অধিকাংশ তরুণ দর্শনার্থীরাই ভীড় করছেন এইসব স্টলগুলোতে।
স্টলগুলোতে ই-বুকের সেবাকর্মীরা তাদের নিজস্ব অ্যাপস সম্পর্কে ধারণা দেয়া থেকে অ্যাপস ডাউনলোড, পাঠকদের রেজিস্ট্রেশন করা ও বই ডাউনলোডের নিয়ম দেখানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দর্শনার্থীরা ই-বইয়ের সম্বন্ধে নানা তথ্য জানতে পারা সহ নিজেদের পছন্দ মতো এ্যাপ্স ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশনও করিয়ে নিচ্ছেন এনসব স্টল থেকে। মোবাইলের স্ক্রিণে চোখ বুলাচ্ছেন প্রিয় লেখকের বই খুজে। এসব অ্যাপসে গল্প, উপন্যাস, ছোট গল্প, কবিতা, রম্য রচনা, জীবনী, আত্মজীবনী, অনুবাদ, প্রবন্ধ, গবেষণাসহ সব ক্যাটাগরির বই খুঁজে পেতে পারেন পাঠক।
বইঘর এর রিপ্রেজেন্টার ইমানা আলম ইমু বলেন, তাদের অ্যাপসে ১ হাজারের অধিক বই পাওয়া যাচ্ছে। দু’টি মোবাইল অপরেটরের মোট ৬০ হাজার এর অধিক পাঠক রয়েছে তাদের। পাঠক চাইলে পছন্দ অনুযায়ী সেসব বই নির্ধারিত মূল্যের বিনিময়ে ডাউনলোড করে পড়তে পারেন। এছাড়াও বিনামূল্যে বিভিন্ন বই পড়ার সুযোগ রয়েছে অ্যাপসটির ব্যবহারকারীদের। তিনি জানান, তাদের অ্যাপসের বইগুলো সর্বনিন্ম ১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৫ টাকা মূল্যে কিনতে পারবে গ্রাহকরা।
সেই বইয়ের সূত্রে জানা গেছে, তাদের সংরক্ষণে রয়েছে ১ হাজারেরও বেশি বই। গ্রন্থমেলা উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়ে গ্রাহকরা বই কিনতে পারছেন। এছাড়াও ক্লাসিক বইগুলো বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। একজন ইউজার ডেবিট কার্ড, মাস্টারকার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ভিসা কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট করে বই কিনতে ও পড়তে পারবে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র কাউছার আহমেদ বলেন, ই-বই আসলে আমাদের পড়াশোনার জগৎকে আরো সহজলভ্য করে তুলেছে। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আমার আবেদন থাকবে সরকার যাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বইগুলি আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ই-বই আকারে প্রকাশ করে বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে পড়ার সুযোগ দেয়। কাউসার বলেন, দেশের দুরবর্তী অঞ্চলের কোন ছাত্রের পক্ষে এখন বইমেলায় এসে বা রাজধানীতে এসে তার দরকারি বইটি সংগ্রহ করার সুযোগ নাও মিলতে পারে সে ক্ষেত্রে ইতিহাস বা অন্যান্য মৌলিক বইগুলোকে ই-বুক আকারে প্রকাশ করা দরকার। মেলায় গতকাল নতুন বই এসেছে ১৩৮টি। আজ বিকেল ৪:০০টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে কবি আবদুল গফ্ফার দত্ত চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শুভেন্দু ইমাম। আলোচনায় অংশ নেবেন আলী মোস্তাফা চৌধুরী, জফির সেতু ও মোস্তাক আহমাদ দীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ভীষ্মদেব চৌধুরী।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বইমেলা

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ