Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৮ বছরে ৪ হাজার কেজি স্বর্ণ আটক

| প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে (২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত) ৪ হাজার ১৩০ কেজি ৪২৫ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়েছে। এসব সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থায়ীভাবে জমা করা হয়েছে। পরে এসব সোনা সংশ্লিষ্ট মামলা নিষ্পত্তি সাপেক্ষে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করা হবে। গতকাল রোববার সংসদে এম এ আউয়ালের এমপির প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ৬৬৬.৯২৯ কেজি, ঢাকা কাস্টম হাউস ১৬৬৮.৫৬ কেজি, ঢাকা কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ১৭৪৮.৮৩২ কেজি, সিলেট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ১৬.১১ কেজি, চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ২৩.২২০ কেজি, রংপুর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ৬.২৬৬ কেজি এবং বেনাপোল কাস্টম হাউজ দশমিক ৫০৮ কেজি সোনা জব্দ করেছে।
তিনি বলেন, (২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত) দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে আনা বিপুল পরিমাণ সোনার বার ও বিভিন্ন রকম সোনার অলঙ্কার জব্দ করে পুলিশ। দেশের থানা গুলোতে রুজুকৃত মামলার হিসাব অনুযায়ী জব্দকৃত এসব সোনার ওজন প্রায় ১ হাজার ৭১৮ কেজি ৭৮ গ্রাম। আটককৃত এসব সোনা বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট, কোর্ট মালখানা, জেলা প্রশাসনের ট্রেজারি, কাস্টমসের মূল্যবান গুদাম এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে মালিকের জিম্মায় আছে। মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত এলাকা দিয়ে সোনা অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম পরিচালনা, ব্যাপক তল্লাশি এবং নজরদারি বৃদ্ধির ফলে সীমান্ত এলাকায় ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত২০৩.৭৫৬ কেজি সোনা জব্দ করা হয়। ২০১১ সালে ১.১৭৩ কেজি, ২০১২ সালে ৪.৭২৯ কেজি, ২০১৩ সালে ৫.৬৭৭ কেজি, ২০১৪ সালে ৪২.০০৭ কেজি, ২০১৫ সালে ২৭.৯৭৮ কেজি, ২০১৬ সালে ৩৯.৭৯৬ কেজি, ২০১৭ সালে ৮২.৩৯৬ কেজি সোনা জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত সোনা নিয়ম অনুযায়ী থানা/কাস্টমস অফিসে জমা করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে এসংক্রান্ত সম্পুরক প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়ির বহরের সামনে থেকে গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে অতর্কিতে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়ে পুলিশের দুটি রাইফেল ভেঙ্গে ফেলাসহ প্রিজন ভ্যান ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে হামলাকারীদের সনাক্ত করা হচ্ছে, হামলাকারী সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা হবে। হেফাজতের আল্লামা শফি আহমদের সঙ্গে সাক্ষাত প্রসঙ্গে জাসদের নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সারা বাংলাদেশের আলেম সমাজের অত্যন্ত সম্মানীয় ব্যক্তি হচ্ছেন আল্লামা শফি আহমেদ। সবাই তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখেন। চট্টগ্রামে সরকারি কাজে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে অসুস্থ্যতার খবর জানতে পেরেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই। এখানে অন্য কিছু নেই।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক দুই খুনীর ১৯ একর জমি বাজেয়াপ্ত
সরকার দলীয় সদস্য মো. আবদুল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনী লে. কর্ণেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদের মালিকানাধীন ১৬ দশমিক ৯৪ একর এবং আরেক পলাতক খুনী রাশেদ চৌধুরীর সোয়া এক একর মিলিয়ে মোট ১৯ একর ভূমি বাজেয়াপ্ত করে খাস খতিয়ানভ‚ক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, কানাডায় অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর খুনী নূর চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত খুনী মেজর (অব.) আবু মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরীকে দেশ দুটি থেকে ফেরত আনার লক্ষ্যে নিয়োগকৃত ’ল’ ফার্মের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অন্যান্য পলাতক আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। সরকারী দলের বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৬ সালের জুন-অক্টোবর সময়কালে তদানিন্তন জিয়াউর রহমান সরকার কতিপয় ঘাতকের চাকুরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে বিভিন্ন ক‚টনৈতিক পদমর্যাদায় বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে নিয়োগ এবং পরবর্তীতে পদোন্নতিও প্রদান করে।
মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া
জাতীয় পার্টির সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য চোরাচালান প্রতিরোধ, বিভিন্ন প্রকার সীমান্ত অপরাধ দমন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় শাহপরীর দ্বীপ হতে ২৭১ কিলোমিটার রিং রোডসহ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারী দলের মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, মায়ানমার হতে যে সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে তারা যাতে টেকনাফের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সরকার থেকে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে একটি সুনির্দিষ্ট ও সুপরিসর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ১১টি চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন চলাচল মনিটরিং করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ