Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

চাষিরা কোমর বেঁধে মাঠে

চলতি মৌসুমে বোরোতে ১ কোটি ৯১ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের টার্গেট

| প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা অতিমাত্রায় ঝুকেছেন ধান আবাদে। গম, ডাল ও তেলজাতীয় ফসল আবাদ এবার খুবই কম হয়েছে। সেইসব জমি কনভার্ট হচ্ছে ধান আবাদে। সারাদেশের মাঠে মাঠে কৃষকরা এখন বড়ই ব্যতিব্যস্ত বোরো আবাদে। কৃষি মন্ত্রণালয়ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারনে গত বোরো ও রোপা আমনের উৎপাদন ঘাটতি পুরণে বোরো আবাদ এরিয়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৪৭লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৯১লাখ ৬৩হাজার ৩শ’ ৫ মেট্রিক টন চাল। যদিও আশা করা হচ্ছে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো ৫০হাজার হেক্টর জমিতে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮লাখ হেক্টরে বোরো আবাদ হতে পারে। তাতে চাল উৎপাদন আরো বাড়বে। তবে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের ফিল্ড সার্ভিস উইং এর পরিচালক মোঃ আব্দুল হান্নান গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, গতবারের ৪৮ লাখ হেক্টরের চেয়ে আবাদ এবার একটু লক্ষ্যমাত্রা কম করা হচ্ছে। তার মতে, সেচ খরচ লাগে না এমন ফসলের দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এখনো একমাস আবাদ মৌসুম বাকি। দেখা যাক কি পরিস্থিতি দাঁড়ায়। মাঠপর্যায়ের একজন কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপরের কর্মকর্তা কাগজ কলমের হিসাবে যাই বলুক না কেন, মাঠচিত্র বলে দিচ্ছে ধান ও চালের মূল্যবৃদ্ধির কারনে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ বাড়ছে। কৃষকদের বোরো আবাদের উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে আবাদ হতে পারে। তবে একথাও সত্য যে, আবাদের ভরা মৌসুমে সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না।
সুত্র জানায়, এবার বোরো আবাদ ও উৎপাদনে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। সেচনির্ভর বোরো ধান আবাদের ক্ষেত্রে কোনরূপ অসুবিধা না হয়, সে ব্যাপারে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ কৃষি বিশেষজ্ঞদের। বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, স্বাচ্ছন্দ্য অনায়াস উদ্দীপনা ও উদ্যম নিয়ে বোরো চাষীরা কোথাও বীজতলা পরিচর্যা করছে। আবার কোথাও চারা রোপন করছে। আবাদ প্রায় শেষের দিকে। সংশিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। কৃষকদের সমস্যা সমাধানেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফলে আশা করা হচ্ছে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হবে। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বোরো আবাদে সেচের জন্য সারা দেশে প্রায় ১৪ লাখ ডিজেলচালিত ও প্রায় আড়াই লাখ বিদ্যুৎচালিত গভীর ও অগভীর নলকুপ ব্যবহার হবে। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার নজর দেওয়ার কারনে বোরো বীজের সংকট হয়নি। বীজতলার অবস্থাও ভালো ছিল। চারা দেখলেই বোঝা যায় যে ধান কেমন হবে। সুত্র জানায়, বিএডিসি’র হাইব্রিড বীজের ব্যাপক চাহিদা ছিল। বেশী ফলনের আশায় কৃষকরা বেশী বেশী হাইব্রিড জাতের ধান আবাদের দিকে ঝুকেছে। ফলে এবার বোরো আবাদ ও উৎপাদন ভালো হবার প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সুত্র উল্লেখ করেছে।
কৃষকদের কথা, যারা সেচ যন্ত্রের মালিক তারা যাতে সেচের পানির দাম ইচ্ছা মাফিক আদায় করতে না পারে, সেদিকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। কৃষকের কাছে শুষ্ক মৌসুম বিপজ্জনক। কারণ নদ-নদী, খাল-বিলে পানি শূন্যতার সৃষ্টি হয়। ফসল আবাদ ও উৎপাদন হয়ে পড়ে ঝুকিপুর্ণ। আগের মতো সেউতি ও দোনা পদ্ধতিতে চাষাবাদের কোন সুযোগ নেই। এখন সম্পুর্ণ নির্ভর করতে হয় মাটিরতলার পানি সম্পদের ওপর। ব্যবহার করতে হয় সেচযন্ত্র। বিশেষ করে বোরো আবাদ ও উৎপাদন পুরোপুরি সেচনির্ভর। সেজন্য আবাদ খরচও বেশী হয়। ঢাকা খামারবাড়ীর কৃষি স¤প্রসারণ অধিপ্তরের পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেচনির্ভর বোরো আবাদ নিয়ে কিছুটা চিন্তাগ্রস্ত রয়েছেন কৃষকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাষি

১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ ডিসেম্বর, ২০২১
১৮ অক্টোবর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ