Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সেতুতে গাড়ি উঠলেই কাঁপতে থাকে

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে এম বেলাল উদ্দিন : চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ হলদিয়া আমিরহাট খড়¯্রােত সর্তাখালের ব্রীজটি নড়েবড়ে। খুবই ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার করছে যানবাহন। সরেজমিন গিয়ে জানাগেছে ১৯৯৫ সালের ৩০ জুন তৎকালীন বিএনপি সরকারের মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন সেতুটি। পরবর্তী ১৯৯৬ সালে কাজ শেষের পর আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই যাত্রীসাধারন এবং যানবাহন চলাচল করতে থাকে ব্রীজটি দিয়ে। সে সময়কার রাউজান ও ফটিকছড়ির মানুষের অন্যতম দাবীর প্রেক্ষিতে ব্রীজটি নির্মান করা হলেও কাজের মান নিয়ে সে সময় থেকে প্রশ্ন বিদ্ধছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে। ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ব্রীজটি ২২ বছরের মাথায় নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে সে সময়কার প্রকল্প পরিচালক সহ সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ২৭০ ফুট দীর্ঘ এবং মাত্র ১০ ফুট প্রস্তের এ ব্রীজটির বর্তমান অবস্থা খুবই করুন হাল। নটবল্টু অনেক খুলে পড়ে গেছে,এমনকি ব্রীজের মুল মধ্যকার পিলারটি বেইজের মাটি সড়ে যাওয়ায় মারাতœক ঝুঁকিতে রয়েছে ব্রীজটি। ব্রীজ নির্মানের সময় প্রশস্থ কম করায় একটি বড় গাড়ি ব্রীজে উঠলে আরেকটি দাড়িয়ে থাকতে হয় অনেক্ষন। ব্রীজ নির্মানকালীন কয়েক বছর পর হতে যানবাহন চলচল বেড়ে গেলে ব্রীজটির উপর চাপ পড়তে থাকে। প্রতিনিয়ত শত শত যানবাহন চলাচল করলেও সে অনুপাতে নির্মানের পর হতে অধ্যবদি কোন ধরনের সংস্কার কিংবা মেরামত নাট বল্টু চেক কিছু করা হয়নি। ভারি গাড়ি উঠার সাথে সাথে কাঁপতে থাকে ব্রীজটি। অধিক ঝুকিপূর্ণ ব্রীজটি দিয়ে গাড়ি চলাচলের পাশাপাশি শত শত মানুষ বিশেষ করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব, কেজি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা পায়ে হেটে চলাচল করে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন ব্রীজটিতে পায়ে হেটে পারাপারের জন্য (এপ্রোচ) সংযোগ জায়গা রাখা হয়নি। দুইদিক থেকে অনেক সময় গাড়ী উঠে পড়লে পায়ে হাটা লোকদের ভয়ে বুক কাপঁতে থাকে। এমনকি দীর্ঘ যানজটও হয়ে যায় ব্রীজ এলাকায়। মাইজভান্ডার দরবার শরীফে যাতায়তের জন্য শত শত ভক্ত অনুরক্তরা এ ব্রীজ পার হয়ে রাউজান থেকে দরবারে জিয়ারতে যান। দক্ষিন ফটিকছড়ি ও উত্তর রাউজানের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সর্তা ব্রীজটি সর্ম্পকে জানতে চাইলে ব্রীজ এলাকার পাশের বাড়ীর বাসিন্দা রাজনীতিবীদ এস এম বাবর জানান,রাউজানের মাননীয় এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে সরেজমিন নিয়ে এসে আমরা উনাকে অবহিত করেছিলাম। তিনি কর্তৃপক্ষকে ব্রীজটির জন্য যা-যা করার দরকার তা লিখে ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। এস এম বাবর আরো বলেন, আমার মেয়ে বাঁধন আমির হাট হযরত এয়াছিন শাহ্ ইনিষ্টিটিউটে (কেজি স্কুলে) পড়াকালীন সময়ে ২০০৪ সালে ব্রীজ থেকে খালে পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয়রা দ্রæত উদ্ধার করে আমার মেয়েকে বাঁচিয়েছে। এ ধরনের আরো যে কত ঘটনা ঘটেছে তা বড় একটি তালিকা হবে। তার মতে ব্রীজটি খুবই নড়বড়ে হয়ে উঠেছে।
বেইজের মাটি সরে যাওয়া মানে মূল জায়গাতে ফাটল লেগেছে। ব্রীজটি মাত্র ১০ ফুট প্রস্তের, এটির পরিধি ডাবল করে সংস্কার করাই এলাকার মানুষের গণদাবী। গতকাল ২৯ জানুয়ারী সকাল দশটা নাগাদ ব্রীজের উপরে একটি ভারি ট্রাক সামনের এক ঠেলাগাড়িওলাকে ধাক্কাদিলে ঠেলাগাড়ী পাশের র‌্যালীংয়ের সাথে লেগে গেলেও ঠেলা চালক ভেল্লয়ে খালে পড়ে যায়। সে সময় দুদিকে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। এ প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আনোয়ার হোসেন জানান,আমরা ১২টি বড় ব্রীজের প্রস্তাব এবং ছোট বড় ৪৭টি পুল কালভার্ট যেগুলো ২০১৭ সালের জুন-জুলাই মাসের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল সে গুলোর প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তিনি জানান, ২য় পর্যায়ের প্রস্তাবে আমিরহাট সর্তা ব্রীজের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে। সব মিলিয়ে এলাকার মানুষ ও সর্বস্তরের যাত্রী সাধারনের দাবী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম আমিরহাট সর্তা ব্রীজের পাশে বড় আকারের একটি ব্রীজ নির্মান করা হওক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ