রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মাগুরা জেলায় উচ্চফলনশীল বারি-৯ ও টোরি-৭, বারি-১৪ ও বারি-১৫ জাতের সরিষার আবাদ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগালেও গত বছরের তুলনায় সরিষার চাষ এ বছর অর্ধেকে নেমে এসেছে। মৌসুমের শুরুতে কৃষি বিভাগ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এই অধিক ফলনশীল সরিষা আবাদে উদ্বুদ্ধ করেই দায়িত্ব শেষ করে। এতে সরিষা আবাদে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ফিরে আসবে বলে আশা করেছিল কৃষি বিভাগ কিন্তু সে আশা-নিরাশায় পরিণত হয়েছে। ফলে চলতি মৌসুমে জেলার চারটি উপজেলায় সরিষার চাষ লক্ষ্য মাত্রা পূরণ হচ্ছে না। মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রাজিব হাসান জানান, চলতি মৌসুমে জেলার সদর, শালিখা, শ্রীপুর ও মহাম্মদপুর উপজেলায় মোট ছয় হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। যেখানে গত বছর জমিতে সরিষা আবাদের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮৬০ হেক্টর। এ বছর মাগুরা সদরে দুই হাজার ১৫০, মহাম্মদপুর ৬০৫, শ্রীপুর ৫৫০ ও শালিখা উপজেলায় তিন হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এ বছর জেলায় সাত হাজার ৪৬৬ টন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ, যা গত বছরের চেয়ে অর্ধেক। এ ছাড়াও সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাড়তি আয় করার কথা শতাধিক মধুচাষিদের। কিন্তু মাগুরা জেলার চারটি উপজেলায় এ বছর সরিষা চাষ ভালো না হওয়ায় এলাকার মধুচাষিরা পার্শ্ববর্তী জেলাতে ভিড় জমিয়েছেন। সাধারণত মাগুরার কৃষকরা স্থানীয় জাতের পাশাপাশি বারি-৯ ও টোরি-৭ জাতের সরিষার আবাদই বেশি করতেন। সময় বেশি লাগায় ও ফলন কম হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে উৎসাহ হারাচ্ছিলেন। এ দুটি জাতের সরিষা মাত্র ৬৫-৭৫ দিনে সরিষা ঘরে তোলা গেলেও চলতি মৌসুমের শুরুতে কৃষি বিভাগ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৫ সরিষা আবাদে উদ্বুদ্ধ করলেও পরবর্তীতে আর কোনো খোঁজ না রাখায় মাগুরার কৃষকরা সরিষা আবাদে অনেকটা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। যেখানে প্রতি হেক্টরে দেড় হাজার কেজি সরিষার ফলন হয়। সেখানে সরিষা কেটে আবার ওই জমিতে বোরোর আবাদ করছেন কৃষকরা। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে। আঠারখাদা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজির আহম্মদ জানান, আমন ধান কাটার পর পড়ে থাকা জমিতে রিলে পদ্ধতিতে (জমি চাষ না করে) সরিষার চাষ মাগুরাতে এখন বেশ জনপ্রিয়। এ পদ্ধতিতে সরিষা চাষে উৎপাদন খরচ খুবই কম। বছর অনেক কৃষকেরা মাগুরাতে এ পদ্ধতির মাধ্যমে সরিষা চাষ করছেন। মাগুরা সদর উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের সরিষা চাষি বিনয় সরকার, দিপক সরকার, লক্ষণ বিশ্বাস, বিদ্যুৎ সরকার , নারায়ণ বিশ্বাস, হাজীপুরের আবজাল, কুকনা গ্রামের পলাশ ঘোষ, শালিখার ভাটোয়াইল গ্রামের রেজাউল ইসলামসহ আরো অনেক কৃষক বলেন, দেশি জাতের সরিষা আবাদ করে একরে ৮-১০ মণ ফলন পাওয়া যেত। সেখানে উন্নত জাতের সরিষা আবাদে প্রতি একরে পাওয় যায় ১৪-১৫ মণ। উৎপাদন খরচও আগের চেয়ে অনেক কম। কিন্তু সরিষা চাষ কম হওয়ায় তাদের সে আশা পূরণ হচ্ছেনা। মাগুরা সদর উপজেলার আঠাখাদা গ্রামের রণদা বিশ্বাস বলেন, চলতি মৌসুমে দুই একর জমিতে উচ্চফলনশীল সরিষার আবাদ করে ৪০-৪৫ মণ সরিষা ঘরে তুলতে পারবেন বলে জানান।
মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি র্কমকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় স্থানীয় জাতের তুলনায় উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা বেশি চাষ করছেন কৃষকরা। সরিষা চাষের জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। এ ছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকলে সরিষার ভালো ফলন পাওয়ার পাশাপাশি ভালো দামও পাবেন বলে তিনি আশা করেন।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের জেলা কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম সাহা জানান, অসময়ে বৃষ্টি ও শীত আসতে দেরি হওয়ায় এ বছর মাগুরার কৃষকরা গত বছরের তুলনায় সরিষা চাষ খুব কম করেছেন। শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন জানান, গত ১৯ থেকে ২১ অক্টোবর হঠাৎ ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে সরিষা ও মশুরসহ অন্যান্য ফসলের জমিতে জো না আশার কারণে এ বছর মশুরি ও সরিষার আবাদ খুব কম হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।