Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ফরিদপুরের নদী গবেষণার সাবেক ভারপ্রাপ্ত ডিজির অনিয়মের অভিযোগ দাখিল দুদকে

| প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা : ফরিদপুর নদী গবেষণার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহা পরিচালকের (বর্তমানে পরিচালক- হাইড্রোলিক রিসার্চ) ০৯/০৮/২০১৬ হতে ১৩/১১/২০১৭ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত ডিজি থাকা অবস্থায় সীমাহীন দুর্নীতি, অনিময়, স্বজনপ্রীতি, সরকারের রাজস্ব ক্ষতি আত্মসাতের অভিযোগ দুদক, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী- পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়, সংসদ সদস্য- ফরিদপুর-০২, চেয়ারম্যান-জেলা পরিষদ, ফরিদপুর, সিনিয়র সচিব- পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়, সচিব- নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়সহ সাংবাদিকদের কাছে দাখিল করেছেন নদী গবেষণা ইন্সটিটিউটের একাধিক কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।
জানা যায়, মোঃ লুৎফর রহমান একই সাথে নগই সাথে এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক, নগইএর হাইড্রোলিক রিসার্চ পরিদপ্তরের পরিচালক এবং ব্যাম্বো ব্যান্ডেলিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হয়ে নিজ পরিবারের ঠিকাদারী লাইসেন্সে কাজ দেয়ার অপচেষ্টা হিসেবে প্রায়ই নগই টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটির (ঞঊঈ) উপর অবৈধ চাপ প্রয়োগ করতেন। (ঞঊঈ) সভায় অযোগ্য বিবেচিত ঠিকাদারের পক্ষে নিজ উদ্দেশ্য সাধণের জন্য আইনজীবীর নিকট পত্র প্রেরণ করেন। তিনি স্বউদ্যোগেই আইনজীবীর নিকট হতে ঠিকাদারের পক্ষে সুপারিশ এনে ঠিকাদারকে কাজ দেয়ার জন্য নগই (ঞঊঈ) কে চাপ প্রয়োগ করেন। এমনকি পরিবারের ঠিকাদারী লাইসেন্সে কাজ পাওয়ার জন্য অবৈধ ভাবে সিডিউলে পরিবর্তন আনেন। এভাবেই ব্যাম্বো ব্যান্ডেলিং প্রকল্পে তিনি নামে বেনামে লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজ নিতে এবং তার এধরণের অবৈধ কাজের অন্যতম সহযোগি জনাব উমর ফারুকের মাধঘ্যমে হিসাব শাখা থেকে বিল উত্তোলন করে নিতেন। গত ২৯/০৬/ ২০১৭ তারিখে মোঃ উমর ফারুক কর্তৃক ঠিকাদারকে ৩৬,২০,৩৩৫/- টাকার একটি চেক প্রদান করেন। তিনি নগই এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোঃ লুৎফর রহমান মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা সত্বেও ঞওঅঘঝঐও (বাংলাদেশ) কোং লিমিটেড নামক চায়না হারবাল কোম্পানির অবৈধ মাল্টিলেভেল ব্যবসার এজেন্ট হিসাবে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন। যা নগই কর্মকর্তা কর্মচারী প্রবিধানমালা ১৯৯৮এর বিধি ৩৮এর সম্পূর্ণ পরিপস্থি। এমনকি তিনি মহাপরিচালক হিসাবে প্রভাব বিস্তার করে অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উক্ত কোম্পানীর প্রশিক্ষণ, কোম্পানীতে যোগদান এবং কোম্পানীর মালামাল ক্রয় ও বিক্রয় করতে বাধ্য করেন। এমনকি বিগত ২৩/০৫/২০১৭ এবং ২৭/০৫/২০১৭ তারিখে উক্ত ঞওঅঘঝঐও (বাংলাদেশ) কোং লিমিটেড থেকে নগইর ঢাকা ও ফরিদপুরের অফিসে পানি পরিশোধনের দুইটি মেশিন দাপ্তরিক অর্থে ক্রয় করেন। মোঃ লুৎফর রহমানের সকল দুর্নীতির একান্ত সঙ্গী মোঃ উমর ফারুক সিরাজগঞ্জে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রেষণে কর্মরত ছিলেন। প্রেষণে থাকা অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে তাকে প্রেষণাদেশ বাতিল করে তাকে নগইতে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয় এবং তার প্রেষণ প্রত্যাহারের পর ০৮/১১/২০১০ তারিখে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিরাজগঞ্জ হতে তাকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। কিন্তু ছাড়পত্র প্রদানের পর দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর তিনি নদী গবেষণা ইন্সটিটিউটে যোগদান না করা সত্বেও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোঃ লুৎফর রহমান, ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ আবুল এহসান মিয়ার যোগসাজশে উক্ত উমর ফারুকের সাথে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ০৬/০৯/২০১৬ তারিখে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে অবৈধ চুক্তি করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বিধি বর্হিভুত ভাবে গত ১৫/০২/২০১৭ তারিখে উমর ফারুককে চাকুরিতে নিয়মিত করে ১৩ লক্ষ টাকার বকেয়া বেতন প্রদান করেন।
৪। মোঃ লুৎফর রহমানের দূর্নীতির ঘনিষ্ট সহযোগি এবং নগইএর মৃত্তিকা কারিগর মোঃ উমর ফারুককে দূর্নীতির কাজে সহযোগিতা করার জন্য নিজ পরিদপ্তর জিওটেকনিক্যাল রিসার্চ পরিদপ্তরা হতে হাইড্রোলিক রিসার্চ পরিদপ্তরে বদলী করে মডেল স্ট্যাডি ও ব্যাম্বো ব্যান্ডেলিং প্রকল্পে সম্পৃক্ত করে ব্যান্ডেডিং প্রকল্পের টেন্ডারবাজি এবং অবৈধ অর্থের লেনদেনের কাজে লিপ্ত রাখে।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত জিডি ল,ুৎফর রহমানকে বিভিন্ন দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গত ১৩-১১-২০১৭ইং তারিখে মন্ত্রনালয় ভারাপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে তার পূর্বের দায়িত্ব পরিচালক হাইড্রোলিক রির্সাচে ফেরত পাঠানো হয়। ইতিপূর্বে লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারি সহ বিভিন্ন অভিযোগ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নদী গবেষনা ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তা, কর্মচারীরার জানান, লুৎফর রহমান চাকুরিতে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত নদী গবেষণা ইন্সটিটিউটে অফিস করেন না। বেশীরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন।
নদী গবেষণার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ডিজি অরুন চন্দ্র মহোত্তম এ বিষয়ে জানান, লুৎফর রহমানের অনিয়মের বিষয়গুলি আমি মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। এ বিষয়ে সাবেক ডিজি লূৎফর রহমান জানান, আমার বিষয়ে অভিযোগগুলি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কিছু কুচক্রীমহল আমার বিরুদ্ধে কুচ্ছা রটাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ