Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হালতি বিলে পানিবদ্ধতায় হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ শঙ্কায়

| প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাটোর জেলা সংবাদদাতা : গত বন্যায় ৯৩০ হেক্টর জমির আমন ধান ডুবে ১১ কোটির টাকার ক্ষতির পর এবার আবারও নাটোরের নলডাঙ্গা উপপোনির হালতি বিলে পানিবদ্ধতায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান চাষ নিয়ে শষ্কায় পড়েছে কৃষক। পানি নিষ্কাশনের হালতি বিলের একমাত্র খাল দখল করে ভরাট করায় পানি নিষ্কশনের পথ বন্ধ হওয়ায় এ পানিদ্ধতার সৃষ্টি হয় প্রতিবছর। গত দুই বছর আগে ভুক্তভোগী কৃষকরা নিজ উদ্যেগে এবং স্থানীয় উপপোনি প্রশসন দুই মৌসুমে খাল সংস্কার করে পানিবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন করার ব্যবস্থা করে বোরো ধান চাষ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। এবার এ পানিবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে এর প্রতিকার না পেয়ে ৮ গ্রামের শত শত ভুক্তভোগি কৃষক হতাশায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভরাট করে দখল করা ২০ কিলোমিটার খাল উদ্ধার করে সংস্কার না করলে পানিবদ্ধতা নিরসনে স্বায়ী সমাধান হবে না বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
প্রতিবছর এ সময় পানিবদ্ধতা নিরসন করা নিয়ে দুচিন্তায় ক্লান্ত ভুক্তভোগী এসব কৃষকরা অভিযোগ করেন, হালতি বিলের খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটি অবৈধভাবে ভরাট করে দখল এবং পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে মাছ শিকার করায় পানিবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবার করা যাচ্ছে না।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়,১৯৮১ সালে উপজেলার হালতি বিলে ব্রক্ষপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর হতে মোহনপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জিয়া খাল নামে একটি খাল খনন হয়েছিল। সংস্কারের অভাবে সেই খাল আজ অবৈধ দখল ও ভরাট হয়ে বিলুপ্তির পথে যাওয়ায় প্রতিবছর সৃষ্ঠ পানিবদ্ধতায় হালতি বিলের প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ইরি-বোরো চাষ নিয়ে শষ্কায় পড়ে। বিশেষ করে খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জিয়া খালের উৎস মুখসহ এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবৈধভাবে ভরাট করে দখল ও পানি নিষ্কাশরে সব পথ আটকে মাছ শিকার করায় খালটি দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।এতেউপজেলার বাঁঁশিলা, সোনাপাতিল, তেঘরিয়া, মাধনগর, খোলাবাড়িয়া, হালতি, পাটুলসহ ৮টি গ্রামের শত শত কৃষককের প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে পানিবদ্ধতার কারনে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে বোরো ধান চাষ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে। গত দুই বছর আগে ভুক্তভোগী কৃষকরা নিজ উদ্যেগে খাল সংস্কার করে পানিবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন করে বোরো ধান চাষ করেছিল। গত বছর স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ভরাট করে দখল করা খালটি উদ্ধার করে খনন করে পানিবদ্ধতা নিরসনের উদ্দ্যেগ নিলেও শেষ হওয়ার আগেই রহস্যজনক ভাবে সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।এবার এ পরিস্থিতিতে পানিবদ্ধতা নিরসনে ভুক্তভোগি কৃষকরা স্থানীয় সাংসদ,উপপোনি কৃষি অফিস,পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ইউএনও কাছে প্রতিকার চেয়েও কোন কাজ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে। তেঘরিয়া গ্রামের কৃষক সাইদুর, সিদ্দিকুর রহমান, আতিকুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম জানান , খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জিয়া খাল অবৈধ দখল করে ভরাট করায় হালতি বিলের নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে ফলে আমরা সময়মত ধান লাগাতে পারি না । আর বোরো ধান বিলম্বে লাগালে ফলন বিপর্যয় ঘটার আশংকা থাকে। তেঘড়িয়া গ্রামের কৃষক ফরমাজুল ইসলাম,সাইফুল ইসলাম,মসলেম উদ্দিন জানান, দুই বছর আগে নিজ উদ্দ্যেগে ও গত বছর প্রশাসনের উদ্দ্যেগে পানিবদ্ধতা নিরসনে খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটি সংস্কার করে পানি নিঃস্কাশন করে বোরো আবাদ করা হয়েছিল।কিন্ত এবার ওই খালটি অবৈধভাবে দখল করে ভরাট করে মাছ শিকার করায় পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা এবার করা যাচ্ছে না ফলে এবার আমরা বোরো ধান লাগাতে পারবো কি না নিশ্চিত হতে পারছি না।কৃষক মোজ্জামেল হক ও গফুর মন্ডল জানান,হালতি বিলে প্রতি বছরের সমস্যা পানিবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের জন্য কৃষিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, কত হেক্টর বোরো জমিতে পানিবদ্ধতা তা নিশ্চিত করে বলতে না পারলেও প্রতিবছর হালতি বিলে জলবদ্ধতার কারনে কৃষকদের দেরিতে বোরো ধান লাগাতে হয়। নলডাঙ্গা ইউএনও রেজা হাসান জানান,হালতি বিলে পানিবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড কে খালটি সংস্কার করে সমস্যা সমাধনের জন্য বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ