পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720188430](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : পেঁয়াজের উৎপাদন, আমদানি ও বিপণন ব্যবস্থায় কিংবা এর দাম বৃদ্ধির পেছনে কোনো প্রকার সিন্ডিকেট কাজ করেনি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে মো: রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২২ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন। স্থানীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাতকরণ ঘাটতি বাদে প্রায় ১৭ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে। চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের উৎপাদন ঘাটতি প্রায় ৭ লাখ মেট্রিক টন। এই ঘাটতি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানির মূল উৎস হচ্ছে ভারত। মে-জুন মাসে ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে অনাকাক্সিক্ষত বন্যার কারণে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে পেঁয়াজ রফতানিকারক দেশ ভারত প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রফতানি মূল্য ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। এই মূল্যে বাংলাদেশী আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি করায় স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া বাংলাদেশেও এ বছর দীর্ঘমেয়াদী বন্যার কারণে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকায় স্থানীয়ভাবে মজুদ করা পেঁয়াজের একটি বৃহৎ অংশ নষ্ট হয়ে যায়, যা স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
সরকারি দলের সদস্য মো: বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত বাজার মনিটরিং টিম নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার পরিদর্শন করে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য, মজুদ ও সরবরাহে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তোফায়েল আহমেদ জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এর দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন ২টি করে মোট ১৪টি টিম ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাজারমূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিটি টিমে কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উত্তর-দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং ঢাকা জেলা প্রশাসনের সদস্যসহ মোট ১১ জন করে সদস্য রয়েছে। তিনি বলেন, বাজার মনিটরিং টিমের কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য বাণিজ্য সচিবের সভাপতিত্বে বাজার মনিটরিং টিমের দলনেতাসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়, দপ্তর-সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি সভা নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, চাহিদা নির্ণয়, স্থানীয় উৎপাদন, মজুদ পরিস্থিতি, আমদানির পরিমাণ ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।
তথ্য ‘সঠিক হলে’ সাংবাদিকের ভয় নেই -বাণিজ্যমন্ত্রী
এমপিদের মান-ইজ্জত রক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : কোনো সাংবাদিক গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তা যদি সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেই মনে করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। মন্ত্রিসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদনের পর গতকার মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তার এই মন্তব্য আসে।
তোফায়েল বলেন, আপনি যদি একটা সত্য রিপোর্ট প্রকাশ করেন, এটাতে বোঝা যাবে এটা সত্য না মিথ্যা, তাহলে তার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমি মনে করি না, ইফ দ্য রিপোর্ট ইজ কারেক্ট।
সমালোচিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা তথ্য প্রযুক্তি আইন থেকে সরিয়ে সেগুলো আরও বিশদ আকারে যুক্ত করে সোমবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এ আইন পাস হলে হ্যাকিং, ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বা ভয়ভীতি সৃষ্টির জন্য কম্পিউটার বা ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং ডিজিটাল উপায়ে গুপ্তচরবৃত্তির মত অপরাধে ১৪ বছরের কারাদান্ডের পাশাপাশি কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড দেওয়া যাবে।
আর ইন্টারনেটে কোনো প্রচার বা প্রকাশের মাধ্যমে ‘ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধে আঘাত’ করার শাস্তি হবে ১০ বছরের জেল, ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড।
তোফায়েল দাবি করেন, বিএনপি সরকারের সময় প্রণীত আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাকে নতুন আইনে ‘স্পষ্ট’ করা হয়েছে। ‘সঠিকভাবে, স্বচ্ছতার সঙ্গেই’ এটা করা হয়েছে। সরকারি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত ডিজিটাল উপায়ে ধারণ, স্থানান্তর বা সংরক্ষণ করা এবং তাতে সহয়তাকে গুপ্তচারবৃত্তির অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ১৪ বছরের কারাদন্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।
ফলে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মতই এ আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে ব্যবহার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পত্রপত্রিকায় একেকজন এমপির নামে চরিত্র উদঘাটন করে সে কোথায় গিয়েছে, কি করছে, যেভাবে ছবি-টবি দিয়ে সাজানো হচ্ছে, কম তো হচ্ছে না। নির্বাচিত প্রতিনিধি, তারাও তো মর্যাদাশীল, যেভাবে লেখা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অনেকে তথ্য সরবারহ করার চেষ্টা করে, যেগুলো সঠিক নয়। আবার দলের মধ্যেও আছে। আমি নোমিনেশন চাই, তাকে ছোট করি, এভাবেও তথ্য দেয়।
প্রস্তাবিত আইন নিয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হলে তোফায়েল বলেন, আপনারা আপনাদের মত লিখে যান, কিন্তু সঠিকভাবে লেখেন। ভারত চাল রফতানি বন্ধ করেনি, আপনারা যদি লেখেন যে ভারত চাল রফতানি বন্ধ করেছে, আর (ব্যবসায়ীরা) দাম যদি বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আমরা কী করব?
দুর্নীতির তথ্য অনুসন্ধানে গেলে প্রস্তাবিত আইনে সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হতে পারে-এক সাংবাদিকের এমন শঙ্কার পর মন্ত্রী বলেন, গোপনে করবেন কেন? আমার এখানে আইসেন, আপনারা কোনটা জানতে চান আমি দেখিয়ে দেব। আমরা এই আইন করেও আপনাদেরকে থামাতে পারব বলে আমার মনে হয় না। অন্যদিকে সচিবালয়ে ঢাকা চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নব নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ পূরণ করেছে। প্রথমত মাথাপিছু আয় এক হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়। আর বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার এবং গড় প্রায় এক হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয়ত মানব সম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের ৭২ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়েছে। তৃতীয়ত অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মাত্রা ৩০ ভাগের নীচে হতে হবে, বাংলাদেশে এ মুহূর্তে তা ২৬ ভাগ অর্জন করেছে।
মন্ত্রীবলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। স্তর পরিবর্তনের সময় পাওয়া যাবে তিন বছর, ২০২৪ সালে তা কার্যকর হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। উন্নয়নশীল দেশ কেনিয়ার রফতানি ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার, শ্রীলংকার রফতানি ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, পাস্তি—ানের রফতানি ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সেখানে বাংলাদেশের রফতানি ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি জানান, এবছরের শেষ নাগাদ শ্রীলংকার সঙ্গে এফটিএ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এবং তুরষ্কের সাথে দ্রæত সময়ের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষরের কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ হতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে সারা পৃথিবী একটি গেøাবাল মার্কেটে পরিণত হয়েছে এবং এ প্রতিযোগিতার টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবন ও বাজার সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান সম্প্রতি প্রকাশিত ডুইং বিজনেস রিপোর্টে বাংলাদেশ একধাপ পিছিয়েছে, তাই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাব করেন, যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে অবকাঠামো উন্নয়নে জিডিপি’র ২.৩ শতাংশ বিনিয়োগ হচ্ছে, যা কিনা পাঁচ শতাংশ-এ উন্নীত করতে হবে এবং এজন্য প্রতিবছর শুধুমাত্র অবকাঠামো খাতে প্রায় ১৫-১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে, তা অর্জনে অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক আন্দালিব হাসান, হুমায়ুন রশিদ, ইমরান আহমেদ, খন্দ. রাশেদুল আহসান, কে এম এন মঞ্জুরুল হক, মামুন আকবর, মো. আলাউদ্দিন মালিক, ইঞ্জি. মো. আল আমিন, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন, সেলিম আকতার খান, এস এম জিল্লুর রহমান, ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী এবং মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।