Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংরক্ষিত মহিলা আসনের মেয়াদ বাড়ছে

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পঞ্চায়েত হাবিব : জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা এমপিদের আসন সংখ্যা বাড়ছে না। তবে ১০ বছরের স্থলে এবার মেয়াদ ২০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মেয়াদ ২০ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব রেখে আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন-২০১৮-এর খসড়া অনুমোদনের জন্য উখপান করা হবে। এ নিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসন তিন দফা সংবিধানে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এখনই সংবিধান সংশোধন না করলে বর্তমান সংসদের পর সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন আর থাকবে না। সংবিধান সংশোধন করতে হলে সংসদের মোট সংসদ সদস্যের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন। ফলে একাদশ সংসদে সরকারি দলের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য না থাকলে কিংবা বিরোধী দলের সমর্থন না পেলে মহিলা আসন পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। সে কারণে আগে সরকার মেয়াদ বৃদ্ধি করছে সরকার। এদিকে যত বার সংরক্ষিত মহিলা এমপিদের আসন সংখ্যা বাড়ছে ততবার আওয়ামীলীগ এ সুযোগ বেশি পেয়েছে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বিলটি মন্ত্রিসভায় ওঠার কথা রয়েছে। সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি থাকবে কি না তা আগে বলতে পারছি না। তবে ১০ বছরের স্থলে এবার মেয়াদ ২০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টিই থাকছে। তবে ১০ বছরের স্থলে এবার মেয়াদ ২০ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবার আসন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়নি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। আর প্রথম অধিবেশন বসে ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেই হিসাবে ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের মেয়াদ রয়েছে। বর্তমান জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্যের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু তাদের ক্ষমতা বেড়েছে কতটুকু? কার্যকর সংসদের কথা এলেই ঘুরেফিরে এ প্রশ্ন আসে। নারী এমপিদের ক্ষমতায়ন অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে সরকারি ভাবে বলা হয়। কিন্তু আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ থাকেন সব। তাই অনেক নারী এমপিই বলে থাকেন, তারা নামেই এমপি, কোনো কাজ নেই। সংসদে নারী এমপির সংখ্যা ৭২ জন। সংসদে বর্তমানে সংরক্ষিত আসনে ৫০ জন এমপি রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৪২ জন, জাতীয় পার্টির ৬ জন এবং জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির একজন করে ২ জন। এর বাইরে চলতি সংসদে ২২ জন নারী-এমপি রয়েছেন, যারা নির্বাচিত। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৮ জন, জাতীয় পার্টির তিনজন ও জাসদের একজন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নারীর ক্ষমতায়ন জোরদার করতে হলে সংরক্ষিত আসনের নারী এমপিদের সরাসরি নির্বাচন ব্যবস্থা, ক্ষমতা ও কার্যপরিধি বৃদ্ধি করার প্রয়োজন।
জানা গেছে, ১৯৭২ সালের সংবিধানে মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১০ বছরের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষণের বিধান করা হয়। ১৯৭৮ সালে সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৩০-এ উন্নীত এবং এর মেয়াদ ১৫ বছর করা হয়। শুরুতে সংরক্ষিত নারী এমপিদের জন্য ৩০টি আসন বরাদ্দ ছিল। সপ্তম সংসদে শেষ বারের মতো ৩০টি আসনের বিধান চালু ছিল। তবে অষ্টম সংসদের আগেই আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫টি আসনের বিধান চালু করা হয়। এজন্য ২০০৪ সালের মে মাসে সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী আনা হয়। ২০০৪ সালে পাস করে বাংলাদেশের সংবিধানে সংযুক্ত ধারার অনুচ্ছেদ ৬৫(৩) তে উল্লেখ করা হয়- সংবিধানের (চতুর্দশ সংশোধন) আইন, ২০০৪ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে শুরু করে দশ বৎসরকাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাঙ্গিয়া না যাওয়া পর্যন্ত পঁয়তাল্লিশটি আসন কেবল মহিলা সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে এবং সংসদ কর্তৃক পাশকৃত আইনের সাপেক্ষে সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে সংরক্ষিত আসনে মহিলারা নির্বাচিত হইবেন। এরপর সর্বশেষ ২০১১ সালের ৩রা জুলাই সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে সংরক্ষিত মহিলা আসন সংখ্যা ৪৫ হতে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের এই ব্যবস্থা থাকলেও নারীরা সাধারণ নির্বাচনেও প্রার্থী হতে পারছেন। এ প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদের সাবেক চীফহুইপ জয়নুল আবেদীন ফরুক ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপির নেত্রী খালেদা জীয় প্রথম নারীর ক্ষতায়নের জন্য পঞ্চদশ সংশোধনী এনে সংরক্ষিত মহিলা আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে এ সুযোগ বিএনপি না পেলেও বর্তমান সরকার তা ভোগ করতে পারছে।
এদিকে বহুল আলোচিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করে সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চারটি ধারায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আজ মন্ত্রিসভা বৈঠকে তোলা হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদনের বিষয়টিও রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ