পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করতে আদালতকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখন জনগণের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট, জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন এবং বিরোধীপক্ষকে দমনের জন্য সরকার আদালতকে ব্যবহার করছে। নির্বাচন বানচালে সরকারের এই নোংরা প্রচেষ্টা দেশের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আচরণে মানুষ আজ ক্ষুব্ধ এবং ক্রুদ্ধ। গতকাল (শনিবার) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংসের চক্রান্তে লিপ্ত অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি শুধু একটি রেজুলেশন আপনাদের সামনে পড়ে শোনাব। গত ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাৎ সমাপ্ত ঘোষণা করে আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়। উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবীদের মতে, এমন ঘটনা শুধু অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক নয়, রহস্যজনক। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জাতীয় নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার জন্য দ্রæত রায় ঘোষণা-তা সেই অপচেষ্টা অংশ হিসেবে দেশবাসী মনে করে। সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে গত কয়েকদিন ধরে সরকারের মন্ত্রীগণ এবং বিশেষ দূত (জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) এই মামলার রায় এবং তার পরবর্তী সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে সরকার এবং সরকারি দলের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা যে ভাষায় বলে চলেছেন তাতে প্রমাণিত হয় যে মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকলেও তার রায় কী হবে তা সরকার এবং সরকারি দলের জানা আছে বলেই মনে হয়।
বিএনপি মহাসচিব জানান, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রলোদিত মামলায় নিয়মনীতি না মেনে সাজা দেয়ার প্রচেষ্টার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়কে কেন্দ্র করে গোটা জাতি আজ উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ। আমরা মনে করি, এটা গভীর ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য। এজন্য তিনি দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারের নামে সরকারি ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আহŸান জানান।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু হয়। রাত ১১ টার দিকে বৈঠক শেষে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় পরবর্তী দলের কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠক ডাকেন বিএনপি প্রধান।
বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
যেনতেন রায় জনগণ মানবে না : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলায় ‘যেনতেন প্রকারে রায়’ জনগণ মেনে নেবে না। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় ঘোষণা নিয়ে গতকাল শনিবার সেচ্ছাসেবক দলের এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, এত সোজা নয়, বেগম খালেদা জিয়াকে আপনারা যেনতেন প্রকারে একটা রায় দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন, দেশের মানুষ সেটা মেনে নেবে না। সঠিক বিচার করতে হবে, ন্যায়বিচার হতে হবে। আমরা যে কথা বলতে চাই খুব পরিষ্কার করে, আমাদের নেত্রী এদেশের ১৬ কোটি মানুষের আশা-ভরসার স্থল, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের একমাত্র প্রতীক ,যার ওপর সমস্ত বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে, তাকে তারা রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়। আমরা কী সেটা করতে দেব? এ সময়ে অনুষ্ঠানস্থলে নেতাকর্মীরা সমস্বরে ‘না’, ‘না’ বললে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা কি তার জন্য সমস্ত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন? এ সময়ে নেতাকর্মীরা সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ বলে ওঠে।
কেন তড়িঘড়ি করে রায় দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অত্যন্ত দ্রæততার সঙ্গে নজিরবিহীনভাবে তাড়াহুড়া করে এই মামলাটি শেষ করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এমন কী শেষ দিন যখন আইনজীবী চাচ্ছেন যে, তিনি আরও কথা বলবেন, কিউসিরা আছেন তাদের কথা বলার কোনো সুযোগ না দিয়ে, সিনিয়র আইনজীবীদের গিলোটিন করে তাদের বক্তব্য শেষ করা হয়েছে এবং মামলার রায় দেওয়ার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এই তাড়াহুড়া? কেন এই জোর করে অতিদ্রুত আইনের স্বাভাবিক যে গতি, মামলার যে গতি থাকে, তাকে বন্ধ করে দিয়ে অতি দ্রুততার সঙ্গে কেন এই রায় দেওয়ার চেষ্টা? একটাই কারণ- বিএনপি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা হুঙ্কার দিচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন যে, রায়ের পরে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে। আপনাদের মাথায় এটা আসলো কেন? আমরা তো দেখছি, এই মামলায় কিছুই নেই, কোনো সত্যতা নেই, প্রসিকিউশন ব্যর্থ হয়েছে কোনো কিছু প্রমাণ করতে। সেখানে আপনারা হঠাৎ করে এটা (বিশৃঙ্খলা) ভাবছেন কেন? ভাবছেন এই কারণেই যে, রায় আপনারা পূর্বেই নির্ধারণ করে রেখেছেন। আপনাদের সরকারের মন্ত্রীরা বলেছেন আটদিনের মধ্যে রায় হবে, ১৫ দিনের মধ্যে রায় হবে। যখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন যে ১৫ দিনের মধ্যে রায় হয়ে যাবে, রাঙ্গা সাহেব (স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা) বলেন যে, আটদিনের মধ্যে হয়ে যাবে। তখন দেখা গেল ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ রায় ঘোষণার কথা বলা হল। তাহলে বিচারের এই প্রহসন কেন?
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সংগঠনের কারাবন্দি সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীর মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়। মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এস এম জিলানির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বক্তব্য রাখেন।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।