পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় দরকার আধ্যাত্মিক জাগরণ -অধ্যক্ষ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ
কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মহান মোর্শেদ আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ অধ্যক্ষ আল্লামা শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী বলেছেন, আধ্যাত্মিক শক্তিতে জাগরিত ছিল বলেই ইসলামের সোনালী যুগের মুসলামানদের মধ্যে ছিল দৃঢ় ঈমানি চেতনা ও একতা। আত্মিকশক্তির এই দর্শন থেকে সরে আসাতে বর্তমান মুসলমানদের মাঝে বিরাজ করছে অনৈক্য ও হতাশা। আর এ সঙ্কট থেকে উত্তরণে ইসলামি আধ্যাত্মিকতার জাগরণের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি, স¤প্রীতি ও পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টির পথ দেখিয়েছেন কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হযরত গাউছুল আজম (রা:)।
গতকাল ২৭ জানুয়ারি শনিবার রাজধানী ঢাকার গুলিস্থানের কাজী বশির মিলনায়তন সম্মুখস্থ ময়দানে ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে উপস্থিত বিপুল মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, সারা মুসলিম বিশ্বে জঙ্গিবাদের ধোয়া তুলে আমেরিকা ও ইসলামবিদ্বেষী শক্তিসমূহ বহু নগর-জনপদ ধ্বংস করেছে। এরপরও বিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চীন, ফ্রান্স এবং রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। মসজিদের সংখ্যাও বাড়ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন মুসলমানরা দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স এবং আলেম, ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের অবদানের কারণে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ স্থান পায়নি। এ ক্ষেত্রে ওলামা মাশায়েখগণকে তাদের ভ‚মিকা অব্যাহত রাখতে হবে।
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, দেশে এখন মাদকে সয়লাব। দেশ এখন মাদক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এদের তালিকা আছে। দলীয় লোকেরাও মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। বাংলাদেশকে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী দেশ তৈরির জন্য তরিক্বতপন্থীদের বিকল্প নেই। মুনিরীয়া যুব তবলীগ এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা দ্বারা তা প্রমাণ করে চলেছে।
তিনি বলেন, আধ্যাত্মিক কর্মবীর অধ্যক্ষ আল্লামা ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বের পথভ্রষ্টদেরকে তরিক্বতের মাধ্যমে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে আধ্যাত্মিক প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। মুনিরীয়া যুব তবলীগের মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে অবদান রেখে দেশে-বিদেশে অনেক খ্যাতি ও সম্মান কুড়িয়েছেন। তিনি কথা বলেন কম, কাজ করেন বেশি। চট্টগ্রামসহ বিভিন্নস্থানে বিশাল মাদরাসা ও মসজিদ স্থাপনই তার প্রমাণ।
প্রফেসর ড. ছায়েফ উল্যা বলেন, কাগতিয়া দরবারের মোর্শেদে আজম অধ্যক্ষ আল্লামা ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী নিজস্ব উদ্যোগে ও অর্থায়নে দেশে মাদরাসা নির্মাণ, অনেক হিফজুল কুরআন বিভাগ চালু ও পরিচালনার মাধ্যমে ইসলামের খেদমতে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা অন্যদেরকেও প্রেরণা যোগাবে।
অধ্যক্ষ হাসান মাসুদ বলেন, অধ্যক্ষ আল্লামা ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী তরিক্বতের প্রচার-প্রসারের পাশাপাশি দেশে ইসলামি শিক্ষার প্রসারেও অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এ নিবেদিতপ্রাণ প্রতিভাবান ব্যক্তিত্বের মেধা, শ্রম ও প্রচেষ্টায় তাঁরই পরিচালিত কাগতিয়া কামিল এম এ মাদরাসা শুধু চট্টগ্রামে নয়, পুরো দেশের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ ও আধুনিক মাদরাসায় পরিণত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, হযরত গাউছুল আজম (রা:)’র যোগ্য উত্তরসূরী মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী একজন দূরদর্শী রূহানী দার্শনিক। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি তরিক্বত চর্চা করে তাহলে একাডেমিক ডিগ্রি অর্জনের সাথে সাথে তারা উন্নত নৈতিকতা সম্পন্ন আলোকিত মানুষের ডিগ্রিও অর্জন করতে পারবে।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, ড. শহীদুল্লাহ কলেজ প্রভাষক মুস্তাকিম আহমদ, অ্যাডভেন্ট স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লি:-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল বাসেত। সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন আল্লামামুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম হানফি, আল্লামা মুফতি আনোয়ারুল আলম সিদ্দিকী, আল্লামা মোহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা এমদাদুল হক মুনিরী, আল্লামা মোহাম্মদ সেকান্দর আলী ও আল্লামা মুহাম্মদ ফোরকান প্রমুখ।
মিলাদ-কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম (রা:)’র ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।