Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডিএসসিসিতে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে

ওসমানী উদ্যান উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন ও ২০ নং ওয়ার্ডে জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে সাঈদ খোকন

| প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, মাদক সমস্যা শুধু ২০ নম্বর ওয়ার্ডে নয়। এ সমস্যা শহরজুড়ে। এ জন্য ডিএসসিসি এলাকায় আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে। এজন্য মেয়র ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের আর কিছু দিন অপেক্ষা করতে বলেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএসসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ড আয়োজিত ‘জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন অনুষ্ঠানে স্থানীয়দের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
সাঈদ খোকন বলেন, এই ওয়ার্ডে আগে ৭৯০টি ল্যাম্পপোস্ট ছিল। এখন ৭৫০টিতে এলইডি লাইট লাগানো হয়েছে। বাকি ৪০টি পোস্টে খুব আল্প সময়ের মধ্যে লাগিয়ে দেওয়া হবে। শুধু ২০ নম্বর ওয়ার্ড নয়। এখন অন্যান্য এলাকার বাসিন্দারা দক্ষিণ সিটির আলোর ঝলকানি দেখতে এই এলাকায় ঘুরতে আসেন। আমাদের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। আমরা চাই সেবা দিয়ে আপনাদের ঋণ পরিশোধ করতে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে চিকুনগুনিয়া রোগে নগরবাসী অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমরা আপনাদের জন্য ডাক্তার ও ওষুধের ব্যবস্থা করেছি। ঘরে বসে আপনারা চিকিৎসা পেয়েছেন। ২০ হাজার মানুষকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বিরল দৃষ্টান্ত।
এসময় স্থানীয়রা মেয়রকে জানান, সেগুনবাগিচা এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাদের প্রধান সমস্যা পানিবদ্ধতা, রাস্তায় পার্কিং, রাস্তা দখলে রেখে দোকানপাট করা এবং মাদক সমস্যা। এছাড়াও ড্রেনেজ সমস্যা, ছিনতাই, ল্যাম্পপোস্ট ও বিশুদ্ধ পানির সমস্যার কথাও জানিয়েছেন তারা। নাগরিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিতে চেয়েছেন মেয়র। তবে কিছু সমস্যা সমাধানে দীর্ঘ সময় লাগবে বলেও জানান তিনি। মেয়র বলেন, আমি চেষ্টা করবো এখানকার সমস্যা এখানেই শেষ করতে। তবে পানিবদ্ধতার মতো কিছু সমস্যা শেষ করতে কিছু সময় দরকার হবে।
এদিকে মৎস্য ভবনের সামনেসহ আরও কিছু এলাকার ছিনতাই সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে সকাল ৬টা থেকে টহল বাড়ানোর অনুরোধ করেন স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে পল্টন ও রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের টহল বৃদ্ধি করার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। এছাড়া ল্যাম্পপোস্ট মনিটরিং এর দায়িত্বে থাকা কর্পোরেশনের কর্মকর্তাকে সঠিকভাবে কাজ করার নির্দেশ এবং ওয়াসাকে ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানেও নির্দেশ দেন তিনি। আগামীকাল (আজ রোববার) থেকে কাজ শুরু হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র। জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ রতন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বেলালসহ অন্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
এর আগে গতকাল সকালে ওসমানী উদ্যান ‘গোস্যা নিবরণী পার্কে’ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে কাজের উদ্বোধন করেন মেয়র সাঈদ খোকন। এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন, হাসিবুর রহমান মানিক, স্থপতি আরিফ আযম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীবাসীর বিনোদনের জন্য অত্যাধুনিক হচ্ছে ওসমানী উদ্যান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) জল সবুজের ঢাকা প্রকল্পের আওতায় ২৯ একর জায়গার ওপর অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ওসমানী উদ্যানকে নতুনভাবে সাজানোর কাজ হতে নেয়া হয়েছে।
প্রায় ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ পার্কে থাকবে জলের আধার, মিউজিক সিস্টেম, বসার জন্য পৃথক পৃথক জোন, বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, পুরনো দিনের গান শোনার ব্যবস্থা। এছাড়া বড় স্ক্রিনে টিভি দেখার সুবিধা থাকবে। পুরো পার্কটির চারদিক থাকবে উন্মুক্ত। আগামী ৯ থেকে ১০ মাসের মধ্যে পার্কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান মেয়র।
উদ্বোধন শেষে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ওসমানী উদ্যান একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী ছিলো। সন্ধ্যা নামলেই বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। সাধারণ মানুষের আনাগোনা একেবারেই বন্ধ ছিলো। সবার কথা চিন্তা করে আমরা পার্কটিকে অত্যাধুনিক করার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, স্থপতি আরিফ আযমের প্রস্তাব অনুযায়ী বোর্ড সভায় ওসমানী উদ্যানকে গোস্যা নিবারণী পার্ক হিসেবে নামকরণের প্রস্তাব আসছে। এর কারণ নাগরিকদের মধ্যে অনেক সময় মান অভিমান, গোস্যা হয়ে থাকে। এই পার্কে এলে স্বাভাবিকভাবে মন ভালো লাগবে, উৎফুল্ল লাগবে। এখানে জলের আধার আছে, চা, কফি, স্যান্ডউইচ খাওয়ার ব্যবস্থা, হারানো দিনের গান শোনার ব্যবস্থা থাকবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গোস্যা নিবারণ হয়ে পুরো চাঙাভাব নিয়ে কাজে ফিরতে পারবেন যে কেউ। এই চিন্তা থেকেই এটি গোস্যা নিবারণী পার্ক হিসেবে নামকরণ করার চিন্তাভাবনা।
পার্কের কাজের উদ্বোধন শেষে বঙ্গবাজার মোড়ে অত্যাধুনিক পুলিশ বক্সের উদ্বোধন করেন মেয়র। ডিএসসিসি এলাকায় ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭১টি পুলিশ বক্স করা হচ্ছে। এরমধ্যে গতকাল শনিবার ৪টির উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরে ৭১টি অত্যাধুনিক টয়লেট নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৯টি পার্কিং ও ১২টি খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ হাতে নিয়েছে ডিএসসিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ