Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভরা মৌসুমেও সুনামগঞ্জে শাক-সবজির দাম চড়া

সুনামগঞ্জ থেকে আজিজুল ইসলাম চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 

সুনামগঞ্জে শীতের সবজির দাম এখনো চড়া। শীতের শেষ পর্যায়েও দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। শাক-সবজি বাজারে পর্যাপ্ত থাকলেও সাধারণ ক্রেতারা সবজি বাজারে গিয়ে সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। বলতে গেলে প্রতিটি হাট-বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির দাম চড়া। এমন কোনো সবজি নেই ৪০ টাকার টাকার নিচে। একমাত্র মুলা ও আলু ছাড়া সব সবজির দাম বেশি। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সব ধরনের সবজি আছে অথচ দাম বেশি। পাইকারি বাজারে দাম কম হলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করছেন। ক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ আছে প্রচুর কিন্তু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মিলে শাক-সবজির দাম বাড়িয়ে রেখেছে। ক্রেতারা সবজি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ানোর অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু সবজি উৎপাদনকারীরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার অধিক বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে শাক-সবজির উৎপাদনে বিলম্ব হয়েছে। ফলে সবজি বাজারে আসতে বিলম্ব হচ্ছে। যারা আগাম সবজি ফলনে নিয়োজিত ছিলেন, তারা এখন একটু বেশি দামে বিক্রি করে কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন। বাজারে সরবরাহ বেড়ে গেলেই দাম কমতে পারে। সবজি উৎপাদনকারীরা বলছেন, এবার অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি উৎপাদন কম হয়েছে। তাই বাজারে সরবরাহ কম। সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি। তবে এবার এর চেয়ে দাম কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না ।

সুনামগঞ্জের কয়েকটি সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি বড় প্রতি পিস ৪০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, শিম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লুবি প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২৫ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা কেজি, শিমের বিচি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। লাউয়ের দামও বেশি। সদর উপজেলার কৃষ্টনগরের সবজি ব্যবসায়ী মর্তুজা আলী বলেন, আমাদের এলাকা জেলার সবচেয়ে বেশি শাক-সবজি উৎপাদনের স্থান। সারা জেলায় কম-বেশি সবজি উৎপাদন হলেও এ এলাকা থেকে অনেক সবজি ব্যবসায়ীরা সবজি কিনে নিয়ে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করেন। এবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় সবজি চাষ বিলম্বিত হয়েছে । ফলে শীতের শাক-সবজি অনেকটা বিলম্বে বাজারে আসছে। তাই সবজির দাম এখনো তেমন কমছে না। তিনি বলেন, সবজি উৎপাদন বিলম্বিত হওয়ায় সরবরাহ কম। তাই উৎপাদন পর্যায়ে বেশি দামে কিনে নিয়ে খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। সুনামগঞ্জ পুরাতন জেল রোড এলাকার সবজি ব্যবসায়ী সুমন সবজির দাম সম্পর্কে বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে তারা বেশি দামে কেনেন, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতি কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকার বেশি লাভ করতে পারছেন না তারা।
টমেটোর বেশি দাম সম্পর্কে এই ব্যবসায়ী বলেন, এবার বৃষ্টিপাতের কারণে টমেটোর ফলন বিলম্বিত হয়েছে। এখনো স্থানীয় পর্যায়ে টমেটো বাজারে তেমন আসছে না। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে টমেটো এনে বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় টমেটো বাজারে এলে দাম হয়তো কমতে পারে। মূলত সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারা বাজার, ধর্মপাশা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সবজি উৎপাদন হয়। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা নদীর উত্তর পাড়ের সলুকাবাদ, জাহাঙ্গীর নগর, সুরমা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রতি বছর প্রচুর শাক-সবজি উৎপাদন হয়। এবার সবজি চাষাবাদ বিলম্বিত হলেও প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জাহেদুল হক ইনকিলাবকে বলেন, এবার জেলার বিভিন্ন স্থানে দুই হাজার হেক্টর ভ‚মিতে সবজি চাষাবাদ করা হয়েছে। এবার অতি বৃষ্টি úাতের কারণে সবজি চাষ কম হয়েছে। তাছাড়া চাষাবাদ বিলম্বিত হওয়ায় বাজারে সবজি তেমন আসছে না। সবজির দাম এবার বর্তমান দামের চেয়ে তেমন কমবে বলে মনে হচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ