বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যে কোন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার : যে কোন মুল্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ছাত্রলীগকে নিদের্শ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল গুলিস্তানে দলীয় কার্যালয়ে সন্ধ্যা ৬টায় থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকার বিভিন্ন শাখা নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নিদের্শে বৈঠক করেন তারা।
বৈঠকে সাতটি কলেজকে ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভূক্তি ও এর ফলে পক্ষ-বিপক্ষের আন্দোলন, ঢাবি উপাচার্যের কার্য্যালয় ভাংচুর ও তাকে লাঞ্ছিত করা এবং ভিসিকে উদ্ধার করতে গিয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে ছাত্রনেতাদের বক্তব্য শোনেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন শাখার নেতারা বক্তৃতা করেন।
এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা অভিযোগ করেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তথাকতিথ আন্দোলনের নামে সরকারকে অস্থিতীশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্যই এই আন্দোলন করছে কতিপয় সংগঠন। আসলে নির্বাচনী পরিবেশ ঘোলা এবং নির্বাচনের আগ মুহুর্তে শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করতে চায়। তারা বলেন, ছাত্রলীগকে নিয়ে গণমাধ্যমও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। ছাত্রলীগ কোন হামলার সঙ্গে জড়িত হয়নি বরং ভিসিকে উদ্ধার করতে গিয়ে তাদের আক্রমনের শিকার হয়েছে। এখনো অনেক ছাত্রলীগ কর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বাম সংগঠনগুলো অন্যদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বসেছিলাম। তাদের বক্তব্য শুনেছি। আমরা নিদের্শ দিয়েছি, কারো উস্কানিতে কান না দিতে। কারণ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানামুখী ষড়যন্ত্র হতে পারে। তাই ক্যাম্পাসে অরাজক পরিস্থিতির পায়তারা হতে পারে। যে ঘটনা ঘটেছে তা সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে যদি ছাত্রলীগও জড়িত থাকে তাহলে তাদেরও শাস্তি পেতে হবে।
আর দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে লিপ্ত হয়েছে। ২৩ তারিখ ঢাবি ক্যাম্পাসের ঘটনাটি পরিকল্পিত। বিভিন্ন বাম ছাত্রসংগঠনের ব্যানারে বহিরাগতরা সেখানে গিয়েছিল। তারা ভাঙ্চুর ও ভিসিকে অবরুদ্ধ রেখেছে। তারা পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যে যেকোনো অঘটন সেদিন তারা ঘটাতো। এ অবস্থায় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে ভিসিকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে। এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতিতে ঢাবিসহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেকোনো মূল্যে শান্তি বজায় রাখতে হবে। এজন্য ছাত্রলীগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, রুদ্ধদার বৈঠকে ঢাবির পরিস্থিতি ছাড়াও ছাত্রলীগের আসন্ন সম্মেলন নিয়ে কথা বলেন সংগঠনের সিনিয়র নেতারা। তারা আওয়ামী লীগের এই দুই শীর্ষ নেতার কাছে দাবি করেন, একাদশ জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে এই মুহুর্তে ছাত্রলীগের সম্মেলন করাটা কতটা যুক্তিযুত হচ্ছে? তা আওয়ামী লীগকে ভেবে দেখতে হবে। তবে নেত্রী চাইলে আমরা সম্মেলন দিতে প্রস্তুত। নেত্রীর কথাই শেষ কথা। তবে যদি নির্ধারিত ৩১ মার্চ সম্মেলন হয়, তাহলে ম্যাচিউরিটি সম্পন্ন নেতৃত্ব যেন উঠে আসে জন্য দৃষ্টি দিতে হবে। শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকই নয়, অন্যান্য নেতৃত্বের বিষয়টি দেখতে হবে। যেন নতুন নেতৃত্ব আগামী নির্বাচনে ভ‚মিকা রাখতে পারে। তবে নেত্রীর কথামতোই আমরা সম্মেলন করতে প্রস্তুত। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সম্মেলন করা হলেও দলের জন্যই ভাল। এসময় আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতা ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের কথা আমরা শুনলাম-দলীয় ফোরামে আলোচনা করবো। নেত্রীর কাছে তুলে ধরবো। তবে এই মুহুর্তে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ন অবস্থা বিরাজ করতে যা যা করণীয় তা তোমাদের করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।