Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

হালদায় ৩ মাসে ১৪ ডলফিনের মৃত্যু

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে আসলাম পারভেজ | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এশিয়ার বিখ্যাত এক মাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। জৈববৈচিত্র সমৃদ্ধ এই নদীতে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক মৃত্যু হচ্ছে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন। গত ২৭ ডিসেম্বর হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা গচ্ছাখালি খালে মাস্টার বাড়ির কালবাটের নিছে থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করে উপজেলা মৎস্য অফিসের কার্যলয়ের লোকজন, গত ৩ জানুয়ারি গড়দুয়ারা ¯øুইস গেট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় আরো একটি মৃত ডলফিন। বিগত ৩ মাসে হালদা নদীর বিভিন্ন এলাকায় আনুমানিক ১৪টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। এই ডলফিনগুলো ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজ্যারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএস) লাল তালিকাভুক্ত বিপন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণী বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম, তিনি বলেন বিগত কয়েক দিন র্পূবে উদ্ধার করা ডলফিনগুলো লম্বা প্রায় ৬ ফুট। ওজন আনুমানিক ১০০ কেজি। এর পূর্বে যে ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে তার ওজন প্রায় ২ মণের কাছাকাছি। উদ্ধার করা দুটি ডলফিনকে মাটি চাপা দেয়া হয়। এই সময় তিনি আরো বলেন, গত তিন মাসে হালদার মিষ্টি পানিতে প্রায় ১৪টি ডলফিন মৃত্যু অবস্থায় ভেসে ওঠে। কি কারণে এই সব ডলফিনগুলোর মুত্যু হচ্ছে তা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কেউ বলতে পারছেনা। তবে যান্ত্রিক বড় বড় নৌযান চলাচল ও দখল দূষণ ড্রেজার মেশিন ব্যবহার ও প্রপেলারে আঘাতে ডলফিনগুলো মারা যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
হালদা বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলফিনগুলো বিপন্ন প্রজাতির জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী। এই সব ডলফিন মিঠাপানির ডলফিন। সারাবিশ্বে এ প্রজাতির ডলফিন ১০০০-১১০০টি আছে। হালদা নদীতে আছে ৩০০-৩৫০টি ডলফিন। যে গুলো নানা কারণে বিপদ সংকুলন। হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো অর্ডিনেটরের দায়িত্ব থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণি বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদককে জানান বালু তোলার ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌকার প্রপেলারের সাথে লেগে আগাতের কারণে ডলফিনগুলোর মৃত্যু হতে পারে। যার প্রমাণ ভেসে ওঠা ডলফিনগুলোর শরীরে আঘাতের দাগ দেখা দেয়। নদী দখল ও দূষণের পাশাপাশি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হালদা নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি তোলা হচ্ছে। বালু পরিবহনে যন্ত্র চালিত বড় বড় বোটগুলো আইন অমান্য করে চলাচল করতে থাকে। এতে করে ডলফিনের পাশাপাশি বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ মাছের ও ক্ষতি হচ্ছে। ফলে এটি মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রের জন্য একটি অশনি সংকেত বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষসহ হালদা বিশেষজ্ঞরা। হালদা জীব বৈচিত্র যেকোনো মূল্যে রক্ষা করা প্রয়োজন। সকল প্রকার যান্ত্রিক নৌযানসহ নানান দূষণ থেকে হালদা নদীকে রক্ষা করতে হবে। তা না হলে অপূরনীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই মৃত ডলফিনগুলো মাটি চাপায় রেখে পরে তার কঙ্কাল তুলে সংরক্ষণ করে গবেষণা করা হবে বলে হালদা বিশেষজ্ঞ ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ