বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলেই ঢাকার ঐতিহ্যবাহী নিউ মার্কেট ভবন দোতলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। যদিও মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি বলছে, নিউ মার্কেট একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। এর নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু না করতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন আদালতের সে আদেশ উপেক্ষা করে নিউ মাকেটে দোকান নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে ডিএসসিসি দাবি করছে, নিউ মার্কেটের পুনঃনির্মাণে মূল নকশার কোনও ক্ষতি হবে না।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার বলেন, সিটি কর্পোরেশন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ঐতিহ্যবাহী নিউ র্মাকেটের মূল ভবনের কোনও ক্ষতি হবে না। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টিল স্ট্রাকচারের মাধ্যমে ওই মার্কেটটিকে একটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন মার্কেটে পরিণত করব। এতে মূল নকশার কোনও ক্ষতি হবে না। ফলে আদালতের আদেশেরও কোনও ব্যত্যয় ঘটছে না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থের জন্যই এখন আন্দোলন করছেন। তারা ওই মার্কেটে আর কোনও দোকান চালুর পক্ষে না।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, নিউ মার্কেট কর্পোরেশনের নিজস্ব সম্পত্তি। বর্তমানে সংস্থাটি অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে। কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতাও পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু বিশাল এ মার্কেটটি থেকে যথেষ্ট পরিমাণ আয় আসছে না। যে কারণে মার্কেটটির ওপরে স্টিলের স্ট্রাকচারের মাধ্যমে আরও ১২৫টি দোকান নির্মাণ করে রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় ডিএসসিসি। তাছাড়া এই মার্কেটে দোকান বাড়লে নতুন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ক্রেতারাও ব্যবসায়ীক প্রতিযোগিতার কারণে সুলভ দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন। কিন্তু মার্কেট ব্যবসায়ীরা তা মানতে চাইছেন না। তারা বলছেন, মার্কেটের ছাদে আরও দোকান নির্মাণ হলে বর্তমান নিউমার্কেট অন্ধকার হয়ে পড়বে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে, ঐতিহ্যবাহী এই মার্কেটে দোকান নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে গত সোমবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের দাবি, নিউ মার্কেট উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা। সিটি কর্পোরেশন এই স্থাপনাকে ধ্বংস করে দিতে চায়। তাছাড়া এক আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, মার্কেটের মূল নকশার বাইরে কিছুই করা যাবে না। মার্কেটের ভেতরে পার্কিং করা যাবে না। কিন্তু কর্পোরেশন আদালতের সেই নির্দেশ মানছে না।
নিউ মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, নিউ মার্কেটের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। এটি উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। এতে অনেক খোলামেলা জায়গা রয়েছে। এই নকশায় মানুষ স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন। মূল নকশায় ৪২৬টি দোকান থাকলেও বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৫০০ দোকান রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির এই নেতা আরও বলেন, সিটি কর্পোরেশন দোকান বরাদ্দ দেওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাছাড়া মার্কেটের গেটে যেন কোনও যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সামনে পিলার দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে সিটি কর্পোরেশন। মার্কেটের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধভাবে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আদালতের আদেশ থাকায় সিটি কর্পোরেশন এমন কাজ করতে পারে না। এর প্রতিবাদে আমরা ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেছি। এজন্য আমরা সিটি কর্পোরেশনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।
ব্যবসায়ীদের দাবি ও আন্দোলন বিষয়ে ডিএসসিসি’র প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার বলেন, মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা চাইলে তাদের দাবি-দাওয়া অফিশিয়ালি জানাতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।