রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে এম বেলাল উদ্দিন : সংযোগ সড়ক থেকে সেতুর গোড়ার মাটি ধসে অন্তত পাঁচ ফুট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পিলারের মাটি সরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কোনোরকমে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। ওই ভাঙা অংশ পার হওয়ার জন্য দেয়া হয়নি অস্থায়ী কোনো সাঁকোও। কেউ লাফ দিয়ে কেউ ভাঙা পিলার বেয়ে সেতুটি পার হচ্ছেন। এভাবে যারা সেতু পার হচ্ছে তারা সবাই সেতু থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরকম একটি সেতু পার হয়ে প্রতিদিন স্কুল, মাদরাসা ও কলেজে যেতে হয়। এ ছাড়াও দুই ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ সেতুটি। চট্টগ্রামের রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারপাড়া গ্রামের মধুখালী খালের উপর সেতুটির অবস্থান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সরকার পাড়া, আলী সওদাগর পাড়া, বিশ্বের বাড়ির বাসিন্দা, রামকৃষ্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম গুজরা উচ্চ বিদ্যালয়, মুহাম্মদিয়া আদর্শ মাদরাসার শত শত শিক্ষার্থী ও নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম নোয়াপাড়া, সেন পাড়ার বাসিন্দা, পশ্চিম নোয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ পাঁচটি গ্রামের পাঁচ হাজার বাসিন্দার যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সেনপাড়া সড়কটি। এটি শুরু হয়েছে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কাপ্তাই সড়কের কমলার দীঘি কালিবাড়ি থেকে। শেষ হয়েছে পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সরকারপাড়া হয়ে শফিকুল ইসলাম চৌধুরী সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে। এ সড়কটির দুই কিলোমিটার অংশ কাঁচা রয়ে গেছে। কাঁচা অংশের শুরু থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে সরকারপাড়ায় ২৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্ত ভাঙা সেতুটির অবস্থান।
সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এই সেতু পার হওয়ার সময় কথা হয় পশ্চিম গুজরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী তমা ধর, অর্পিতা শ্যাম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী নিশি দাশ ও নুর নাহার আকতারের সঙ্গে। তারা জানায়, বিগত পাঁচ মাস ধরে তারা এভাবে ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হয়ে বিদ্যালয়ে যায়। সড়কটি কাঁচা হওয়ায় বর্ষাকালে অনেক কষ্টে চলাচল করে তারা। এখন সেতু ভেঙে স্কুল যাতায়াতে নতুন করে ঝুঁকিতে পড়েছে তারা।
পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অজিত বিশ্বাস বলেন, বিগত ৪০ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। গত জুলাই মাসের শেষের দিকে বন্যার পানির তোড়ে সেতুটির এই অবস্থার সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন তার ওয়ার্ডের বাসিন্দারাসহ পার্শ্ববর্তী পাঁচ গ্রামবাসী। তিনি বলেন, এই এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ভাঙা সেতু ও কাঁচা সড়ক পাকাকরণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) কার্যালয়ে বারবার আবেদন করা হলেও এখনো তারা সেতুটি পরির্দশনেও আসেননি।
পশ্চিম গুজরা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ব্যাংকার ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন ভাঙা সেতু ও কাঁচা সড়ক পার হয়ে কয়েক গ্রামের দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী তার পরিচালনাধীন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। শীত মৌসুমে কাঁচা সড়ক চলাচল উপযোগী থাকলেও বর্ষায় অনেক কষ্টে তারা স্কুলে আসে। এখন সেতু ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে। পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ বলেন, কাঁচা সড়ক ও সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো কেউ পরিদর্শনে আসেননি বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) রাউজান অধিদফতরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী হাটহাজারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জমান বলেন, ভাঙা সেতু ও সড়ক সম্পর্কে জানতে তিনি প্রতিনিধি পাঠাবেন এবং এই সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।