Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোমরা বন্দরে জেলা পরিষদের জমি দখল করে চলছে ভবন নির্মাণ

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাতক্ষীরা থেকে আবদুল ওয়াজেদ কচি : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে দিন-রাত শ্রমিকরা কাজ করে চলেছেন। অভিযোগ, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।
ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম আনারুল ইসলাম জানান, ১৯৮১ সালের ১২ আগস্ট ভোমরা বন্দরের গ্রামীণ ফোনের টাওয়ারের রাস্তার দক্ষিণ পাশের এক একর ৬৫ শতক জমি শহরের কাটিয়ার আবুল হোসেন মহুকুমা প্রশাসকের কাছ থেকে কৃষিকাজ করার জন্য ১৩৭৬-৮১ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত লিজ নেন। ছয় মাসের আগে হস্তান্তর অযোগ্য গত ১৪ আগস্ট ওই জমি অবৈধভাবে সাবেক তহশিলদার গোলাম মোস্তফা ও জিন্নাত আলীর কাছে রেজিস্ট্র্রি দলিল মূলে এক একর ৬০ শতক বিক্রি করেন আবুল হোসেন। ১৯৮৯ সালের ৪ ডিসেম্বর তাদের কাছ থেকে ওই জমি কেনেন ভোমরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও আছিয়াসহ কয়েকজন। ২০১৪ সালে ওই জমি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকেসহ জালালউদ্দিন আকবর ও কামারুজ্জামানসহ ১৫ জনকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বন্দোবস্ত দেয়া হয়। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আছিয়া ও রফিকুলসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দু’টি দেওয়ানি মামলা করা হয়। তিনিসহ ১৫ জন ডিসিআর গ্রহিতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আছিয়া ও রফিকুলসহ কয়েকজন আদালতে মামলা করেন, যা চলমান রয়েছে।
আনারুল ইসলাম আরো জানান, গত বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে নাশকতা মামলার আসামি মিজানুর রহমান মিন্টু, রফিকুল ইসলাম, শহীদুল ইসলামসহ ভ‚মিদস্যুরা তাদের (ইজারা গ্রহিতাদের) জমি জবরদখল করার চেষ্টা করে। পহেলা ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে জানালে তিনি সার্ভেয়ার পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। জেলা পরিষদ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি উভয় পক্ষকে নোটিশ করে ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। শুনানি শেষে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রধান নির্বাহী মঈনুল ইসলাম বিরোধপূর্ণ জমিতে কাজ না করার জন্য উভয় পক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদেশ অমান্য করে গত বছরের ২ জুন থেকে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন কামরুলের বন্দোবস্ত নেয়া জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। সেটি শেষ হওয়ার পর গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ওই জমিতে দিন-রাত ১০-১২ জন শ্রমিক লাগিয়ে জোরপূর্বক বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
সরেজমিন ভোমরা বন্দর এলাকায় গেলে কামরুজ্জামানসহ কয়েকজন জানান, রফিকুল মেম্বরের নেতৃত্বে জেলা পরিষদের জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ কাজ দিন-রাত চলছে। প্রতিবাদ করে লাভ হচ্ছে না।
তবে সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক। তাই সেখানে নির্মাণ কাজ করতে কোনো বাধা নেই।
জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদৌস আলফা জানান, চোখের সামনে জায়গা জবরদখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজের বিষয়টি তিনি সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে অবহিত করেছেন। তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় তিনি অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধে চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ওই জমিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, রফিকুল ইসলাম যেখানে ঘর নির্মাণ করছেন, সেখানে তিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। জেলা পরিষদের আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি লড়াইয়ে সমস্যার সমাধান করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ