Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে সবজি চাষে সাফল্য

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পুরস্কার লাভ

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নরসিংদী থেকে সরকার আদম আলী : ভার্টিক্যাল বা স্বল্প জায়গায় খাড়াখাড়ি পদ্ধতিতে সবজি চাষের প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি উপকরণসহ উন্নয়ন চিত্র প্রদর্শনের জন্য নরসিংদী জেলা উন্নয়ন মেলায় প্রথম পুরস্কার লাভের গৌরব অর্জন করেছে নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। উন্নয়ন মেলার শেষ দিনে প্রধান অতিথির নিকট থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবদুল হাই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ^াস। নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগরে উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: লতাফত হোসেন জানিয়েছেন, ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষ একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি। উন্নয়ন বিশে^র দেশগুলোতে বিশেষ করে জাপান, ভিয়েতনামসহ বিশে^র কৃষি প্রধান দেশগুলোতে এই ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষাবাদ করা হয়। বর্তমানে লোকসংখ্যা বৃদ্ধি এবং চাষাবাদের জমি কমে যাবার কারণে এই ভার্টিক্যাল পদ্ধতি আমাদের দেশে একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শহরের বাড়ির ছাদে, ঘরের বারান্দায়, গ্রামের বাড়ি আঙিনা বা উঠানের চারপাশে, ঘরের চারপাশে, গো-শালার চারপাশে, রান্নাঘরের চারপাশে এ ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষের সুযোগ রয়েছে। ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে চাষাবাদের মূল ভিত্তি হচ্ছে কলাগাছ বা কলাগাছ জাতীয় যে কোন পানিযুক্ত নরম গাছ-গাছালির মূলকান্ড কিংবা কোকোডাস্ট বা নারকেলের ছোবড়া। কলাগাছগুলো কেটে এর ভেতর ছোট ছোট গর্ত করে ভেতরে বীজ রোপণ করলেই সেখান থেকে চারা গজায়। পাশাপাশি সিনথেটিক ব্যাগ বালিশের মতো সেলাই করে এর ভেতর কোকোডাস্ট বা নারকেলের ছোবড়া ভর্তি করে এর ভেতর বীজ রোপণ করে পানি দিলেই সেখান থেকে চারা গজিয়ে ওঠে। চারা গজানোর পর মাঝে মাঝে গোড়ায় একটু করে পানি দিলেই চারা বড় হয়ে উঠে এবং ফলন দিতে শুরু করে। একটি কলাগাছে একবার শাক-সবজি চাষাবাদ করা হলে ৩/৪ মাস পর্যন্ত কলাগাছটি সজিব থাকে এবং এর মধ্যে শাক-সবজি উৎপাদিত হয়। একইভাবে কোকোডাস্ট’র ব্যাগেও একই পদ্ধতিতে শাকসবজি চাষাবাদ করলে ৪/৫ মাস পর্যন্ত শাক-সবজি খাওয়া যায়।
নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবদুল হাই জানিয়েছেন ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে কলাগাছ ও কোকোডাস্ট’র ব্যাগে ছোটখাট সব শাকসবজি চাষাবাদ করা যায়। যেমন, মূলা, শালগম, ওলকপি, ফূলকপি, বাধাকপি, লালশাক, ডাটা শাক, পালংশাক, পুঁইশাক, বাটিশাক, বথুয়াশাক, লেটুসপাতা, পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, বিলাতী ধনেপাতা, বিভিন্ন প্রকার মরিচগাছ ইত্যাদি চাষাবাদ করা যায়। চীন, জাপান, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন কৃষি প্রধান দেশে এই পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষাবাদ করে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। আমাদের দেশের জলাবায়ুও এই ভার্টিক্যাল পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষাবাদে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু আন্তরিকতা ও উদ্যোগের। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে কোন পরিবারকেই বাজারের শাক-সবজির উপর নির্ভর করতে হবে না। প্রয়োজনীয় শাক-সবজি হাতের নাগালেই পাওয়া যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ