Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

হানিফ ফ্লাইওভারের মুখেও দীর্ঘ যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভোগান্তি - ৬

| প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নূরুল ইসলাম : ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনে মহাসড়কের প্রায় ৭ কিলোমিটার আবার ৮ লেনের। কাঁচপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এই ৮ লেন মহাসড়ক মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে রাজধানীকে প্রবশ করেছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার পথে হানিফ ফ্লাইওভারের মুখে সেই মেঘনা- গোমতী সেতুর মতোই যন্ত্রণা। দিনে রাতে এখানে যানজট লেগে থাকে। কখনও কখনও এ যানজট হানিফ ফ্লাইওভার থেকে রায়েরবাগ হয়ে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়। ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তাটি মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হলেও তা গত চার বছর ধরে চলাচলের অযোগ্য। সরু রাস্তাটি ধরে গাড়িগুলো রাজধানীতে প্রবেশ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখিন হলে পেছনের দিকে লম্বা সারি হয়। ক্রমে তা দীর্ঘ যানজটে পরিণত হয়। তারপরেও এখানে কখনও পুলিশ দেখা যায় না। অভিযোগ রয়েছে, মহাসড়ক ধরে আসা গাড়িগুলোকে ফ্লাইওভারে উঠতে বাধ্য করার জন্য হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তাটি গত চার বছরেও সংস্কার করা হয়নি। অথচ এটি ফ্লাইওভারের সাথেই নতুন করে করার কথা ছিল। এ কাজে ডিএসসিসি’র এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশ আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফ্লাইওভারের মুখেও লোকাল বাসগুলো দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় যানজটের এটাও একটা বড় কারন। অথচ এ বিষয়ে ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ সবাই নীরব।
ভুক্তভোগি যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত আসতে যে সময় লাগে, কাঁচপুর সেতু পার হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করতে তার চেয়ে বেশি সময় লাগে। কখনও কখনও চার ঘণ্টায় মেঘনা সেতু পর্যন্ত আসা গেলেও কাঁচপুর সেতু পার হয়ে ঢাকায় ঢুকতে ৫ ঘণ্টাও লেগে যায়। এটা যাত্রীদের জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক।
হাইওয়ে পুলিশের মতে, চার লেনের মহাসড়ক ধরে গাড়িগুলো যখন দুই লেনের মেঘনা সেতুতে প্রবেশ করে তখন গাড়িগুলোর গতি কমে যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য বিকল্প সেতু চালু না হওয়া পর্যন্ত এ যানজট থেকে রেহাইয়ের উপায় নেই। অথচ বাস্তবতা ভিন্ন। মেঘনা-গোমতী সেতুর টোলপ্লাজার সবগুলো বুথ খোলা থাকলে গাড়ির গতি কিছুক্ষণের জন্য সামান্য কমলেও যানজটের ভোগান্তি হয় না। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে মেঘনা সেতুতে যানজটের কবলে পড়ে চট্টগ্রামমুখি গাড়িগুলো। সাড়ে ১১টার দিকে মহাসড়কের দাউদকান্দি সেতুর কাছে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি সরাতেই লেগে যায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময়। তার উপর টোল আদায়ে ধীর গতির কারনে গাড়িগুলো আটকে থাকে দীর্ঘ সময়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে টোল প্লাজার সবগুলো বুথ খোলা না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। গত বৃহস্পতিবারে গাড়ির চাপ বেশি থাকার পরেও সবগুলো বুথ খোলা থাকায় যানজট হয়নি বলে হাইওয়ে পুলিশ জানায়।
এদিকে, মহাসড়ক ধরে ঢাকার দিকে আসার সময় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের মুখে যানজট নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ অনেক। সকালে পিক আওয়ারে এখানে ঢাকামুখি গাড়ির ভিড়ে দীর্ঘ যানজটে মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ৮ লেন মহাসড়ক ধরে ঢাকামুখি গাড়িগুলো এসে ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যেতে চাইলেও পারবে না। ফ্লাইওভারের পাশ দিয়ে ঢাকায় প্রবেশের রাস্তাটি ১৪ ফুটের মতো প্রশস্ত। এই রাস্তা দিয়ে একটা গাড়ি কোনো মতে প্রবেশ করতে পারে। সেখানে একটি রিকশা বা ছোট গাড়ি থাকলে গাড়িগুলো প্রবেশ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখিন হয়। কিছুদিন আগে এই রাস্তা সংলগ্ন ড্রেন করেছে সিটি কর্পোরেশন। তাতে জায়গা কমে রাস্তাটি একেবারে সরু হয়ে গেছে। ফ্লাইওভারের মুখ থেকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তাটির কিছু অংশ সংস্কার করা হয়েছে। বাকী অংশ এখনও খানাখান্দে ভরা।
আবার ফ্লাইওভারের প্রবেশের মুখে ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলাচলকারী লোকাল বাসগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। যাত্রী ওঠানামা করে। এতে করে মহাসড়ক ধরে আসা যানবাহনগুলো ফ্লাইওভারে উঠতে গিয়ে বাধার সম্মুখিন হয়। প্রায়ই দেখা যায়, ফ্লাইওভারের মুখে বন্ধ করে বাসগুলো যাত্রী ওঠাচ্ছে। এতে করে পেছনের দিকে দীর্ঘ সারি তৈরী হয়। আবার ফ্লাইওভার সোজা এসে কিছু কিছু গাড়ি নিচের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন সকাল বিকাল রাতে ফ্লাইওভারের মুখে এভাবে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হলেও এখানে কোনো পুলিশ থাকে না। এতে করে চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা বেড়ে গিয়ে যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। জানতে চাইলে কুমিল্লা রুটের চালক মহসীন বলেন, ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তাটি কোনো রাস্তাই নয়। চার লেন থেকে ৮ লেন হয়ে একটা মহাসড়ক এরকম একটি সরু রাস্তায় মিশে কিভাবে? কারা করেছিল এটার প্ল্যান? ওই চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তবুও যদি রাস্তাটি ভালো থাকতো। চার বছর ধরে এই সামান্য রাস্তাটি সংস্কার করা হচ্ছে না কার স্বার্থে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যানজট

১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
৯ জানুয়ারি, ২০২৩
১৯ ডিসেম্বর, ২০২২
২৭ নভেম্বর, ২০২২
২৯ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ