বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কক্সবাজার ব্যুরো : কক্সবাজারে রেললাইন নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নিতে তৎপর হয়ে উঠেছে একটি জালিয়াত চক্র। এই জালিয়াত চক্রে রয়েছে ১৪ জনের একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটটি ভূমির প্রকৃত মালিকদের পাশ কাটিয়ে অধিগ্রহণের জমির ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকারি উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ করতে মরিয়া এসব দালালের বিরুদ্ধে দ্রæত সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নবাসী।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শত শত প্রকৃত ভূমির মালিক মানববন্ধনে অংশ নেন। এরপর তারা জালিয়াত ও দালাল চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনকে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে জমির প্রকৃত মালিকরা বলেন, ৭৬ বছর পর উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশের আওতায় কক্সবাজারবাসীর প্রাণের দাবি রেল লাইনের যাত্রা শুরু হয়েছে। কিন্তু একটি দালাল সিন্ডিকেট অধিগ্রহণের জমির ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেটে সরাসরি ১৪ জনের একটি চক্র জড়িত।
তারা হলেন- শহরের উত্তর তারাবনিয়ারছড়া এলাকার আবুল ফজলের ছেলে শামশুল হুদা ও শহিদুল হুদা, জানার ঘোনা এলাকার মৃত ফজল আহমদের ছেলে নুরুল হক, নুরুল আমিন, সিরাজুল হক, নুরুল আবছার, হাজী পাড়া এলাকার আবদু ছাত্তার, পিএমখালী এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম, জানার ঘোনা এলাকার আমিন উল্লাহ, দক্ষিণ ডিককুল এলাকার মৃত ফজল আহমদের ছেলে সৈয়দ আলম, পশ্চিম লারপাড়া এলাকায় মৃত মো. হাশেমের ছেলে আবু তালেব, আবদুচ ছালামের ছেলে মোহাম্মদ আমিন, ইসমাইলের ছেলে রুবেল ও মৃত নুর আহমদের ছেলে ইসমাইল। এদের সাথেপ্রশাসনের কিছু রাঘব বোয়াল জড়িত থাকারও অভিযোগ উঠেছে।
ভূক্তভোগি আব্দুল হামিদ ও বেলাল জানান, সরকার রেল লাইন স্থাপনের জন্য এলএ মামলা নং ৪/১৬-১৭ রুজু করে এবং জমির মালিকদের নামে এওয়াজনামা প্রস্তুত করে ৭ ধারায় নোটিশপ্রদান করেন। কিন্তু দালাল চক্রের সদস্যরা ভুয়া খতিয়ান ও দলিল তৈরি করে নিজেদের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাদের সাথে অসাধু কিছু সরকারি কর্মচারিও রয়েছে। ইতোপূর্বে প্রশাসনের এসব অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে মাতারবাড়ীর বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আতœসাতের ঘটনা ঘটেছিল।
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন যথাক্রমে রাজনীতিক নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বাহাদুর, কক্সবাজার সুজন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক মাহবুবর রহমান, জমির ক্ষতিগ্রস্থ মালিক আমির আলী, অ্যাডভোকেট শাহাদত হোসেন, নুরুল আলম, আবদুল হামিদ ও মোঃ ইলিয়াস প্রমুখ।
এদিকে এই চক্রের তিন সদস্যাকে গত মঙ্গলবার আটক করেন প্রশাসন। এসময় ৬ বস্তা ভুয়া খতিয়ানসহ নকল ওয়ারিশ সনদের প্যাড, চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও মেয়রের সীল উদ্ধার করা হয়।
এসময় আটক সদর উপজেলা পিএমখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ নয়া পাড়া এলাকার মকবুল আহমদের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম, একই ইউনিয়নের মাইজ পাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে নুরুল আবছার ও লিংকরোডস্থ ছাদুর পাড়া এলাকার সৈয়দুল হক বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।
সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বাহাদুর বলেন, চক্রের অন্য সদস্যদের যদি দ্রæত সময়ে আইনের আওতায় আনা না হয় জমির প্রকৃত মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। দালাল চক্রের সদস্যরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারা বিভিন্নভাবেপ্রতারণা করেই যাবে। তাদের সাথে স্থানীয় এল.এ অফিসের কতিপয় কর্মচারি জড়িত রয়েছে। যার কারণেপ্রকৃত মালিকরা উক্ত কর্মচারিদের হাতে বার বার নাজেহাল হয়ে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না।
এবিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন বলেন, ভয়াবহ জালিয়াত চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। বাকি সদস্যদের যেকোনোভাবে আইনের আওতায় আনা হবে। মূলত তারা সরকারের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ করার জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে গত মঙ্গলবার থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির লোকজন যাচাই বাছাই করেই কক্সবাজার সদরে রেলের অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ দিবে আসল জমির লোকজনকে।প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়েই জমির চেক বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।