ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভরাডুবি হবে জেনেই ত্রæটিপূর্ণ তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়ন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জেনে শুনে এবং সরকারের আদেশ পেয়ে ত্রুটিপূর্ণ তফসিল ঘোষণা করেছেন। আর নির্বাচন কমিশনের ত্রুটিপূর্ণ তফসিলের কারণেই সংক্ষুব্ধরা রিট করার সুযোগ পেয়েছেন। গতকাল (বুধবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের শূন্যপদে নির্বাচন ও স¤প্রসারিত অংশের কাউন্সিলর নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া এ নির্বাচন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এ বিষয়ে রিজভী বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সিইসি আওয়ামী লীগের মাষ্টারপ্লানেরই অংশ হিসেবে কাজ করছে। ডিএনসিসিসহ ঢাকা সিটিতে যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে ক্ষমতাসীনদের ভরাডুবি হবে এটা সরকারি দল নিশ্চিত জানে। গণমাধ্যমেও এ রকম খবর বেশ কয়েকদিন ধরে প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও এ বছর হওয়ার কথা। তাই ঢাকা সিটিতে বিপুল ভোটে পরাজিত হলে আওয়ামী লীগের জাতকুল কিছুই থাকবে না। তাই সরকারের নির্দেশে আওয়ামী লীগের জাতকুল রক্ষা করার জন্য নির্বাচন কমিশন আইনি ক্রটি রেখে তফসিল ঘোষণা করেছেন। এটা সরকারেরই নীল নকশার একটা অংশ। তিনি বলেন, গত ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এখন যিনি প্রার্থী হবেন তিনি জানেনই না তিনি ভোটার কিনা। তাছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে বলে বলা হয়েছে। ভোটার তালিকা যদি প্রকাশ করা না হয় তাহলে তারা সেই ৩০০ জন ভোটার কাদেরকে বাছাই করবে। এছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৫ (৩) উপধারা অনুযায়ী ‘মেয়রের পদসহ কর্পোরেশনের শতকরা ৭৫ ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, কর্পোরেশন, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’এ আইন মতে, উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড মিলে কাউন্সিলর শতকরা ৭৫ ভাগ হয় না। কারণ নতুন ১৮টিতে তো নির্বাচনই হয়নি। তাছাড়া, স¤প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে যারা কাউন্সিলর হবেন তারা কত দিনের জন্য নির্বাচিত হবেন। তারা কি পাঁচ বছরের জন্য হবেন, না আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। তা নির্ধারণ করেননি কমিশন। এ সকল ত্রুটির কারণেই রিট করার সুযোগ পেয়েছেন সংক্ষুব্ধরা। ডিএনসিসি নির্বাচন বানচাল করা পূর্বপরিকল্পিত নীলনকশা, এটি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ প্রযোজনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির এই নেতা।