রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সাতক্ষীরা থেকে আব্দুল ওয়াজেদ কচি : প্রকাশ্যে চলছে অবৈধ কাজ, কোনো কিছু লুকানো নয়। সবই খোলামেলাভাবে চলে কিভাবে? দেখলে মনে হয় এখানে অবৈধ কাজের যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে ইটভাটা মালিকরা। এমন সব মন্তব্য ভুক্তভোগী মহলের। দীর্ঘদিন ধরে পাটকেলঘাটা টু দলুয়া গ্রামীণ সড়কের পাশেই আচিমতলা গ্রামে জনবসতি কৃষিজমি ও সবুজ বেষ্ঠনীর মধ্যে যুগীপুকিরিয়া গ্রামের মৃত খোকা মোড়লের ছেলে রেজাউল ইসলাম বাবু মেসার্স ফারাহ ব্রিকস নামে ইটভাটা নির্মাণপূর্বক অবৈধভাবে কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নন বোর্ড একাধিকবার কপোতাক্ষ পাড়ের পানিবদ্ধ রক্ষা বাঁধের মাটি কর্তন না করার জন্য নোটিশ এবং গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেও কোনোভাবে রোধ করা যায়নি। কপোতাক্ষ পাড়ের কাটাখালি নদীর ভেড়িবাঁধের মাটি ১০টি ট্রলিতে করে ৫০-৬০ জন শ্রমিক নিয়ে হাজার হাজার ঘণ ফুট মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে আসছে। এ সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশকে জানালে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এসব অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য ওই ভাটা মালিক আচিমতলা গ্রামের কিয়ামুদ্দিন মোড়লের ছেলে আন্তবিভাগীয় মোটরসাইকেল চোর চক্রের হোতা শহিদুল মোড়লকে (৪৫) নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। এর আগেও বহুবার কপোতাক্ষ বেড়িবাঁধের লাখ লাখ ঘনফুট মাটি কেটে বাণিজ্যিকভাবে ইট প্রস্তুত করে আসছে দেদার। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার শতাধিক ব্যক্তি আপত্তি জানিয়ে লিখিতভাবে গণদরখাস্ত দেয়াতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এসব অবৈধ কর্মকান্ডের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদফতর সবই জানে, কিন্তু অঞ্জাত কারণে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। এসব বিষয়ে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে অসংখ্যবার সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হলেও কর্তৃপক্ষের যেন ঘুম ভাঙছে না। বরং এ ইটভাটা মালিক অবৈধ কর্মকান্ড আরো দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন। ইটভাটা মালিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানালেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই কর্মকান্ড চালানো হচ্ছে। অনুসন্ধ্যান করে জানা গেছে, ইটভাটাটির বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। নেই জেলা প্রশাসনের অনুমোদন। জেলা প্রশাসনের জুডিশিয়াল মুন্সিখানার প্রধান সহকারী মোশারফ হোসেন জানান, মেসার্স ফারাহ ব্রিকস মালিক বিগত ২০১৪ সালে একবার অনুমোদন নিয়েছিল। পরবর্তীতে আর আবেদনও করেনি।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুযায়ী জনবসতি, গ্রামীণ সড়ক ও কৃষি জমির মধ্যে কোনোভাবেই ইটভাটা গড়ে তোলা যাবে না। তা ছাড়া পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে কার্জক্রম পরিচালনাকারীদের জেল-জরিমানার পাশাপাশি সব মালামাল জব্দপূর্বক বাজেয়াপ্ত করার বিধান থাকলেও কোনোটিরই প্রয়োগ নেই। স্থানীয় বাসিন্দা মাটির কাটার প্রত্যক্ষদর্শী কাটাখালী গ্রামের আজিজুর রহমান ও সাজ্জাত শেখ, আচিমতলা গ্রামের ইদ্রিস আলী, মনিরুল ইসলাম, মনজুর হোসেন, মোস্তাফিজুর মোড়ল ও আবুল কাশেমসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির অভিযোগ সারা বছর ধরে এভাবে বেড়িবাঁধের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বছরের পর বছর মেসার্স ফারাহ ব্রিকস মালিকের এসব অবৈধ কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। ইটভাটার চিমনি থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোয়া ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফলমূলের গাছপালা ক্রমান্বয়ে ন্যাড়া হয়ে মরে যাচ্ছে। এ ছাড়া ইটভাটার মাটি বহনকারী লরি বা মাটি ভর্তি ট্রাকের অবিরাম চলাচলে সড়কের পিচ উঠে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মওসুমে এসব গর্তে পানি জমে জনসাধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এসব মাটি ভর্তি ট্রাকের উপর থেকে মাটি পড়ে রাস্তা ধুলায় চলাচলরত মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ধুলা বালিতে গাছগাছালিসহ রাস্তার পাশের ঘরবাড়ি, কাপড় চোপড় বিবর্ণ হয়ে মানুষের বসবাসে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। আর এসব ট্রাকের মাটি রাস্তায় পড়লে তার পর যদি বৃষ্টি হয় তাহলে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে চলাচলে অহরহ দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। বহুবার প্রতিকারের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত এলাকার মানুষের মন্তব্য, এভাবে আর কত দিন চলবে অবৈধ কর্মকান্ড, আদৌ কি বন্ধ হবে না?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।