রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
চিতলমারী (বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় জমে উঠেছে মিষ্টি পানির দেশি মাছের শুঁটকিপল্লী। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র এই পাঁচ মাস সরব থাকে শুঁটকি পল্লীর ক্রেতা, বিক্রেতা ও শ্রমিকেরা। মিষ্টি পানির এই শুঁটকি মাছ রফতানি হচ্ছে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চান্দিনা, সৈয়দপুর, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতিটি শুঁটকি পল্লী হতে প্রতিসপ্তাহে পাঁচ থেকে আট মণ মাছ রফতানি হচ্ছে। তবে চিতলমারী অঞ্চলের মানুষের কাছে শুঁটকি মাছের চাহিদা এখনো তৈরি হয়নি।
পাইকারি ক্রেতা রফিকুল ইসলাম ও বিক্রেতা বাদশা শেখ জানান, তিন কেজি কাঁচামাছ শুকানোর পর এক কেজি পরিচ্ছন্ন শুঁটকি মাছ পাওয়া যায়। কাঁচামাছ প্রতিকেজি ২৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা দরে ক্রয় করা হয়। তা প্রক্রিয়ার পর শুঁটকি তৈরি শেষে বিক্রি হয় প্রতি কেজি বাইনমাছ ৮০০ টাকা, শৈলমাছ ৭০০ টাকা, টেংরামাছ ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকা ও পুঁটিমাছ ১০০ টাকা দরে।
স্থানীয় শুটকিব্যবসায়ী মো. বাদশা শেখ জানান, চিতলমারী উপজেলা যেহেতু মিষ্টি পানির ঘেরপ্রবণ এলাকা রয়েছে বড় বড় বিল, তাই প্রাকৃতিক নিয়মেই এখানে প্রচুর পরিমাণে ছোট মাছ জন্মায় এবং মারা যায়। তাই মানুষের চাহিদা বিবেচনা করে এইসব মাছ শুকিয়ে বাজারজাতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে প্রতি বছর হাজার মন মিষ্টিপানির ছোট মাছ বিনষ্ট না হয়। চিতলমারী উপজেলার চরকুরালতলা, বারাশিয়া, কলিগাতী, হিজলা, ডুমুরিয়া গ্রামে গত তিন বছর ধরে সাদা মাছ শুকিয়ে বিক্রির প্রবণতা শুরু হয়েছে। হেমন্তকালে অর্থাৎ অগ্রহায়ণ মাসে শুঁটকি তৈরির আয়োজন শুরু করা হয়। চিংড়ি ও সাদা মাছের আড়তগুলো হতে প্রতিদিন সকালে অল্প দামে তাজা ছোট মাছ ক্রয় করা হয়। শুঁটকি পল্লীতে আনার পর নারী শ্রমিকেরা তা কুঁটাকুটি (মাছের আঁশ ছাড়িয়ে বেছে পরিস্কার) করে। এরপর মাছগুলো পরিস্কার পানিতে ধুয়ে বানায় (মাঁচা) শুকানো হয়। তিন-চার দিনের রোদে মাছগুলো শুকিয়ে শক্ত হয়। প্রস্তুত থাকে ক্রেতা পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা পল্লীগুলো হতে মাছ নিয়ে সরবরাহ করে দেশের বিভিন্ন বাজারে।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে চরকুরালতলা শুঁটকি পল্লীর সামনে দেখা হয় পাইকারি ক্রেতা রফিকুল ইসলামের সাথে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা হতে তিনি এসেছেন। রফিকুল জানান, এখানে গত দুই বছরে মাছ কিনতে এসে কোন প্রকার হয়রানি কিংবা নিরাপত্তার অভাব হয়নি। দিন দিন মিষ্টি পানির শুঁটকি মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তার অভিমত। পরিবেশ দূষণের কথা চিন্তা করে চরকুরালতলা গ্রামে ফাঁকা মাঠের মধ্যে ১৩ শতক জমিতে এ বছর শুঁটকি পল্লী স্থাপন করেছেন বাদশা শেখ, দাউদ শেখ, এমদাদ মোল্লা ও সোয়েব গাজী।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সজল কান্তি বিশ্বাস বলেন, মিষ্টি পানির ছোট মাছ অত্যন্ত পুষ্টিকর, কিন্তু কষ্ট করে কোটা-বাছা করতে হয় বলে মানুষ এখন তা তেমন একটা খেতে চায় না। মিষ্টি পানির শুঁটকি মাছে প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-ডি রয়েছে। এতে দেহের হাড় ক্ষয়রোধসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। তবে চিতলমারী এলাকার মানুষের শুঁটকি মাছ খাওয়ার প্রবণতা নেই।
চিতলমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, স্বউদ্যোগে চরকুড়ালতলার একটি শুঁটকি পল্লী পরিদর্শন করেছেন, সেখানে কোনো মাছে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। মাছে বিষ প্রয়োগ এবং শিশুশ্রমিক ব্যবহার না করলে কোনো ক্ষতি নেই। শুঁটকি পল্লী তৈরি ও পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই বলেও তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।