বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উন্নয়ন মেলার নামে দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন: অর্থ অপচয় নিয়ে সর্বত্র সমালোচনা
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : বিশেষ মহলের নেক নজর লাভ তথা প্রথম পুরস্কার লাভের আশায় সদ্য সমাপ্ত উন্নয়ন মেলায় লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জায় প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করেও কাঙ্খিত পুরস্কার পায়নি নরসিংদীর গণপূর্ত বিভাগ। দামী প্যাভিলিয়ন না করেও উন্নয়ন উপকরণ, তথ্য ও উন্নয়ন চিত্র দিয়ে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছে এলজিইডি। পক্ষান্তরে সাধারণ সচেতন দর্শকদের কাছে কঠোরভাবে সমালোচিত হয়েছে নরসিংদীর গণপূর্ত বিভাগ ও কর্মকর্তারা। মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সংস্থাসমূহ ও সচেতন জনগণ গণপূর্ত বিভাগের এই দামী প্যাভিলিয়নকে দৃষ্টিকট,ু অসম ও অসঙ্গত প্রতিযোগিতা বলে আখ্যায়িত করেছে। দর্শক বলেছেন, মাত্র ৩ দিন স্থায়ী এবারের উন্নয়ন মেলায় ৯৫ টি প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়। স্বল্পমেয়াদী ও অ-বাণিজ্যিক মেলার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৈরী করা সকল প্যাভিলিয়নেরই মূল ভিত্তি ছিল বাঁশ ও কাপড়। এই বাঁশ-কাপড়ের প্যাভিলিয়নগুলোতেই সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা তাদের নিজ নিজ উন্নয়ন উপকরণ ও উন্নয়ন চিত্র দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণকারী সরকারের উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে ছিল এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা পরিষদ, পৌরসভাসহ বিভিন্ন সংস্থা। সকল উন্নয়ন সংস্থাই বাঁশ-কাপড়ের কাঠামোর ভিতরে নিজেরা সুন্দর দৃষ্টিনন্দন করে প্যাভিলিয়নগুলো সাজিয়ে নিয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ঘটিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। বাঁশ-কাপড়ের কাঠামোর বাইরে গিয়ে তারা সিসি ঢালাই দিয়ে তার ওপর দামী টাইলস দিয়ে ফ্লোর বা মেঝে তৈরী করেছে। এরপর তারা দামী পারটেক্স দিয়ে ইটের দেয়ালের মতো করে চারদিকে দেয়াল নির্মাণ করেছে। এই পারটেক্সের ওপর দামী প্লাস্টিক ইমালশন দিয়ে রং করে তৈরী করেছে ইমারত সদৃশ্য প্যাভিলিয়ন। সামনে ইট দিয়ে ফ্ল্যাট সয়েলিং করে করিডোর তৈরী করেছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে এ প্যাভিলিয়ন তৈরী করতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এত টাকা ব্যয় করে প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করলেও প্যাভিলিয়নের ভিতরে উন্নয়ন উপকরণ, উন্নয়ন তথ্য ও উন্নয়ন চিত্র উল্লেখ করার মতো কিছুই দেখা যায়নি। উল্লেখ্য যে, সরকারের পক্ষ থেকে মেলার জন্য বাজেট ছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। প্রশ্ন উঠেছে গণপূর্ত বিভাগ এই প্যাভিলিয়ন নির্মাণের বাকি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা কোথায় পেয়েছে। সারা উন্নয়ন মেলায় কোন সংস্থাই যেখানে ৩ দিনের মেলার জন্য এত টাকা ব্যয় করে প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করার কথা চিন্তাও করেনি, সেখানে গণপূর্ত বিভাগের এত টাকা ব্যয় করে প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করার রহস্য কি ? অনেকে বলেছেন, নরসিংদী গণপূর্ত বিভাগের বিরুদ্ধে বহু দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এখানে বছরে যদি ১০ টি টেন্ডার হয় তবে ৮ টি টেন্ডারই হয় ঘুপচি বা গোপন পদ্ধতিতে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকায় দূর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। শুধু তাই নয় গণপূর্ত বিভাগের লোকজনই নামে বেনামে লাইসেন্স করে নিজেরাই ঠিকাদারী করে কামাই করছে লাখ লাখ টাকা। অনেক কর্মকর্তা চাকুরীও করছেন, ঠিকাদারীও করছেন। দর্শকরা বলেছেন, মেলায় যদি প্রতিযোগিতা থাকে তবে মেলা কর্তৃপক্ষের উচিত প্যাভিলিয়ন নির্মাণে নির্ধারিত ব্যয়ের পরিমাণ উল্লেখ করা। এখানে ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারিত না থাকায় গণপূর্ত বিভাগ এই অসম ও অসঙ্গত প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পেয়েছে। এত টাকা ব্যয় করেও তারা প্রথম পুরস্কারতো পায়ইনি, প্রথম ক্যাটাগরিতেও পরেনি। প্রথম ক্যাটাগরি ছিল উপকরণ ও উন্নয়ন চিত্র প্রদর্শন। এ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে এলজিইডি, তৃতীয় স্থান পেয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। দ্বিতীয় ক্যাটাগরি ছিল স্টল সজ্জা। এতে প্রথম স্থান লাভ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে গণপূর্ত বিভাগ, তৃতীয় স্থান লাভ করেছে আনসার ভিডিপি ও ফায়ার সার্ভিস সমন্বয়ে সুরক্ষা সেবা। তৃতীয় ক্যাটাগরি ছিল সেবা। এতে প্রথম স্থান পেয়েছে প্রাইমারী ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, দ্বিতীয় হয়েছে জনশক্তি রফতানী বিভাগ ও তৃতীয় হয়েছে শক্তি ফাউন্ডেশন। চতুর্থ ক্যাটাগরি ছিল বিশেষ ক্যাটাগরি। এতে প্রথম হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দ্বিতীয় হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পঞ্চম ক্যাটাগরি ছিল র্যালী। এতে প্রথম স্থান লাভ করেছে নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এবং দ্বিতীয় হয়েছে আইডিয়াল স্কুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।