Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কারুশিল্পীদের ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার : সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


মোক্তার হোসেন মোল্লা, সোনারগাঁ থেকে : শীঘ্রই সারা বাংলাদেশে গ্রামীন কারুশিল্পীদের বাছাই করে তালিকা প্রনয়ণ করা হবে। বর্তমানে কারুশিল্পীরা কারুপন্য উৎপাদন করতে গিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই তারা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। দক্ষ কারুশিল্পীদেরকে ভাতা প্রদানের মাধ্যমে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল সকালে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যে বাংলাদেশের শীতল পাটি, জামদানি শাড়ী, বাউল গান ও মঙ্গল শোভা যাত্রা স্থান পেয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। আমরা কারুশিল্পের প্রসারে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া সোনারগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পানাম সিটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে আশা করি জাদুঘরের বড় সরদার বাড়ীর মতো পানাম সিটি সংস্কারের মাধ্যমে আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে। মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উদ্বোধন করার পর মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিনূর ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট শামছুল ইসলাম ভূইঁয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ও নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নারায়নগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, এডভোকেট নূর জাহান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সোহেল রানা, ডেপুটি কমান্ডার
ওসমান গনি, ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক রবিউল ইসলাম প্রমূখ।
বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতি ও লোক কারুশিল্পের নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষে বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁওয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া
এ উৎসবে বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬০ জন দক্ষ কারুশিল্পীকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে । তাদের জন্য ৩০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে । এদের মধ্যে ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের নক্শি পাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নক্শিকাঁথা, নক্শি হাতপাখা, মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, মানিকগঞ্জের তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁয়ের পাটের কারুশিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশ শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র ও ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্প। এছাড়াও উৎসবে প্রতিদিন বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীন খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা ও পিঠা প্রদর্শনী করা হবে।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ জানান, আবহমান গ্রাম বাংলার বিলুপ্ত প্রায় লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছরের মতো এবারও সোনারগাঁওয়ে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। গ্রামীন লোক সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম “কাঠের কারুশিল্পের প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন” শিরোনামে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে এবারের উৎসবে। লোকজ উৎসব প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আগামী ১২ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত চলবে এ উৎসব ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ