Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাকিমনগরে সরকারি বনাঞ্চলের পাশে ইটভাটা

রাঙ্গুনিয়া জমির টপসয়েল পুড়ছে, বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চৌধুরী : রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি হাকিমনগর পাহাড়ি এলাকায় সরকারি বনাঞ্চলের পাশে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে পবিরেশ নষ্ট হচ্ছে। ফসলি জমির মাটির টপসয়েল সংগ্রহ, টিলা-পাহাড়ের মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে কাঁচা ইট। সরকারিভাবে ১২০ ফুট উচ্চ সম্পন্ন চিমনির নিয়ম থাকলেও ৭০-৮০ ফুট চিমনি ব্যবহার হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের অনুমতি না নিয়ে ইট প্রস্তুত ও বিক্রয় করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি হাকিমনগরে ইছামতি রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক মিয়া মালিকানাধীন জমি ভাড়া নিয়ে লাকী ব্রিকস ওয়ার্কস (এলবিডবিøউ) নামের একটি ইটভাটা গড়ে তোলা হয়। গ্রামের সাদ্দাম হোসেন জানান, ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে সরকারের যে শর্ত আরোপ করা হয়েছে এলবিডবিøউ ইটভাটার ক্ষেত্রে অধিকাংশ নিয়ম কানুন মানা হচ্ছে না। পাহাড় কর্তন ও শর্তভঙ্গের কারণে প্রশাসন গত আর্থিক বছরে এ ইটভাটার ম্যানেজারসহ দু’কর্মকর্তাকে আটক করে এবং লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়।
হাকিমনগর গ্রামের মো. আইয়ুব আলী নামে এক শ্রমিক জানান, চলতি মৌসুমে গত নভেম্বর মাস থেকে ইট প্রস্তুতের জন্য ফসলি জমির উপরি অংশ (টপসয়েল) কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। ভাটার পাশ্ববর্তী এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে পাহাড়-টিলা কেটে মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছ। ১০-১৪ বছরের কয়েকজন শিশু শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে।
শিশু শ্রমিকরা জানান, যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেখানে হাঁড়ভাঙা পরিশ্রম করে বাঁচার তাগিদে টাকা উপার্জন করতে হচ্ছে। পেটের দায়ে মজুরি কাজ করছি। কোমলমতি শিশুরা কাজ করতে গিয়ে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে ইটভাটার মালিকপক্ষ বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়।
লাকী ব্রিকস ওয়ার্কস ইটভাটা জ্বালানিতে কর্মরত কয়লা শ্রমিকরা মুখে কাপড় (মাউস) ব্যবহার করছে না কেউ। কাজ করতে গিয়ে সরাসরি কয়লার ছোট অংশ ও বালি পেটে যাওয়াতে শ্রমিকরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। লাকী ব্রিকস ওয়ার্কস ইটভাটার মালিক মোহাম্মদ মিয়া বলেন, পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি দিয়ে ইট খুবই মজবুত হয়। জমি ও পাহাড় না কাটলে মাটি পাবো কোথা থেকে। প্রশাসনের ঝামেলে এড়াতে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে টাকা দিয়েছি। তাই কেউ কিছুই করতে পারবে না। নিজস্ব নিয়মে ইটভাটা চালাচ্ছি।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল হামিদ বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ২০০ গজের মধ্যে ইটভাটা বেআইনিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। পাহাড় কর্তনের খবর পাওয়া মাত্র অভিযান পরিচালনা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ