Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশাল নগরীতে ড্রেন ও সড়কে নির্মাণসামগ্রী বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন

| প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : ‘বরিশাল মহানগরীরর রাস্তাঘাটগুলো কার ?’ এ প্রশ্ন এখন নগরবাসীর। নগরীর বেশীরভাগ রাস্তা ও কাভার্ড ড্রেনসহ ফুটপাত দখল করে নির্মান সামগ্রী থেকে শুরু করে বিদ্যুতের খুটি ফেলে রাখায় সুস্থ্য স্বাভাবিক পরিবেশ অনেকটাই বিপন্ন। একঘন্টার বৃষ্টিতেই নগরীর বেশীরভাগ ড্রেন উপচে রাস্তাঘাটও সয়লাব হয়ে যায়। ঘন্টার পর ঘন্টা নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে পানি আটকে থেকে সুস্থ্য নাগরিক পরিবেশ বিপন্ন করলেও তা দেখার কেউ আছে বলে মনে করছেন না নগরবাসী। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০ ওয়ার্ডে ৭ জন রোড ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত থাকলেও তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। নগর প্রশাসনসহ নগর পরিষদের কাউন্সিলরদেরও এক্ষেত্রে উদাসীনতা দিন দিন নগরীকে বিপন্ন করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। নগরীর ৩২৪ কিলোমিটার ড্রেনের মধ্যে ১৩৮ কিলোমিটার এখনো কাঁচা। কিন্তু কাঁচা-পাকা সব ড্রেনই ক্রমশ বেদখল হয়ে যাবার পাশাপাশি নানা জঞ্জালে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ফলে ড্রেনের পানি অনেক সময়ই রাস্তায় গড়াচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরেই নগরীর প্রধান সড়কগুলোর অনেক এলাকাই নানা নির্মান সামগ্রীসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপানায় ঢেকে আছে। নগরীর মেজর এমএ জলিল সড়কের বটতলা থেকে নবগ্রাম রোডÑচৌমহনী পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকার এক-তৃতীয়াংশই সামান্য বৃষ্টি হলে পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। ঐ সড়কের মনসুর কোয়ার্টার এলাকা থেকে অক্সফোর্ড মিশন রোডের মুখ পর্যন্ত গত তিন বছর ধরে দুটি বাড়ী নির্মান করা হয়েছে, তার নির্মান সামগ্রী মূল রাস্তার ওপর রেখেই। ফলে রাস্তার পাশের ড্রেনÑপকেট দিয়ে বালু ও সুরকীসহ বিভিন্ন নির্মান সামগ্রী মূল ড্রেনে প্রবেশ করে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেছে। এখনো মনসুর কোয়ার্টারের সামনে একটি বহুতল বাড়ীর নির্মান কাজ চলছে, যার প্রায় সব নির্মান সামগ্রীই মূল সড়কের অর্ধেকটাই দখল করে আছে। উপরন্তু ড্রেন-পকেট দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু ও পাথরসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী মূল ড্রেনে প্রবেশ করছে।
গত কয়েক বছর ধরে একই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলেও নগর ভবনের কর্তাদের মত স্থানীয় কাউন্সিলরও স্বেচ্ছা অন্ধত্বে ভূগছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
বিগত নগর পরিষদের সময়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর কাশীপুর এলাকা থেকে আমতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু করে সিটি করপোরেশন। সড়ক ও জনপথ অধিদফ্তরের ঐ রাস্তা কথিত ৪ লেনে উন্নীত করনের কাজ যেনতেন প্রকারে শেষ করা হয় বর্তমান নগর পরিষদের সময়ে। কিন্তু বাস্তবে ৩ লেনের এ সড়কের মূল ক্যরেজওয়ের দুপাশের বর্ধিত দুটি লেনের সম্পূর্ণটাই বেদখল হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। মহাসড়কের দুপাশের ঐ দুটি লেন এত নিম্নমানে করা হয়েছে যে, তা ‘হাল্কা যানবাহন চলাচলের জন্য নির্ধারিত’ বলে ঘোষনা দিয়েছে সিটি করপোরেশন। কিন্তু বর্ধিত সে রাস্তার প্রায় পুরোটাই বেদখল হয়ে গেছে অনেক আগে। ‘শুধু ঠিাকাদার পালন আর জনগনের অর্থ বেপথে ব্যয় ছাড়া কোনো সুফল নগরবাসী পায়নি’ বলে অভিযোগ নগরবাসীর। ঐ মহাসড়কের সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের খেলার মাঠের পাশের অংশের ফুটপাথ গত মাসখানেক যাবত বড় বড় বৈদ্যুতিক খুটি ফেলে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু এসব বেআইনী কর্মকান্ড দেখার কেউ নেই। প্রতিনিয়ত ড্রেনগুলো ভড়াট হয়ে বরিশাল মহানগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা যেভাবে রুদ্ধ হচ্ছে, তাতে আগামী ভড়া বর্ষা মওশুমে এ নগরী ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে পড়তে পারে।
এ ব্যপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বিষয়গুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়াসহ জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের কথা জানান। তবে গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত নগরীর কোন সড়ক ও ড্রেনের ওপর থেকে নির্মান সামগ্রীসহ বৈদ্যুতিক খুটি অপসারন করা হয়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ