রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) থেকে মোক্তার হোসেন মোল্লা : সোনারগাঁওয়ে কৃষি জমির উর্বর মাটিতে তৈরি হচ্ছে ইট। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রির সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে জামপুর ইউনিয়নে। এখানকার বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের তিন ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। প্রভাবশালী একটি চক্রটি এক কোদাল/দুই কোদাল (৬ ইঞ্চি/১২ ইঞ্চি) মাটি কেটে নেবার চুক্তিতে কিছু কৃষি জমি ক্রয় করে। কিন্তু ক্রয় করা জমির পাশের জমি ক্রয় না করেই জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যায় মাটি। ফলে মাটি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে কোনভাবেই রক্ষা পাচ্ছেনা সাধারণ কৃষকদের তিন ফসলী কৃষি জমি।
সূত্র জানায়, জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামিম শিকদার শিপলুর পরোক্ষ নেতৃত্বে বস্তল গ্রামের জয়নালের ছেলে গোলজার, মদনপুরের হাবু গ্রæপের হাবিব, হাতুড়িপাড়া গ্রামের ওলিউল্লাহ’র ছেলে গোলজার, বস্তল গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে ডিস আল-আমিন, আব্দুল মজিদের ছেলে সুমন, নুর মোহাম্মদের ছেলে আলমগীর, করম আলীর ছেলে আলী আকবর, আহাদ আলীর ছেলে মফিজুল, আকতুর ছেলে বাতেন, মফিজুলের ছেলে সোহাগ, কলতাপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শাহিন, ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে লোকমান, জামপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন ও জামপুর ইউনিয়ন আব্দুন নুরসহ ২০/২৫ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তল, কাজীপাড়া,তিলাবো ও ব্রা²ণবাঘা মৌজায় প্রায় ৭শত বিঘা তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে নিয়ে ইটভাটায় চড়া দামে বিক্রি করছে। স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি জমির মাটি এতটাই গভীর করে কেটে নিয়ে যায় যে যে কেউ দেখলে পুকুর না বলে উপায় থাকবেনা। তাদের মতে, প্রতিটি জমি ভেকু দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে কেটে নিচ্ছে মাটি সন্ত্রাসীরা। ফলে পাশের জমির মাটি স্বভাবতই ওই গর্তে পড়ে যায় এবং তা বিনা টাকায় ও বিনা অনুমতিতে নিয়ে যায় তারা। ফলে অনেক জমির মালিক বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে।
ফসলি জমি রক্ষায় স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষকরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে গিয়েও কোন সুফল পায়নি। বর্তমানে ফসলী জমি পরিনত হচ্ছে ডোবা ও পুকুরে। ফলে সর্বশান্ত হচ্ছে কৃষকরা। কোন কৃষক মাটি সন্ত্রাসীদের কাছে ফসলী জমির মাটি বিক্রি করতে অস্বীকার করলে তারা রাতের আধারে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত গোলজার হোসেন জানান,আমি কারো জমির মাটি জোরপূর্বক কাটি না। কৃষককের জমির মাটি কিনে ইট ভাটায় বিক্রি করি।
জামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হামিম শিকদার শিপলু অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, তিনি মাটি কাটা’র সাথে জড়িত নন বা কাউকে মদদও দেননা। উপরন্তু মাটি কাঁটা বন্ধ করতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া জানায়, যারা মাটি সন্ত্রাসী তারা আওয়ামী লীগের বা অঙ্গ সংগঠনেরও কোন সদস্য নয়। তারা স্বার্থ হাসিলের জন্য আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করছে।
সোনারগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশেক পারভেজ জানায়, মাটি কাটার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ও কৃষির জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন। কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে ফেললে মাটির উর্বরতা হারায়। আর উর্বরতা ফিরে আসতে প্রায় ৩০ বছর সময়ও লাগতে পারে। আর এভাবে আবাদি কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে গেলে এ এলাকায় ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি অন্যন্যা কৃষি জমিগুলোও প্রচন্ড ঝুকির সম্মুখিন হবে। মাটি সন্ত্রাসীরা ফসলী জমির প্রায় ২৫-৩০ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে জমিগুলো বর্তমানে অনাবাদী হয়ে পরেছে। এই কৃষি জমিতে ভবিষতেও ফসল ফলানো যাবে না। আমরা ফসলী জমির মাটি কাটার বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে লিখিত ভাবে অবহিত করেছি। স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করারও চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে, মাটি সন্ত্রাসীরা এতটাই ভয়ঙ্কর ও দুর্ধর্ষ যে তাদের ভয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগী জমির মালিকেরা মাটি কাঁটা বন্ধ করে জমি রক্ষার জন্য কারো নাম উল্লেখ না করে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিএম রুহুল আমিন রিমন জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে এমন কোন অভিযোগ কেউ করেছে কি-না আমার জানা নেই। যদি এ বিষয়ে আমি কোন নির্দেশনা পাই তাহলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া, মাটি কাঁটাবস্থায় যদি আমাকে কেউ ইনফর্ম করে তাহলে আমি তাৎক্ষণিক গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।