Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোনামসজিদ বন্দরে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয়ে ধস!

| প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৪ কোটি ৫৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা রাজস্ব আয় কম
শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় দেড় বছর থেকে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয়ে ধস নেমেছে। রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে সোনামসজিদ কাস্টমস। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নানা হয়রানি ও পণ্য খালাসে ধীরগতির কারণে পচনশীল পণ্য ফল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, অতিরিক্ত ‘ব্যবসায়িক সুবিধা’র কারণে হিলি ও ভোমরা বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমদানিকারকরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমদানিকারক মেসার্স সাহেলা এন্টারপ্রাইজের মালিক নুরুল ইসলাম, মেসার্স তালেব এন্টারপ্রাইজের মালিক আবু তালেব, মেসার্স সুজার এন্টারপ্রাইজের মালিক সুজার আলী ও মেসার্স নূর এন্টারপ্রাইজের মালিক বেলাল হোসেন বর্তমানে ভোমরা বন্দর দিয়ে নিয়মিত ফল আমদানি করছেন। অভিযোগ রয়েছেÑ এই বন্দরে ফল পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানি-রফতানিকারকদের হয়রানী ও বর্তমানে অনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অদক্ষতার কারণে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন। এছাড়া ব্যবসায়ীরা কোন রকম ঝামেলায় পড়লেও নেতৃবৃন্দ এগিয়ে আসেননা। এমনকি তারা ব্যবসা সংক্রান্ত কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা না করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সোনামসজিদ কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১৭২ কোটি ৩৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা। সে হিসাবে অর্থবছরের ছয় মাসে সোনামসজিদ কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৪ কোটি ৫৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা রাজস্ব আয় কম হয়েছে। সোনামসজিদে দায়িত্বরত সহকারী কাস্টমস কমিশনার সোলাইমান হোসেন স্বীকার করেছেন, ফল আমদানি না হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রাজস্ব আয়ের পরিমাণ বাড়াতে গিয়ে সোনামসজিদ কাস্টমসে আমদানিকৃত সব ধরণের পণ্যের শুল্কম‚ল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি নানামুখী হয়রানির ফলে আমদানিকারকরা সোনামসজিদ বন্দর ছেড়ে অন্য স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করছেন। এসব কারণে সোনামসজিদে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা আদায়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। স‚ত্র জানায়, ফলসহ পচনশীল সবধরনের পণ্যে রাজস্ব প্রদানে ব্যবসায়ীদের ১০ শতাংশ ছাড় দিতো কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ডেপুটি কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন রাজস্ব বিভাগের কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর ১০ শতাংশ ছাড় বন্ধ করে দেন। ছাড় না পেয়ে এ বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করছেন না ব্যবসায়ীরা। স‚ত্র জানায়, ভোমরা ও হিলি বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত ফলজাতীয় পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সোনামসজিদ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য যথাসময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ছাড়করণে বিলম্ব করে থাকে। এছাড়াও আমদানিকৃত পণ্য ছাড়ে কাস্টমসের কড়াকড়ি, নিয়মিত পণ্য ছাড়ে বিলম্বের কারণে এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন আমদানিকারকরা। সোনামসজিদ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশের সভাপতি হারুন অর রশিদ জানান, শুরু থেকে এ বন্দরটি ছিল ফল ও পাথর আমদানির জন্য জনপ্রিয়। ১৯৯২ সাল থেকে প্রায় দুই যুগ এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ ট্রাক ফল আমদানি হতো। তিনি জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নানা হয়রানি ও পণ্য খালাসে ধীরগতির কারণে ফলজাতীয় পচনশীল পণ্য আমদানি করছেন না ব্যবসায়ীরা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালন করলে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করবেন। রাজস্ব আদায়ে শুধু লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নয়, আগের মতোই অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হবে সোনামসজিদ কাস্টমসে।সোনামসজিদে দায়িত্বরত সহকারী কাস্টমস কমিশনার সোলাইমান হোসেন জানান, বন্দরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাস্টমসের নিয়মনীতি মোতাবেক আমদানিকৃত পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ছাড়করণ করা হয়। এ ছাড়করণে নিয়মনীতি মেনে কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছুটা আমদানি কমে গেছে। তবে বন্দরে কোন পণ্য ছাড়ে অনিয়ম হচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ